শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণ পর্ব: ৮

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণের অষ্টম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



কেনাকাটা শেষ করে আমরা পার্কের পিছন সাইডের গেলাম। এখানে গ্রামীণ পরিবেশটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছোট ছোট ঘর তৈরি করে সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাদের জীবনী। এখানে দেখানো হয়েছে কেউ ঢেঁকিতে ধান মাড়াই করছে। প্রাচীন কালে মানুষ ধান থেকে চাউল বের করত এই ঢেঁকিতে করে। কালে কালে গ্রাম বাংলা থেকে এটি হারিয়ে গিয়েছে আমরা হয়তো অনেকেই এটি কে চিনি না। এই যন্ত্রটি কাঠের তৈরি হয়ে থাকে তার পিছন সাইডে একজন থেকে এবং সামনের সাইডে একজন থাকে। ঢেঁকির পিছনের জন পা দিয়ে চেপে ধরে এবং সামনের জন ধান গুলো উল্টেপাল্টে দিয়ে থাকে এইভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা পরিশ্রম করার পর ধান থেকে চাউল বের হতো। আমার মনে পড়ে আমি যখন ছোট ছিলাম আমার মা ঠাকুমা তারা ঢেঁকিতে চাউল দিয়ে চিড়া তৈরি করতো। সত্যি কথা বলতে দোকানের যে চিড়া তার থেকে সুস্বাদু লাগতো খেতে। ঢেঁকিতে তৈরি চিড়া থেকে সুন্দর সুগন্ধ বের হতো যেটি কিন্তু দোকানের চিড়া থেকে পাওয়া যেত না। এই গ্রামের মানুষ গুলো অনেক পরিশ্রমই হয়ে থাকে সেটি তাদেরকে দেখলেই বোঝা যায়। যাইহোক, অন্য একটি চিত্রে দেখানো হয়েছে কেউবা সুতা বুনছে আবার কেউবা উৎসবের আয়োজন করছে। সাঁওতালি আদিবাসীরা আমাদের মতন তারাও কিন্তু পূজা-অর্চনা করে থাকে। কিন্তু আমরা যে পূজা গুলো করে থাকি সেটি কিন্তু তারা করেন না। তারা তাদের পূজা অর্চনা করে থাকে। সাঁওতালিদের অন্যতম একটি অনুষ্ঠান হল ভাদু গান। এটি কিন্তু ভারতবর্ষের বিভিন্ন জেলায় এটি হয়ে থাকে যেমন বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ এসব অঞ্চলে ভাদ্র মাসের ভাদু মনির মূর্তি নিয়ে শিল্পীরা পথে দুয়ারে ভাদু গান করে বেড়ায়।

IMG20241225133101.jpg

IMG20241225132857.jpg

IMG20241225134219.jpg

IMG20241225134510.jpg

IMG20241225133627.jpg

IMG20241225133717.jpg

IMG20241225133507.jpg

IMG20241225134324.jpg

IMG20241225133835.jpg

IMG20241225132958.jpg

IMG20241225134611.jpg

IMG20241225133340.jpg



এরপর দেখতে পেলাম কিছু পাথরের শিলার উপর খোদাই করার কিছু চিত্র। এখানে একটি বড় পুকুর রয়েছে পুকুরের ভেতর দুইটি সাদা রাজহংসী খেলা করছিলাম। পুকুরের পশ্চিম পাশে সাঁওতালিদের নিত্য অনুষ্ঠান তার একটি চিত্র এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবং সেই সময়ের সাঁওতালিরা যুদ্ধ করেছিল তার কিছু প্রতিচ্ছবি এখানে কিন্তু তুলে ধরা হয়েছে। এখানে আরেকটি বিষয় আপনাদের একটু জানিয়ে রাখি এখানে কিন্তু আপনারা এসে পিকনিক করতে পারবেন। এখানে পিকনিক করার একটি আলাদা জায়গা রয়েছে। যেটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল আমাদের যদি সুযোগ থাকতো তাহলে আমরাও করতাম। যাইহোক, পার্কের দক্ষিণ, উত্তর সম্পূর্ণ জায়গা জুড়ে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে এখানে বিভিন্ন জেলার গ্রামীণ পরিবেশটাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এখানে সবগুলো ঘর ইটের গাঁথনি দিয়ে তৈরি করা ছিল কিন্তু তার ভেতর একটি ঘর অন্যরকম ছিল। এই ঘরটি সম্পূর্ণ তৈরি করা হয়েছে বাস দিয়ে। এই ঘরটিতে যেতে আপনাকে কাঠের সিঁড়ি চড়ে তারপর ঘরটির ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। যাইহোক, আমরা সিঁড়িতে চড়ে ঘরটির ভেতরে প্রবেশ করলাম। দেখতে পেলাম প্রাচীন কালের আদিবাসীরা যেসব জিনিসপত্র ব্যবহার করত সেই সব জিনিসপত্র এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঘরটির ভেতরে অবশ্যই খালি পায়ে যেতে হবে এটি কিন্তু বাধ্যতামূলক। তাদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র আমি কিছুটা চিনতে পারলাম এবং অনেকগুলোই কিন্তু চিনতে পারলাম না। আমি এখানকার সেই চিত্রগুলো উপস্থাপন করছি। আপনাদের অজানা থাকলেও এই চিত্রের মাধ্যমে আপনারা সেগুলো জানতে পারবেন।

IMG20241225134920.jpg

IMG20241225134415.jpg

IMG20241225135342.jpg

IMG20241225135313.jpg

IMG20241225135019.jpg

IMG20241225135333.jpg

IMG20241225134718.jpg

IMG20241225135049.jpg

IMG20241225135351.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২৫.১২.২০২৪
সময়:০২.১৫মিনিট
স্থান:শান্তিনিকেতন

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 8 hours ago 

শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণের আজকের পর্ব দেখে খুব ভালো লাগলো। অনেকগুলো ফটোগ্রাফি দেখেছি। গ্রাম বাংলার চাল ভাঙ্গার দৃশ্য দেখে ভালো লাগলো। আদিবাসিদের জিনিসপত্র দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.24
JST 0.037
BTC 102052.58
ETH 3278.44
SBD 4.96