নরেশ ডাকাত গল্পের তৃতীয় পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে গল্পের তৃতীয় পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
সেনাপতি পরের দিন আরও সৈন্য নিয়ে কুয়াশা জঙ্গলে ডাকাত দলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চলে যায়। সৈন্যদল যখন কুয়াশা জঙ্গলে প্রবেশ করে তখন ডাকার দলের এক সদস্য নরেশ মন্ডলকে সংবাদ দেয় রাজার সৈন্যদল আবারো জঙ্গলে প্রবেশ করেছে। নরেশ মন্ডল ডাকাত দলের প্রধান ছিল তিনি সঙ্গে সঙ্গে ডাকাত দলকে প্রস্তুত থাকতে বলে। যেকোনো সময় তাদের উপর সৈন্যদল হামলা করতে পারে। তাই তারা জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটে পড়ে। ডাকাত দল প্রথমে সৈন্যদের উপর আক্রমণ করে। ডাকাত দল গাছের আড়াল থেকে সৈন্য দলের উপর তীর নিক্ষেপ করে এতে প্রচুর সৈন্য মারা যায়। সেনাপতি সৈন্যদলকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বলে। সৈন্য দল ডাকাত দল দের পাল্টা জবাব দিতে থাকে তখন ডাকাত দলের ও অনেক সদস্য মারা যায়। এমনভাবে যুদ্ধ করতে করতে ডাকাত দলের অনেক সদস্য যখন মারা যায় তখন নরেশ মন্ডল তার বড় অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নরেশ মন্ডলের সঙ্গে সেনাপতির তলোয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধ করতে করতে সেনাপতি নরেশ মণ্ডলের এক হাত কেটে ফেলে। নরেশ মন্ডল এক হাত দিয়ে যুদ্ধ করতে থাকে সেনাপতির সঙ্গে। পরবর্তীতে নরেশ মন্ডল পরাজিত হয় যুদ্ধ। সেনাপতি নরেশ মন্ডল এবং ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যকে বন্দী করে। ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যকে ঘোড়ার পিছে দড়ি বেঁধে টানতে টানতে রাজার সামনে হাজির করে।
মহারাজ নরেশ মন্ডলকে কারাগারে বন্দি করে। পরের দিন মহারাজ ঘোষণা করে গ্রামবাসীর সামনে নরেশ মন্ডলকে সুরে চড়াবে। এ কথাটি শোনার পর পরের দিন গ্রামবাসীরা এসে ভিড় করে। এরপর মহারাজ গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন।আমি তোমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ডাকাত দলের প্রত্যেকটি সদস্যকে বন্দী করে তোমাদের সামনেই তাদেরকে সুরে চড়াবো। আমি আমার কথা রেখেছি যে অসুররা দিনের পর দিন তোমাদেরকে অত্যাচার করেছে। তোমাদের কোল থেকে তোমাদের সন্তান কেড়ে নিয়ে হত্যা করেছে। আজ তোমরা স্বচক্ষে তাদেরকে ছুঁয়ে চড়ানো দেখবে। এরপর রাজার হুকুমে এক এক করে ডাকাত দলের সদস্যকে সুরে চড়ানো হয়। সর্বশেষ নরেশ মন্ডলকে সুরে চড়ানো হয়। তখন নরেশ মণ্ডল মহারাজ কে বলে যেমন করে তুমি আমাকে সুরে চড়াচ্ছ একদিন তুমিও সুরে চড়াবে। আজ গ্রামবাসীরা আমার মৃত্যুতে আনন্দ করছে একটি সময় তোমার মৃত্যুতে এই গ্রামবাসীরা আনন্দ করবে। তোমার এই ভালো মুখোশ একদিন না একদিন সবাই চিনতে পারবে। একদিন সবাই তোমার সত্যি পরিচয় জানতে পারবে। কথাগুলো শোনার পর মহারাজ নরেশ মন্ডলের বুকে লাথি মারে। নরেশ মন্ডল ছিটকে পড়ে মাটিতে। এরপর মহারাজ নরেশ মন্ডলকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। প্রথমে নরেশ মন্ডলের জিহ্বা কেটে ফেলে এরপর তার দুইটি পা কেটে ফেলে এরপর তাকে সরে চড়ানো হয়।
গ্রামবাসীরা আনন্দে মহারাজের জয়ধ্বনি করতে থাকে। সবাই যখন রাজার জয়ধ্বনি করছে তখন একজন ব্যক্তি কান্না করতে থাকে। পরবর্তীতে মহারাজ গ্রামবাসীকে নিশ্চিন্তে ঘরে ফিরে যেতে বলে। মহারাজ সেনাপতিকে হুকুম দেয় মৃতদেহ গুলো পশুপাখিদের খাইয়ে দিতে। আর যে স্থানে নরেশ মন্ডল বসবাস করত সেখানে তার একটি মহল গড়ে তুলতে বলে। রাজার কথা মত কুয়াশা জঙ্গলে রাজার একটি মহল গড়ার প্রস্তুতি শুরু হয়। যখন নরেশ মন্ডলের কুঠির ভাঙতে আসে সৈন্যদল তখন আচমকা বনের পশু ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের উপর। পশুদের হামলার কারণে পালিয়ে যায় সৈন্যদল। এরপর রাজা বনের পশু স্বীকার করতে বলেন কিন্তু যতবারই রাজা সৈন্য পাঠিয়েছে ততবারই ব্যর্থ হয়েছে। বহুদিন এমনটি হওয়ার পর রাজা অবশেষে সেই জঙ্গলে তার মহল তৈরি করতে নিষেধ করে। ডাকাত দলের পতন হওয়ার পর গ্রামবাসীরা এখন সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। ডাকাত দলের পতন হওয়ার পর বহুবছর পার হয়ে যায়। একদিন গ্রামবাসীর একজন কুয়াশা জঙ্গলের ভেতরে পশু শিকার করতে গিয়েছিল। সে ব্যক্তিটি পশু শিকার করতে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে। পশু স্বীকার করে যখন সে বাড়িতে ফিরছিল তখন ইতিমধ্যেই সন্ধা নেমে যায়। তেমন একটা রাস্তা দেখা যাচ্ছিল না। স্বীকার করা পশু কাধে নিয়ে সে আপন মনে জঙ্গল থেকে বের হচ্ছিল। তখন সে ভয়ানক আওয়াজ শুনতে পায়। সে চমকে ওঠে সে আজ পর্যন্ত এমন আওয়াজ শুনে নাই। এত জোরে আওয়াজ করছিল মনে হচ্ছিল কোন দৈত্য দানব চিৎকার করছে। ভয়ে তার হাত-পা কাঁপতে থাকে স্বীকার করা পশু ফেলে দিয়ে দৌড়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ে।