শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের ষষ্ঠ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের ষষ্ঠ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
রাতুল সেখান থেকে সোজা অফিসে চলে আসে। অফিসে আসতেই সুইটি তাকে ডাক দেয় কিন্তু রাতুল সুইটির ডাকে সাড়া না দিয়ে সোজা তার রুমে চলে যায়। সুইটি একটু অবাক হয়ে যায় কারণ এমনটি কোনদিনও হয়নি। সে বুঝতে পারে হয়তো বা তার কিছু হয়েছে। তাই সুইটি রাতুলের রুমে যায়। রুমে যে দেখতে পায় রাতুল টেবিলের উপর মাথা রেখে বসে আছে। সুইটি রাতুলকে ডাক দেয়। রাতুল সুইটির ডাক শুনে চমকে ওঠে। তখন সুইটি রাতুলকে বলে।
সুইটি: কি হয়েছে তোমার? শরীর ঠিক আছে তো?
রাতুল: হ্যাঁ আমি ঠিক আছি।
সুইটি: আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। তুমি আমার কাছ থেকে লুকাচ্ছো।
রাতুল: আমি তোমার কাছ থেকে কিছুই লুকাচ্ছি না। আর এমন কিছু হয়নি যে তোমার কাছ থেকে আমার লুকাতে হবে।
সুইটি: দেখো রাতুল আমি তোমাকে অনেক দিন ধরে চিনি। আমি তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে দিতে পারি তোমার কি প্রবলেম।
রাতুল: তুমি অযথা চিন্তা করছো আমার কিছুই হয়নি।
সুইটি: আমি তোমার কথা বিশ্বাস করছি না। তুমি আমাকে বলো কি হয়েছে? আজ তোমাকে একটু চিন্তিত মনে হচ্ছে।
রাতুল: হ্যাঁ তুমি ঠিকই বলেছ। কিন্তু এটা আমার পার্সোনাল বিষয়। আমি এটা তোমার সঙ্গে শেয়ার করতে পারব না।
সুইটি: এমন কি কথা যেটা তুমি আমার সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেনা।
রাতুল: সব কথা শুনতে হয় না। তুমি এখন আসো আমাকে একটু একা থাকতে দাও।
সুইটি: আচ্ছা ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি।
সুইটি চলে যায় রুম থেকে এবং সে তার রুমে যে নিজের কাজগুলো করতে থাকে। আর ভাবতে থাকে রাতুলের কি এমন হয়েছে আর কি এমন কথা যেটা আমাকে বলল না। আর এদিকে রাতুল চিন্তা করতে থাকে রাস্তার সেই মহিলাটির কথা। তার বারবার মনে হচ্ছিল যে মহিলাটি তার কাছ থেকে কিছু একটা লুকাচ্ছে। রাতুল এতটাই অস্থির হয়ে গিয়েছিল যে তার নিজের কাজগুলোই করতে পারছিল না। হঠাৎ করেই অফিস শেষ না করে বেরিয়ে পড়ে। আর এটি সুইটি দেখতে পায়। কিন্তু সুইটি তখন রাতুলকে কিছুই বলে না। রাতুল অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায় সেই মহিলাটিকে খুঁজতে থাকে। মহিলাটিকে খুঁজতে খুঁজতে সন্ধ্যা নেমে আসে অবশেষে সে বাসায় রওনা দেয়। বাসার সামনেই দেখতে পায় সুইটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সুইটি কে দেখেই রাতুল গাড়ি থেকে নেমে তার কাছে যায়।
রাতুল: কি ব্যাপার তুমি এখানে?
সুইটি: তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে। তাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
রাতুল: কি এমন কথা যেটি অফিসে তুমি আমাকে বললে না। আমার বাসা পর্যন্ত আসতে হলো?
সুইটি: কথাগুলো কি তোমাকে রাস্তায় বলবো।
রাতুল: সরি আমি একদমই ভুলে গেছি চলো বাসার ভেতরে চলো।
সুইটি: বর্তমান তুমি অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছ।
রাতুল: তার মানে?
