ছোট্ট একটি ভালোবাসার গল্প || 10% Beneficiary To @shy-fox 🦊
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা
আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছেন সবাই। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
পরী অনাথ মেয়ে। তিন কুলে তার কেউই নেই। বড় হয়েছে একটি অনাথ আশ্রমে। মিষ্টি চেহারা আর অমায়িক ব্যবহারের কারণে অনাথ আশ্রমের সকলের চোখের মনি পরী। আর বাচ্চাদের প্রিয় পরী আপু। পরীর কাছেও অনাথ আশ্রম এর সকলি তার চোখের মনি। অনাথ আশ্রমের সঙ্গে যে তার আত্মার সম্পর্ক।
অনাথ আশ্রম থেকে প্রতিবছরই বাচ্চাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় পিকনিকে। এ বছর পিকনিকে গিয়ে পরীর সঙ্গে দেখা হয় পিয়ালের। পিয়ালরাও কলেজ থেকে পিকনিক এ এসেছে। বন্ধুরা মিলে গান গাচ্ছিল তারা। পিয়ালের গান পরীর ভীষণ পছন্দ হয়। গান শেষে পরী পিয়ালের সাথে কথা বলতে যায়। আর সেখান থেকেই দুজনের বন্ধুত্ব তৈরী হয়।
পিয়াল আর পরী একই শহরে থাকে। দুজনে প্রায়ই দেখা করে, আড্ডা দেয় । পিয়ালের গানের মাঝে হারিয়ে যায় পরী। এভাবেই চলতে থাকে আর দুজনের বন্ধুত্ব ভালোবাসার সম্পর্কে রূপ নেয়।
পিয়াল পরী কে বিয়ের জন্য প্রপোজ করলো। পরী ও রাজি হয়ে গেলো। কিন্তু সমস্যাটা হয়ে গেলো পিয়ালের বাসা থেকে। একজন অনাথ মেয়েকে পিয়ালের বাবা-মা তার একমাত্র ছেলের বউ করতে একদমই রাজি হচ্ছেন না। কিন্তু পিয়ালও জেদ ধরে বসে আছে বিয়ে করলে সে পরী কেই করবে, অন্যথায় বিয়ে করবে না। ছেলের জেদ এর কাছে হার মেনে পিয়াল এর বাবা-মা রাজি হয়ে গেলেন কিন্তু মন থেকে নয় শুধুমাত্র ছেলের মন রাখতে।
ধুমধাম করে পরী আর পিয়ালের বিয়েটা হয়েই গেল শেষমেষ। কিন্তু বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও পরীকে নিজের ছেলের বউ হিসেবে একদমই স্বীকৃতি দেন না পিয়াল এর মা। বাড়ির কোন কাজেই পরীকে হাত লাগাতে দেন না। সারাদিন বসে শুয়ে থাকতে থাকতেই পড়ি বোর হয়ে যায়। তার সারা দিনের সঙ্গী তার একটি টেডি বিয়ার এবং তার মোবাইল ফোনটি। মোবাইল ফোনে সারাদিন ভিডিও দেখে আর কিছুক্ষণ পর পর সেলফি ক্লিক করে। আর এর ই ফাকে পিয়াল যখন অফিস থেকে একটু সময় পায় তখন পরীর সাথে ফোনে কথা বলে। এভাবেই কেটে যায় পরীর দিনরাত।
কিন্তু পরী পিয়ালের মায়ের এরকম ব্যবহারের কথা পিয়ালকে একদমই জানতে দেয় না। কিন্তু একদিন অফিস থেকে এসে দেখে পিয়ালের মা পরীর সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করছে। কারণ বাড়ির রান্নার কাজে পড়ে একটু সাহায্য করতে চেয়েছিলো তাই। পিয়ালের মা পরীকে বলছিল কোন অনাথ এর হাতের রান্না সে খাবে না।
মায়ের এরকম ব্যবহার দেখে পিয়াল খুবই ভেঙ্গে পড়ে। সে মায়ের সাথে কথা বলে মাকে বোঝাতে চায় পরী কে মেনে নিতে। কিন্তু মা পিয়ালের কথা একদমই মেনে নিলো না। উল্টো পিয়ালকেই বললো মা না হয় পরী দুজনের মধ্যে যেকোনো একজনকে বেছে নিতে হবে তাকে। মায়ের এরকম কথা শুনে পিয়াল আরো ভেঙে পড়লো। সে কি করবে, না করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না।
মা আর পরী দুজনকেই সে অনেক ভালোবাসে। কোনো একজনকে সে কিভাবে বেছে নেবে। এসব ভাবতে ভাবতেই সে রাতে ঘুমোতে পারলো না। পরী তার কাছে অনেকবার জানতে চেষ্টা করলো। কিন্তু পিয়াল পরীকে এসবের কিছুই জানালো না।
দুজনের একজনকেও ছেড়ে বেঁচে থাকা সম্ভব নয় পিয়ালের। তাই অনেক ভেবে পিয়াল সিদ্ধান্ত নিলো সে নিজেই চলে যাবে এই পৃথিবী থেকে। পিয়াল আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু পিয়ালের মা কোন ভাবে বুঝতে পেরে যায় পিয়ালের পরিকল্পনা। তাই সে তার ভুল বুঝে পিয়াল আর পরী দুজনের কাছেই ক্ষমা চায়। আর পরীকে মন থেকেই নিজের পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নেয়।
ভালোবাসা সুন্দর। সেটাকে শুধু সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে। পিয়ালের মা এর দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাওয়ার কারণে সে ছেলে ও ছেলের বউয়ের ভালোবাসাটা বুঝতে পেরেছে। আমাদের সকলেরই উচিত পৃথিবীকে সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার। তাহলেই আমরা পৃথিবীর সকল মানুষকে ভেদাভেদ ভুলে ভালবাসতে পারবো, নিজের করে নিতে পারবো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুবই সুন্দর শিক্ষামূলক একটা ভালোবাসার গল্প শেয়ার করেছেন। আসলে পেয়ালের মায়ের মতো আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছে। তাদের আপনার গল্প থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। অনেক ভালো ছিলো গল্পের ফিনিশিং। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আসলে সবকিছুই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আপু। যারা একসঙ্গে থাকবে তাদের যদি কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে বাবা মা বা অন্যদের এতো সমস্যা কেন। বেশ সুন্দর লিখেছেন। তবে মনে হলো বাংলা সিনেমা দেখলাম। অনেক বাংলা সিনমায় এইরকম কাহিনী দেখা যায়।। সুন্দর হয়েছে।।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)