তোমার ছোঁয়া গল্প পর্ব:৬

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি 'তোমার ছোঁয়া' গল্পের ষষ্ঠ পর্বটি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-designecologist-887349.jpg
সোর্স



সেদিনের পর থেকে মানবিকা তন্ময়কে আরো ইগনোর করা শুরু করে দেয়। তন্ময় বিষয়টি কিছুতেই মানতে পারছিল না। একদিন হঠাৎ তন্ময় তার ব্যক্তিগত কাজের জন্য সে বাড়িতে যাচ্ছিল। তন্ময় বাড়ি আসার জন্য বাস কাউন্টারে টিকিট কাটতে যাবে তখন দেখতে পায় মানবিকাকে। সে মানবিকাকে দেখে একটু চমকে যায়। কারণ কোথাও যেতে হলে অবশ্যই তন্ময়কে সে জানাত। কিন্তু কিছু না জানিয়ে মানবিকা কেন হঠাৎ এখানে।এই প্রশ্নটা তার মনের ভেতর চলছিল। মানবিকাকে দেখতে পেয়ে তন্ময় মানবিকে ডাক দিতে যাবে ঠিক তখনই দেখতে পায় মানবিকার পাশে একজন পরিচিত মানুষ। এই মানুষটি আর কেউ নয় স্কুল জীবনের যার জন্য তন্ময় স্কুল ছেড়েছিল সেই ব্যক্তি। তন্ময় এই ব্যক্তিটিকে দেখে খুবই চমকে যায়। সে কিছুতেই মানতে পারছিল না মানবিকার সাথে এই অবস্থায় দেখবে এই ব্যক্তিকে।


সে মানবিকাকে সঙ্গে সঙ্গে ফোন দেয় কিন্তু প্রথমবার মানবিকা ফোন ধরেনি দ্বিতীয়বার ঠিক ধরেছিল। মানবিকা ফোন ধরার সঙ্গে সঙ্গে তন্ময় বললো।
তন্ময়: হ্যালো কেমন আছো তুমি?
মানবিকা: হ্যাঁ আমি তো ভালোই আছি।
তন্ময়: হ্যাঁ তুমি তো ভালোই থাকবে খারাপ তো থাকবো আমি।
মানবিকা: তন্ময় আমি তোমার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম।
তন্ময়: আমার কথা বুঝতে হবে না।তুমি কোথায় আছো এখন?
মানবিকা: আমি তো বাড়িতেই আছি।
তন্ময়: ও আচ্ছা ঠিক আছে । তুমি কি আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে আজ?
মানবিকা: আজ আমি পারবো না।
তন্ময়: কেন পারবে না?
মানবিকা: আজ আমার একটু কাজ আছে।
তন্ময়: কি কাজ আছে আমি জানতে পারি কি?
মানবিকা: আজ আমি আমার শিক্ষকের কাছে লেকচার শীট আনতে যাব।
তন্ময়: ও আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে কাল দেখা করব। তোমার পাশে কেউ আছে ?
মানবিকা: কেন বলতো।
তন্ময়: অনেক শব্দ হচ্ছে তো তাই বললাম আর কি।
মানবিকা: ছোট বাচ্চারা রয়েছে তো তাই তারা শব্দ করছে আচ্ছা আমি রাখছি মা ডাকছে।
তন্ময়: আচ্ছা ঠিক আছে ফ্রি হয়ে আমাকে ফোন দিও।
মানবিকা: ওকে লাভ ইউ।


এই বলে ফোনটি কেটে দেয়। তন্ময় বিষয়টি সব বুঝতে পারে। সে দেখতে থাকে তারা কোথায় যাচ্ছে। এইদিকে তন্ময়ের যে কাজটি করতে বাড়িতে যাচ্ছিল সে কাজের কথা তন্ময় ভুলে গেল। আর সম্পূর্ণ বিষয়টি জানার জন্য সে তাদের পিছন পিছন যেতে শুরু করলো। মানবিকার সাথে যে ব্যক্তিটি ছিল সে ব্যক্তিটির নাম আবির। আবির কিন্তু মানবিকাকে ভালোবাসতো আর মানবিকা আবিরকে। কিন্তু মানবিকা তন্ময়ের সাথে যে ভালবাসার নাটকটি করছে এই বিষয়টি আবির জানতো না। যাইহোক তারা ঘুরতে গিয়েছিল একটি পার্কে। তন্ময় ও তাদের পিছন পিছন সেই পার্কে যায়। ইতিমধ্যেই তন্ময়ের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে মানবিকা তার সাথে এতদিন ভালোবাসার অভিনয় করেছে‌। তন্ময় বুঝতে পেরেছিল যখন মানবিকা তাকে ইগনোর করছিল। সেদিন থেকেই সে মানবিকাকে সন্দেহ করা শুরু করে। আর সেই সন্দেহটা আজ সত্যি প্রমাণিত হলো।


