শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণ পর্ব: ৫

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণের পঞ্চম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



সেদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লাম বৌদ্ধ প্রতিমা দেখতে। সোনাঝুরি হাটের পাশেই ছিল বৌদ্ধ প্রতিমা। অনেক পর্যটক এখানে এই বৌদ্ধ প্রতিমা দেখতে আসেন। আমাদের প্ল্যান ছিল সেদিন আমরা এখানে ঘুরবো কিন্তু সন্ধ্যা নেমে যাওয়ার কারণে আমরা সেখানে আর যেতে পারলাম না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম পরের দিন সকালে আমরা এখানে ঘুরবো।তাই তো সকাল সকাল নাস্তা করে হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়ি। বাইকে আমাদের ২৫ মিনিটের মতন সময় লেগেছিল স্থানটিতে পৌঁছাতে। গ্রামের ভেতর থেকে যাচ্ছিলাম খুবই ভালই লাগছিল। গ্রামের আঁকাবাঁকা পথে যেতে যেতে আমরা ঢুকে পড়ি আদিবাসী গ্রামে। রাস্তার দুপাশে আদিবাসী সাঁওতালিদের বাড়িঘর দেখতে পারছিলাম। তাদের ঘরগুলো মাটির তৈরি। তাদের ঘরগুলো বিভিন্ন ধরনের নকশা করা ছিল এটি দেখতে আরো সুন্দর লাগছিল। কেউ কেউ বাড়ির সামনে মাটির তৈরি খেলনা বিক্রি করছেন। কারণ এখানে এই সময়টাতে পর্যটকরা ঘুরতে আসে আর এনাদের থেকে কেনাকাটা করে।


যাইহোক, গ্রামের সাঁওতালিদের কালচার উপভোগ করতে করতে পৌছে গেলাম সেই বৌদ্ধ প্রতিমার কাছে। এখানে একটা কথা আপনাদের বলে রাখি এখানে বৌদ্ধ সাধুরা এখানে ধর্ম প্রচার করতে এসেছিলেন। আর এখানেই তারা একটি মন্দির তৈরি করেন সেখান থেকেই তারা ধর্ম প্রচার করতেন। তারা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম থেকে এসেছিলেন। বেশ জায়গা জুড়ে এই মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে। মন্দিরটির আশেপাশে গাছপালায় ভরা ছিল মনে হচ্ছিল জঙ্গলের মাঝে এই মন্দিরটি স্থাপন করা হয়েছে। জঙ্গলের ভিতর একটি রাস্তা চলে গিয়েছে ইচ্ছা করছিল সেই রাস্তাতে যেতে কিন্তু সাহসে বেড়ে উঠলাম না। কারন আমরা এখানে কোন কিছুই চিনিনা আর যেহেতু নতুন যায়গা তাই আমাদের কোন না কোন প্রবলেম হতেই পারে। এখানে একটা কথাই আমি বলব আপনার কোথাও ঘুরতে গেলে অবশ্যই সেখানকার পরিবেশ রাস্তাঘাট না চিনলে সেখানে যাবেন না। গেলে হয়তো আপনাদের প্রবলেম হতে পারে। জঙ্গলের ভিতর অনেক জন্তু-জানোয়ার থাকে আর এখানে ছিনতাইও হয়ে থাকে। এই জঙ্গলের রাস্তাতে অনেকেই যাচ্ছিল পায়ে হেঁটে কিন্তু আমাদের যেতে সাহস হলো না।


যাইহোক, আমরা গাড়ি পার্কিং করে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে ঢুকতেই মনটা শান্ত হয়ে গেল শীতলতা অনুভব করছিলাম। এখানে মন্দিরগুলো একটু আমার কাছে অন্যরকমই লাগছিল। ভেবেছিলাম ভেতরে হয়তোবা বৌদ্ধদের দেখতে পাবো কিন্তু তাদেরকে দেখতে পেলাম না। লোকের মুখে শুনলাম তারা এখানে আর থাকেন না। এখন এটি পর্যটক কেন্দ্র হয়েছে। আমরা লোকের মুখে শুনেছিলাম এখানে দুইটি বড় বৌদ্ধ প্রতিমা রয়েছে। কিন্তু ভিতরে ঢুকতেই দেখলাম একটি মাত্র বৌদ্ধদেবের প্রতিমা রয়েছে। এখানে বাংলাদেশ থেকে যে সাধুরা এসেছিল তারাই কিন্তু এখানে এই মূর্তিগুলো তৈরি করেছে। এখানে বাংলাদেশের একটি স্মৃতি দেখতে পেলাম সেটি হচ্ছে শহীদ মিনার। মন্দিরের একটি পাশে কিছু ফলের বাগান এবং ফুলের বাগান রয়েছে। এখানে অনেক ফুল রয়েছে যেগুলো অনেক টির নামও আমি জানি না। যেখানে সাধুরা সাধনা করতো সেই ঘরটির দেয়ালে কিছু খোদাই করা নকশা ছিল। আর সাধনা ঘরটির ওপরেই নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকৃতির একটি বৌদ্ধ প্রতিমা। এখানে কিন্তু অনেকেই এসে ভিডিও করছে কেউ ছবি তুলছে কেউবা বসে একটু সময় কাটাচ্ছে। আমরা বেশ কিছুক্ষণ এখানে ঘোরাঘুরি করেছিলাম খুব ভালোই লাগছিলো। খুব আশা করে এসেছিলাম একটি কারণে যেখানে বৌদ্ধদের দেখতে পাবো তাদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাবো। কিন্তু সেটি আর হয়ে উঠল না কারণ এখানে উনারা আর থাকে না জানি না তারা আবার কোন স্থানে চলে গিয়েছে। যারা ধর্ম প্রচার করতে আসেন তারা কিন্তু এক স্থানে বেশি দিন থাকেন না কিন্তু তাদের স্মৃতিগুলো থেকে যায়। এখানে কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম সেগুলো দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন কতটা সুন্দর জায়গাটি।

IMG20241225114300.jpg

IMG20241225114222.jpg

IMG20241225113401.jpg

IMG20241225113846.jpg

IMG20241225113436.jpg

IMG20241225113630.jpg

IMG20241225113535.jpg

IMG20241225113324.jpg

IMG20241225122115.jpg

IMG20241225122111.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২৫.১২.২০২৪
সময়:১০.২১মিনিট
স্থান:শান্তিনিকেতন

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 yesterday 

অনেকবার শান্তিনিকেতনে গেছি। কিন্তু বৌদ্ধ প্রতিমা আমি কখনো দর্শন করিনি। আপনার পোস্ট থেকে একটি নতুন জায়গার হদিশ পেলাম। ইচ্ছা রইলো পরেরবার শান্তিনিকেতন গেলে সোনাঝুরি থেকে এই বুদ্ধ প্রতিমা দর্শন করে আসব। দারুন সুন্দর একটি আনকমন পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেন বলে ধন্যবাদ।

 4 hours ago 

আগের পর্বে পড়েছিলাম আপনারা দু'জন সোনাঝুরি হাটে গিয়েছেন। যাইহোক সকাল সকাল বৌদ্ধ প্রতিমা দেখতে গিয়েছেন,জেনে খুব ভালো লাগলো দাদা। আসলে দূরে কোথাও ঘুরতে গিয়ে যদি মনমতো ঘুরাঘুরি করা না যায়, তাহলে একেবারেই ভালো লাগে না। যাইহোক আপনারা বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন দেখছি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.26
TRX 0.22
JST 0.038
BTC 96412.10
ETH 3218.92
SBD 6.10