নিঝুম রাত ভুতের গল্প পর্ব:৮

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে নিঝুম রাত ভূতের গল্পের অষ্টম পর্বটি উপস্থাপন করছি।আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-lennart-wittstock-94105-316681.jpg
সোর্স



ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার কিয়ার পরিবারকে জানায় তার খুব সিরিয়াস অবস্থা। বনের পশু তাকে নির্মমভাবে অত্যাচার করেছে। তার বড় বড় নখ গুলো দিয়ে শরীরে অনেক গভীর ক্ষত করেছে। কিন্তু ভয়ের কারণ নেই সঠিক চিকিৎসা হলে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। এই বলে ডাক্তার অপারেশন থিয়েটারে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর কেয়ার বাবাকে বেডে আনা হলো। তখন রাত দশটা কিয়া ও কিয়ার মা তারা দুজনে তার কাছে ছিল। কিয়া সেই রাত্রে কিছু ওষুধ আর খাবার আনতে হাসপাতাল থেকে নিচে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর কেয়া ওষুধ এবং খাবার নিয়ে সে তার বাবার কাছে যাচ্ছিলাম। হাসপাতালের লিফটে উঠেছিল সে নিচতলা থেকে চার তলায় যাবে যখন লিফটের বাটনে টিভিতে যাবে তখনই একটি ভদ্রমহিলা ভিতরে প্রবেশ করে। ভদ্র মহিলাটি কিয়াকে বলে সে কত তালায় যাবে? কিয়া বলে চার তলায় যাবে। ভদ্রমহিলা তাই শুনে বললো আমিও চার তলায় যাব।ঠিক আছে চলো তাহলে দুজনে একসাথে যাওয়া যাক। ভদ্রমহিলা বলে তোমার কি কোন রোগী আছে এখানে। কিয়া বলে হ্যাঁ আমার বাবা এখানে রয়েছে। তার কি হয়েছে? জানিনা বাবা বাইরে গিয়েছিল আর যখন বাড়িতে এলো তখন রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসার পর ডাক্তার জানালো পশুতে তাকে আক্রমণ করেছে। মহিলাটি বিড়বিড় করে বলতে থাকে মরে গেলে ভালোই হতো। মারতে তো চেয়েছিলাম কিন্তু এই ছেলেটা চলে এলো তার জন্য মারতে পারলাম না। কিয়া বলে আপনি কি কিছু বললেন। মহিলাটি বলে না কিছু না।


কিয়া বলে আপনার কি রোগী আছে এখানে। মহিলাটি বলে হ্যাঁ আমার রোগী আছে কিন্তু আমার রোগীটি কিছুক্ষণ পরেই মারা যাবে। কিয়া বলে আমি আপনার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না। ভদ্র মহিলাটি বলে অনেক বয়স হয়ে গিয়েছে তো ডাক্তার বলেছে বেশিদিন বাঁচবে না তাই বললাম আর কি। রোগী আপনার কে হয়? রোগী আমার বাবা হয়। কিয়া আবারো মহিলাটি কে জিজ্ঞাসা করে আপনার বাবা মৃত্যু শয্যায় আর আপনার ভেতর কোন অনুশোচনা বোধ আমার মনে হচ্ছে না কেনো? মহিলাটি বলে আমার বাবা ভালো মানুষ ছিলেন না সে খুবই খারাপ। আমি চাই সে অতি দ্রুত মারা যাক তাহলে আমার আত্মা শান্তি পাবে। কিয়া আত্মার কথা শুনে কিয়া একটু চমকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আবারো জিজ্ঞাসা করে। আপনার আত্মার শান্তি পাবে ঠিক বুঝলাম না একটু বুঝিয়ে বলুন তো। মহিলাটি বলেন কিছু না তুমি তোমার ফ্লোরে চলে এসেছ। আমি তোমার পাশের কেবিনেই আছি কোন সমস্যা হলে অবশ্যই আমাকে জানাবে। এই বলে তারা দুজন যার যার কেবিনে প্রবেশ করে


রুমে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে কিয়ার মা তাকে প্রশ্ন করে এত দেরি হল কেনো? মায়ের প্রশ্নের কিয়া বলে খাবার আর ওষুধ আনতে আনতে দেরি হয়ে গিয়েছে। যখন খাবার নিয়ে আসছিলাম লিফটে একটা ভদ্র মহিলার সাথে পরিচয় হয়।সে মহিলাটি আমাদের পাশের কেবিনে আছে। উনার বাবা নাকি অসুস্থ কিন্তু ওনার বাবার মৃত্যু কামনা করছে। আরো আমাকে বলল তার বাবা মারা গেলে তা আত্মা শান্তি পাবে আমি তার কথা ঠিকঠাক বুঝতে পারলাম না। সন্তান হয়ে বাবার মৃত্যু কামনা করতে পারে এ কেমন সন্তান। মা তাকে বলে পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ রয়েছে এই নিয়ে তুমি মন খারাপ করো না। এই কথাটি শোনার পর কিয়ার বাবা অস্থির হয়ে ওঠে। তার অস্থিরতা দেখে তার পাশে কিয়া ও তার মা দুজনে ছুটে আসে। আর তাকে বলে কি হয়েছে এত অস্থির লাগছে কেনো তোমাকে? বাবা বলে কিয়ার মুখে এই ভদ্র মহিলার কথা শুনে আমার কেমন জানি শরীরের ভেতর অস্থির অস্থির লাগছে। কিয়া বলে বাবা তুমি অযথাই চিন্তা করছো ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।


