শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের শেষ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-visoesdomundo-2494701 (3).jpg[ সোর্স



সুইটির ভালোবাসায় মমতায় আস্তে আস্তে ফাতেমা বড় হতে শুরু করে। সুইটি ফাতেমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেন সেখান থেকেই সুইটি তার ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারে। সুইটি সব সময় চাইত তার মেয়ে তার ধর্ম নিয়ে বড় হয়ে উঠুক। এদিকে রাতুলের সব সময় ভয় থাকত কারণ রাতুল ভাবতো ফাতেমা বড় হয়ে যখন তার নিজের পরিচয় জানতে পারবে, বুঝতে পারবে তখন তাদেরকে ছেড়ে সে চলে যাবে। একদিন ফাতেমা পড়াশোনা করছিল তার রুমে হঠাৎ রাতুল ফাতেমার রুমে যে ফাতেমাকে ডাক দেয়। ফাতেমা রাতুলের ডাক শুনে সঙ্গে সঙ্গে পড়ার অফ করে দেয়। ফাতেমা বলে কি হয়েছে বাবা কিছু বলবে আমাকে? রাতুল বলে তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে তোমার সময় হবে কথাগুলো শোনার? ফাতেমা বলে কেনো
হবে না, তুমি বলো আমি শুনছি। রাতুল বলে ফাতেমা তুমি বড় হয়েছো হয়তোবা দুদিন পরে চাকরি করবে। একটি সময় তোমার একটি নতুন পরিবার হবে তুমি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে সেই নতুন ঘরে। ফাতেমা রাতুলের কথা শুনে একেবারে চুপ হয়ে যায়। ফাতেমা রাতুল কে বলে বাবা আমি কখনো তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। তুমি যেসব কথা বলছো আমি এর কিছুই চাই না আমি শুধু তোমাদের কাছেই থাকতে চাই। ছোট থাকতে পথ থেকে কুড়িয়ে এনে তোমার বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে ছিলে। কিছুদিন পর আমার মা আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমার যখন কোন জায়গা ছিল না তুমি আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলে। তুমি আর মা তোমরা দুজনে আমাকে নিজের মেয়ের মতন মানুষ করেছ। আমার ভালোবাসা ভাগ হয়ে যাবে,ভেবে তোমরা কোন সন্তান নেইনি। এর থেকে বড় প্রতিদান আর কিছু হতে পারে না বাবা। তুমি যেটা ভাবছো সেটা কোনদিন হবে না। আমি আমার ধর্ম নিয়ে বড় হয়ে উঠেছি এর জন্য পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে অনেক কথা শুনতে হয়েছে তোমাদের। তোমাদের ঋণ আমি কোনদিনও শোধ করতে পারবো না।


ফাতেমা খুব ব্রিলিয়ান্ট ছিল পড়াশুনায়। তাই পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য তার আর বসে থাকতে হলো না। সে সরকারি প্রতিষ্ঠানে বড় একটি পদে চাকরি পায়। চাকরি পেয়ে প্রথম মিষ্টি তার মা বাবাকে খাওয়ায়। তখন সুইটি বলে আজ যদি সুলতানা বেচে থাকতো তাহলে এই দিনটা দেখে খুবই খুশি হত। ফাতেমা তুমি আজ প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছো। তাই আমি বলব তুমি তোমার মায়ের কাছ থেকে একবার ঘুরে আসো। ফাতেমা সুইটিকে বলে তোমরা দুজনেই আমার সঙ্গে চলো। তারপর সুইটি এবং রাতুল তারা দুজনে যায় ফাতেমার কবরের কাছে। রাতুল বলে ফাতেমা তুমি দেখো আমি তোমার কথা রেখেছি। আজ তোমার মেয়ে মানুষের মত মানুষ হয়েছে সে এখন বড় চাকরি করে। সুইটি বলে ফাতেমা তোমাকে না বুঝে হয়তোবা অনেক কষ্ট দিয়েছি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। তোমার মেয়ে মানে, আমাদের মেয়ে আজ অনেক বড় হয়ে গেছে। এরপর সবাই বিদায় জানিয়ে চলে আসে বাড়িতে। কিছুদিন পর রাতুল ফাতেমার জন্য ছেলে দেখা শুরু করে। যে ছেলে ফাতেমাকে দেখতে আসে সেই ছেলেকে ফাতেমা বলে তার ইতিহাস সম্পর্কে। তাদের বলে তারাই আমার মা-বাবা আজীবন তাদেরকে তোমারও ভালবাসতে হবে আমার মত। তখন তার কথাগুলো শুনে অনেকেই রাজি হয় না। তখন একটি মাত্র ছেলে তার এই কথায় রাজি হয় কারণ সেও অনাথ ছিল। সে অনাথ স্কুল থেকে বড় হয়েছে। তাই সে ফাতেমার কথাগুলো শুনে রাজি হয় সে ফাতেমাকে বলে হয়তোবা তোমার জন্য আজ আমিও মা বাবাকে পেলাম। এরপর রাতুল এবং সুইটি তারা দুজনে তাদের বিবাহ দেয়। সেদিনের পর থেকে তারা সুখের শান্তিতে বসবাস করতে থাকে।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.27
JST 0.041
BTC 97855.61
ETH 3635.71
SBD 2.56