নরেশ ডাকাত গল্পের চতুর্থ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে গল্পের চতুর্থ পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
গ্রামবাসীরা সেদিনের পর থেকে মাঝেমধ্যে মাঝ রাতে বিকট শব্দ শুনতে পেত। গ্রামবাসীরা ভয় পেয়ে যায় তারা ভাবে কুয়াশা জঙ্গলে কোন হিংস্র পশু এসেছে। গ্রামবাসীরা ভয়ে আবার মহারাজের দরবারে উপস্থিত হয়। তখন তারা মহারাজকে বলে, মহারাজ কিছুদিন হল কুয়াশা জঙ্গলের ভেতর থেকে মাঝেমধ্যে বিকট আওয়াজ আসে। আমাদের মনে হয় কুয়াশা জঙ্গলে কোন হিংস্র দানব বাসা বেধেছে। আপনি যেভাবে হোক এর একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। মহারাজ ঘটনাটি সোনার পর সেনাপতিকে বলে দ্রুত কুয়াশা জঙ্গলে যে খুঁজে বের কর সেই দানবকে। সঙ্গে সঙ্গে সেনাপতি সৈন্যদল নিয়ে কুয়াশা জঙ্গলে প্রবেশ করে। কিন্তু তারা কুয়াশা জঙ্গলে যে কোন কিছুই দেখতে পায় না। তারা ফিরে এসে মহারাজকে জানায় কুয়াশা জঙ্গলে এমন কিছুই দেখা যায়নি। মহারাজ তখন বলে তাহলে গ্রামবাসীরা মাঝরাতে কিসের আওয়াজ শুনতে পায়। সেনাপতি বলে মহারাজ হয়তো তাদের ডাকাতের ভয়ে এখনো রয়েছে। আর বনের ভেতর অনেক পশুও থাকতে পারে হয়তো তারাই আওয়াজ করছে। মহারাজ বলে আমি কোন কথা শুনতে চাই না যেভাবে হোক সেই পশুকে আমার সামনে এনে হাজির কর। সেনাপতি গ্রাম বাসীদের একজনকে নিয়ে কুয়াশা জঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করে। সেনাপতি বলে নরেশ মন্ডল যে স্থানে বসবাস করত আমরা সেই স্থানে যে রাত কাটাবো। ব্যক্তিটি সেনাপতিকে বারণ করে রাতের বেলায় কুয়াশা জঙ্গলে ভেতরে প্রবেশ করা আমাদের ঠিক হবে না। সেনাপতি রাগান্বিত কন্ঠে বলে, তুমি এত ভয় পাচ্ছ কেন আমি তো রয়েছি আমি বেঁচে থাকতে তোমার কিছুই হবে না।
সেনাপতি এবং ওই ব্যক্তি তারা দুজনে নরেশ মন্ডলের বাস স্থানে পৌঁছে যায়। এখানে যে তারা অপেক্ষা করতে থাকে সেই পশুর জন্য। গভীর রাত চারিদিকে অন্ধকার পাশের মানুষটাকে ও দেখা যাচ্ছে না। তখন হঠাৎ শুনতে পায় কেউ একজন তাদের কাছে আসছে। ব্যক্তিটি ভয় সেনাপতিকে বলে নিশ্চয়ই সেই পশু আমাদেরকে স্বীকার করতে আছে। আমাদের নিরাপদ জায়গায় যাওয়া উচিত তখন সেনাপতি সে ব্যক্তিকে বলে, আসতে দাও সেই পশুকে আজ তাকে আমি নিজের হাতে হত্যা করে মহারাজের কাছে নিয়ে যাব। দরজায় এসে সেই হিংস্র পশুটি থাবা দেয় তখন সেনাপতি তার দাঁড়ালো অস্ত্র বের করে পশুটিকে স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত হয়। তখনই বিকট আওয়াজ, এত জোরে আওয়াজ করছিল সেনাপতি এবং ওই ব্যক্তির সহ্য করতে পারছিল না। তারা দুজনেই কান চেপে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ আওয়াজ হওয়ার পর হঠাৎই আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। সেনাপতি এবং ওই ব্যক্তি তারা দুজনেই ভয়ে কাঁপতে থাকে। সেনাপতি আজ পর্যন্ত এমন আওয়াজ শুনে নাই। সেনাপতি ভাবতে থাকে এ কোন পশু হতে পারেনা এ হয়ত দৈত্য দানব। তারা সকাল হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। সূর্যের আলো পড়তেই তারা সেই স্থান থেকে বেরিয়ে পড়ে। দরজা খুলতেই সেনাপতি দেখে দরজায় অস্বাভাবিক কিছু চিহ্ন, যে পথ দিয়ে এসেছে বড় বড় পায়ের ছাপ সেখানে পড়ে রয়েছে। পায়ের ছাপটা কিছুটা মানুষের মতো কিন্তু অনেক বড়। পায়ের ছাপ দেখে সেনাপতি ঘাবড়ে যায় সে ভাবতে থাকে এটা কোনদিন মানুষের পায়ের ছাপ হতে পারে না।
প্রাসাদে এসে মহারাজকে সেদিন রাতের ঘটনা সেনাপতি খুলে বলে। সবকিছু শোনার পর মহারাজ ঘাবড়ে যায়। মহারাজ সেনাপতিকে বলে যেভাবে হোক এই দানবকে বন্দী করতেই হবে। যদি বন্দী করতে না পারো তাহলে এই দানব গ্রামবাসী সহ আমাদেরকে হত্যা করবে। তাই যেভাবে হোক এই দানবকে বন্দী করতেই হবে। তোমার যদি অনেক সৈন্য দরকার হয় তাহলে ও নিয়ে যাও। আমি কোন কথা শুনতে চাই না যেভাবে হোক তাকে বন্দী করতেই হবে। রাজার হুকুমে সেনাপতি হাজার সৈন্য নিয়ে কুয়াশা জঙ্গলে প্রবেশ করে কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো সেই দানবকে তারা কোথাও পায়না। ফিরে এসে আবারো মহারাজকে তারা জানায় মহারাজ আমরা জঙ্গল তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি কিন্তু কোথাও সেই দানবকে খুঁজে পাইনি হয়তো আমাদের ভয়ে সেই দানব পালিয়েছে। মহারাজ বলে যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে খুবই ভালো আমি নিশ্চিন্ত। গ্রামবাসীকে জানিয়ে দাও সেই পশু বন্দী হয়েছে তারা যেন নিশ্চিন্তে থাকতে পারে। গ্রামবাসীরা সংবাদটি শোনার পর তারাও ভয় মুক্ত হয়। সেদিনের পর থেকে গ্রামবাসীরা ও মাঝ রাতে কোন আওয়াজ শুনতে পেত না। কিন্তু সেনাপতি সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকতো কারণ সেদিনের রাত সে ভুলতে পারেনি। সে ভাবতে থাকে সেই রাতের কথা। পশুটি চাইলে তো আমাদের হত্যা করতে পারত কিন্তু সে আমাদের হত্যা না করে পালিয়ে কেন গেল। পরের দিন জঙ্গল তন্ন তন্ন করে খোঁজা হলো কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না। তাহলে কি ছিল সেদিন রাতে।