কিয়া তার বাবাকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। তারাও রাতে খাওয়া দাওয়া করে বেডের পাশে ঘুমিয়ে পড়ে। নুপুরের আওয়াজে কিয়ার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি অন করে দেখে রাত তিনটা বাজে। মনে মনে ভাবতে থাকে এত রাতে বাইরে থেকে কে হাঁটাহাঁটি করছে। এই নুপুরের আওয়াজ তার খুব পরিচিত মনে হতে লাগলো। সে আগে পরেও এই নুপুরের আওয়াজ শুনেছে। কিছুদিন আগে তার দিদির রুম থেকে যেমন নুপুরের আওয়াজ আসছিল আজও ঠিক সেই আওয়াজ আচ্ছে। এইটা মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে খুব ঘাবড়ে যায়। সে মনে মনে ভাবতে থাকে সে তার মাকে ডাক দিবে কি দিবে না। কিন্তু সে দেখে তার মা গভীর ঘুমে তাই সে তার মাকে আর ডাকলো না। স্পষ্টভাবে শুনতে পারে বাইরে থেকে কেউ যেন হাঁটাহাঁটি করছে আর গুনগুন করে গান করছে। সে ভাবতে থাকে হাসপাতালে অনেকেই আছেন হয়তো কারো ঘুম আসছে না তাই হাঁটাহাঁটি করছে আর গান করছে। এই ভেবে সে আবারও ঘুমানোর চেষ্টা করে কিন্তু হঠাৎ একটি শব্দ হলো। শব্দটি কাঁচের গ্লাস ভাঙ্গার মতন আওয়াজ ছিল। সঙ্গে সঙ্গে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এবার কিন্তু নুপুরের আওয়াজ হচ্ছিল না শুধু কান্নার শব্দ হচ্ছিল। সে ভাবতে থাকে এত রাতে রুমের বাইরে কে কান্নাকাটি করছে। একটু আগে নুপুরের আওয়াজ পেলাম আরো পেলাম গানের আওয়াজ তারপর শব্দ আর এখন কান্নার আওয়াজ। সে ভাবতে থাকে একবার দেখে আসা যাক কারো কোনো সমস্যা হলো কিনা। রাত তখন তিনটা তিরিশ মিনিট কিয়া সাহস করে দেখতে যায় রুমের বাইরে।

আজ গল্পের পর্বটি এখানে শেষ করছি। বাকি পর্ব খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব।সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 8 days ago 

যদিও আজকের গল্পটি প্রথমবার পড়ছি।আগের পর্বগুলো পড়া হয় নি।তবে পড়ে বেশ ভালো লাগলো।একটা টানটান উত্তেজনা আছে।আর আপনার লিখাগুলোও খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন।তবে ভাইয়া,শুরুর দিকে কিছু কিছু জায়গায় বানান ভুল আছে, একটু দেখে নিলে ভালো লাগবে।এত সুন্দর গল্পটা শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 8 days ago 

ধন্যবাদ দিদি ভুলটি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য

 7 days ago 

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। যদিও এর আগের পর্ব গুলো পড়া হয়নি তবে এই পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। আমার তো আর তর সইছে না ইচ্ছে করছে বাকি পর্ব গুলো পড়ে নেই। কিন্তু আপনি তো অপেক্ষায় রেখে দিলেন। নুপুরের আওয়াজ নিশ্চয়ই কেয়ার বোনের ছিল আর লিফটের ভিতরের ঐ মহিলাটিও তার বোন ছিল। কেয়ার কথা শুনে কেউ বুঝতে না পারলেও তার বাবা ঠিকই বুঝতে পেরেছে। কেয়া এত রাতে রুমের বাহিরে গিয়ে কি দেখতে পেলো জানার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

 7 days ago 

ধন্যবাদ দিদি আপনার মূল্যবান বক্তব্য দেওয়ার জন্য। আর খুব শীঘ্রই এই পর্বের নতুন একটি পর্ব আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করব। আশা করি, পর্বটি আপনাদের ভালো লাগবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 58269.26
ETH 3067.65
USDT 1.00
SBD 2.25