শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের সপ্তম পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের সপ্তম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
মহিলাটি কান্না করতে থাকে। কিছুতেই তার চোখের জল থাম ছিল না। কান্না করতে করতে রাতুলকে বলে।
আপনি যার কথা বলছেন আমি সেই সুলতানা। কথাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাতুল চুপ হয়ে গেল। অনেকক্ষণ পর বড় একটি নিঃশ্বাস ফেলল রাতুল। তারপর রাতুল সুলতানা কে বলে।
রাতুল: তুমি হয়তো জানো না তোমার বিয়ের পর আমি তোমাকে অনেক খুজেছি কিন্তু আমি পাইনি। আমি তোমার বাবার কাছে যে তোমার ঠিকানা চেয়েছি কিন্তু উনি আমাকে দেয়নি তোমার ঠিকানা।
সুলতানা: আমি চাইনি তোমার সঙ্গে আমার কোন যোগাযোগ থাকুক।
রাতুল: কিন্তু কেনো এমনটি করেছ? কি অপরাধ ছিল আমার।
সুলতানা: তোমার কোন অপরাধ ছিল না অপরাধ ছিল সময়ের।
রাতুল: আমি তোমার কথা বুঝতে পারলাম না।
সুলতানা: রাতুল তোমার মনে আছে। কলেজে একটি ছেলেকে আমার খুব পছন্দ হতো। আমি তোমাকে বলেছিলাম কিন্তু তুমি আমার উপর রাগ করেছিলে।
রাতুল: হ্যাঁ আমার মনে আছে। ওর সঙ্গে তুমি কথা বললে আমি সহ্য করতে পারতাম না।
সুলতানা: আমি জাস্ট পরীক্ষা করছিলাম আমার প্রতি তোমার শুধু বন্ধুত্বের ভালোবাসা না আরো বড় কিছু। কিন্তু আমি দেখলাম তুমি আমাকে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছ। এটা বোঝার পর আমি আর তোমার সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করতে চাইনি।
রাতুল: তুমি যখন বুঝতেই পেরেছিলে তাহলে এমনটা কেন করলে আমরা তো একসঙ্গে থাকতে পারতাম।
সুলতানা: এটা ভুল আমরা কখনোই একসঙ্গে থাকতে পারতাম না। এই সমাজ আমাদের কোনদিনও মেনে নিত না। যদিও আমরা বিয়ে করে এখান থেকে অনেক দূরে চলে যেতাম। তারপরেও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি পরিচয় বড় হতো। আমি অনেক কিছু ভেবেছি ফলাফল শুধু কষ্টই । বাবাও হঠাৎ করে ছেলে দেখে আমার জন্য পরিবারের সবার ছেলেকে পছন্দ হয়। তাই আমি তোমার কাছ থেকে দূরে যাওয়ার জন্য আমি এই প্রস্তাবে রাজি হই।
রাতুল: আমি তোমার সব কথা বুঝতে পারলাম। কিন্তু আমার জানা মতে তোমার তো অনেক বড় পরিবারে বিবাহ হয়েছিল। তাহলে এখন তোমার এই অবস্থা কেন?
আবারো কান্নায় ভেঙে পড়ে সুলতানা। রাতুল তার চোখের জল মুছে দেয়। এরপর সুলতানা মৃদু কন্ঠে বলে।
সুলতানা: তুমি ঠিকই বলেছ আমার বড় পরিবারে বিবাহ হয়। বিবাহের কিছুদিন পর জানতে পারি আমার স্বামীর আগে আরো পাঁচটা বিবাহ ছিল।
রাতুল: এসব তুমি কি বলছো।
সুলতানা: আমি ঠিকই বলছি। তার ওই আগের পাঁচ বউকে সে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আমাকেও সে বিক্রি করে দিত। কিন্তু আমি সেটি জানতে পেরে যাই। তখন সে আমাকে আটকে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি অনেক কষ্টে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। আমি ১৫ দিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরিয়ে বেরিয়েছি।
রাতুল: তুমি তো সেখান থেকে তোমার বাড়িতে যেতে পারতে। তোমার পরিবারকে সবকিছু জানাইতে পারতে।
সুলতানা: আমি ১৫ দিন পর বাড়িতে যে উপস্থিত হই। কিন্তু আমার পরিবার আমাকে আশ্রয় দেয় না। বরংচ আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
রাতুল: কিন্তু কেনো এমনটি করল তোমার সঙ্গে? তুমি তো তাদের একমাত্র মেয়ে।
সুলতানা: পরবর্তীতে আমি জানতে পারি আমি যখন আমার স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে যাই। আমার স্বামী যখন আমাকে খুঁজে পায়না। তখন সে আমার পরিবার এর কাছে এসে জানায় আমি একটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছি। আরো অনেক কথাই বলে আমার পরিবারকে। তার জন্য আমার পরিবার আমার কোন কথাই তারা বিশ্বাস করে না।
রাতুল: আমি তোমার সব কথাই বুঝলাম কিন্তু এই বাচ্চাটি কার?