সুইটি: আমি কিছুদিন ধরে দেখছি তুমি কোনো একটা বিষয় নিয়ে চিন্তা করছো। তুমি জানো তোমার কিছু হলে আমার ভালো লাগেনা। প্লিজ তুমি কি আমাকে বলবে কি হয়েছে তোমার।
রাতুল: বাসায় চলো বসে চা খেতে খেতে তোমাকে সবই বলব।
সুইটি: আচ্ছা ঠিক আছে।
রাতুল বাসায় যে ফ্রেশ হয়ে তাদের দুজনের জন্য চা তৈরি করল। হঠাৎ রাতুলের ফোনে ফোন এলো। সুইটি রাতুলকে ডাক দিয়ে বলে জয় তোমাকে ফোন করেছে। রাতুল সুইটি কে বলে ফোনটি রিসিভ করে কথা বলো। জয় হল রাতুলের গাড়ির ড্রাইভার। সুইটি ফোনটি রিসিভ করতেই জয় বলে স্যার মেয়েটিকে খুঁজে পেয়েছি আপনি দ্রুত নিচে নামুন। এই বলে জয় ফোনটি রেখে দেয়।বিষয়টি সুইটি কিছুই বুঝতে পারে না কোন কথা না বলে ফোনটি রেখে দেয়। রাতুল চা তৈরি করে সুইটিকে দেয়। তখন চা খেতে খেতে সুইটি রাতুলকে বলে।
সুইটি: কে ওই মেয়েটা?
রাতুল: এখানে মেয়ে কোথা থেকে এল।
সুইটি: রাতুল তুমি আমার কাছ থেকে কি লুকাতে চাচ্ছো।
রাতুল: আমি তোমার কাছ থেকে কোন কিছু লুকাচ্ছি না। আর তুমি কার কথা বলছো আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
সুইটি: তাহলে তোমার ড্রাইভার জয় এটা বলল কেনো?
রাতুল: আমার ড্রাইভার তোমাকে কি বলেছে?
সুইটি: সে ফোন দিয়ে বলল মেয়েটিকে সে খুঁজে পেয়েছে। মেয়েটি কে?
রাতুল: তুমি আমাকে আগে বলবে না জয় এই কথাটা বলেছে। সব কথা তোমাকে পরে বলব আমি যাচ্ছি।
সুইটি: যাচ্ছি মানে কোথায় যাচ্ছ?
রাতুল: মেয়েটিকে খুঁজতে।
এই বলে রাতুল সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে যায়। তখন সুইটি ও তার সঙ্গেই বের হয়ে যায়। রাতুল ড্রাইভারকে ডাক দিয়ে গাড়ি বের করতে বলে। রাতুল ও সুইটি তারা দুজনেই মেয়েটিকে খুঁজতে বের হয়। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর রাতুল দেখতে পায় সেই মহিলাটিকে। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামিয়ে সোজা চলে যায় মহিলাটির কাছে। সে দেখতে পায় মহিলাটি রাস্তার পাশে তার সন্তানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। রাতুল মহিলাটির কাছে যে ডাক দেয়।
রাতুল: এই যে শুনছেন?
মহিলাটি চোখ মিলিয়ে দেখে সকালের সেই ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে উঠে পড়ে সে। মহিলাটি রাতুলকে বলে।
মহিলা:এত রাতে আপনি এখানে কি করছেন?
রাতুল: দেখুন আপনি আমার কাছ থেকে কিছু লুকাচ্ছেন।
মহিলা: আপনি কি পাগল হয়েছেন। আমি কেনো আপনার কাছ থেকে কিছু লুকাবো।
রাতুল: আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে আপনি সুলতানা।
মহিলা: দেখুন বাবু আপনি ভদ্র মানুষ। আপনি কেনো এমনটি করছেন আমার সঙ্গে।
রাতুল: আপনি কিছু মনে না করলে আপনার মুখটা কি আমি দেখতে পারি?
মহিলা: এসব আপনি কি বলছেন? আমার পোশাক দেখে আপনি বুঝতে পারছেন আমি একজন মুসলমান মেয়ে। আর আমাদের ধর্মে কোনো মেয়ে পরপুরুষকে তার মুখ দেখায় না। এ পাপ আমি করতে পারবো না। আপনি এখান থেকে চলে যান।
রাতুল: আপনি আমার বিষয়টা একটা বার বোঝার চেষ্টা করুন।
মহিলা: আমি আপনার কোনো কথাই বুঝবো না বুঝতে চাইও না। আপনি যেটা বলতে চাচ্ছেন সেটা আমার পাপ হবে আর আমি এ পাপ করতে পারবো না।
রাতুল ও ছিল নাছোড় বাধা। সে কিছুতেই কথা শুনতে চাচ্ছিল না। অনেক জোরাজুরি করছিল মহিলাটিকে। অবশেষে না পেরে মহিলাটি তার পরিচয় দিতে সম্মতি হয়।
আপনি এমন একটা জায়গায় গল্পটা শেষ করেছেন, এখন তো পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য আমার অনেক বেশি আগ্রহ জন্মেছে। মহিলা তো দেখছি শেষ পর্যন্ত রাতুলকে নিজের পরিচয় দিতে সম্মতি জানিয়েছে। কিন্তু ওই মহিলাটা আসলে কে এটা জানার জন্য আগ্রহ জন্মেছে আমার অনেক বেশি। খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব আশা করছি শেয়ার করবেন আমাদের মাঝে।