তন্ময় মানবিকাকে আবারো ফোন দেয় এবং মানবিকা ফোনটি রিসিভ করে।

তন্ময়: আচ্ছা মানবিকা তুমি কোথায় আছো বলো তো?
মানবিকা: আমি তোমাকে আগেও বললাম আমি বাড়িতে আছি।
তন্ময়: সত্যি কি তুমি বাড়িতে আছো?
মানবিকা: তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছো?
তন্ময়: যদি বলি আমি তোমাকে সন্দেহ করছি।
মানবিকা: তন্ময় তুমি খুব পরিবর্তন হয়ে গেছো বুঝতে পারছি। তোমার মুখে আজ এই কথাটি শুনবো আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
তন্ময়: তুমি ঠিকই বলেছ। আমি অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছি। কারণ পরিবর্তন হতে শিখিয়েছো তুমি।
মানবিকা: আমি তোমাকে পরিবর্তন হতে শিখিয়েছি। তার মানে তুমি কি বলতে চাও?
তন্ময়: মানবিকা তুমি সত্যি কথা বলো তুমি কোথায়?
মানবিকা: এতবার করে তোমাকে বলছি আমি বাড়িতে আমি বাড়িতে।
তন্ময়: তুমি যদি বাড়িতে থাকো তাহলে আমার সামনে আবিরের সাথে কে বসে আছে।
মানবিকা: তুমি কি বলছো আমি বুঝতে পারছি না। নেটওয়ার্কের সমস্যা হচ্ছে হ্যালো, হ্যালো, হ্যালো। আমি তোমাকে একটু পরে ফোন দিচ্ছি তোমার কথা শুনতে পাচ্ছি না।


এই বলে মানবিকা ফোনটি কেটে দেয় আর প্রচন্ড ঘামতে থাকে। সে কিছুতেই ভেবে উঠে পারছিল না তন্ময় কি করে জানতে পারলো সে আবিরের সাথে এসেছে। আবার এদিকে আবির তাকে প্রশ্ন করে কি হয়েছে তোমার? ফোনটি আসার পর কেনো জানি মনে হচ্ছে তুমি চিন্তিত হয়ে পড়েছ। কার ফোন ছিল? মানবিকা জবাব দেয় তার একজন আত্মীয় ফোন করেছিল। কিন্তু আবির আবারো বলে ইমারজেন্সি কিছু হয়েছে? মানবিকা বলে না তেমন কিছু নয়। আবির বলে তাহলে তুমি এতো ঘামছো কেনো? প্রচন্ড গরম লাগছে তার জন্য ঘেমে যাচ্ছি। তাদের ভিতর কথোপকথন চলতে থাকে। আর অন্যদিকে তন্ময় আড়াল থেকে তাদের ঘটনাটি ফোনে ভিডিও করতে থাকে। যাতে করে মানবিকার এই ডুয়েট চরিত্র পরবর্তীতে প্রমাণ করতে পারে। যেহেতু মানবিকা তাকে বলেছে সে বাড়িতে রয়েছে‌। সে পরবর্তীতে অস্বীকার করতে পারে তার জন্য তন্ময় একটি ভিডিও ফুটেজ করে রাখে। যাতে পরবর্তীতে মানবিকা কোনভাবে অপরাধের হাত থেকে না কাটাতে পারে।

আজ গল্পটি এখানেই শেষ করছি।বাকি পর্ব খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই সেই পর্যন্ত আপনার সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 62871.45
ETH 3479.64
USDT 1.00
SBD 2.53