সুলতানা: এই বাচ্চাটি আমার। আমি যখন সেখান থেকে পালিয়ে আসি আমি তখন গর্ভবতী ছিলাম। আমি আমার পরিবারকে জানাই কিন্তু তারা আমার সন্তানকে অবৈধ সন্তান বলে। আমি এই নিষ্পাপ সন্তানকে নষ্ট করতে পারেনি। আমি সাহায্যের জন্য অনেকের কাছেই গিয়েছি কিন্তু কোথাও আমার জায়গা হয়নি। তারপর আমি মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে সাহায্য নিতে শুরু করি। তারপর একদিন আমার সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখে। আর সেদিন থেকেই তাকে নিয়ে আমার বাকিটা জীবন চলা।
রাতুল: আজ থেকে তুমি আমার বাসায় থাকবে। তোমার যাবতীয় খরচ আমিই বহন করব। আর তোমার সন্তানকে মানুষের মতন মানুষ করার দায়িত্ব আমার।
সুলতানা: একি বলছো তুমি। তুমি কেন আমার জন্য এসব করতে যাবে?
রাতুল: আমি তোমার কোন কথাই শুনতে চাই না। তুমি এভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে আর সেটি আমি দেখব এটা কোনদিন হতে পারে না।
সুলতানা: রাতুল তুমি আমার জন্য এমনটি করো না।
রাতুল সুলতানার কোনো কথা না শুনে তার হাতটি ধরে তাকে উঠতে বলে। আর তার সন্তানকে কোলে করে গাড়িতে বসে। সুইটি এসব বিষয় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। একটা কথাও সে তখন বলে না। পরবর্তীতে রাতুলকে বিদায় জানিয়ে সুইটি তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আর রাতুল ও সুলতানা আর তার সন্তানকে নিয়ে তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাসায় যে সুলতানা কে ফ্রেস হতে বলে। সুলতানা রাতুলকে বলে এসব করাটা তোমার ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু রাতুল সুলতানার কথায় উত্তর না দিয়ে রাতুল তার কাজ করতে থাকে। রাতুল সুলতানার থাকার জন্য একটি রুম পরিষ্কার করে এবং সেখানে তার সন্তানকে ঘুমি পাড়িয়ে দেয়।
যদিও আপনার গল্পেট আগের পর্ব গুলো আমার পড় হয়নি। তবে আজকের পর্ব পড়ে বুঝলাম রাতুল সুলতানাকে অনেক ভালোবাসে।তবে সুলতানার পরিবার সুলতানার সাথে এমন করা মোটেও ঠিক হয়নি যাইহোক সুলতানা যেহেতু এখন রাতুলের কাছে এসেছে দেখা যাক পরবর্তী পর্বের রাতুল কি করে।
ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য
এই গল্পের প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। যার কারণে এই পর্বের জন্য আমি অনেক বেশি আগ্রহে ছিলাম। অবশেষে জানা গেল সেই মহিলাটা আসলে সুলতানা অবশেষে ওই মহিলাটা নিজের পরিচয় দিয়েছে দেখছি। আর সে সুলতানা এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। আর তার বাবা-মা ও তাকে আশ্রয় দেয়নি এরকম একটা অবস্থায়। এখন দেখছি রাতুল তার সব দায়িত্ব নিয়েছে। অন্যদিকে সুইটি ও তাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। শেষ পর্যন্ত কি হয় এটা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।