আতঙ্কের নাম যখন কুকুর।

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামুআলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আজকে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলব। সেটি হচ্ছে কুকুরের কামড় এবং ভ্যাকসিন।


IMG_20241010_150833_177.jpg

বর্তমানে বাংলা আশ্বিন মাস চলছে। এই সময়টা হচ্ছে আমাদের দেশের কুকুরের প্রজননের সিজন। এ সময় কুকুর কিছুটা পাগলাটে আচরণ করে এবং তাদের মধ্যে র‍্যাবিস ভাইরাসের প্রভাব দেখা যায়। র‍্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর খুব সহজেই উত্তেজিত হয়ে যায় এবং মানুষকে কামড়াতে আসে। বাচ্চারা কুকুর দেখলে এমনিতেই কিছুটা ভয় পেয়ে যায় এবং তারা ছোটাছুটি শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই তখন কুকুর তাদেরকে কামড়াতে আসে। তাছাড়া অনেক বাচ্চা আছে যারা কুকুরকে ইটপাটকেল, ঢিল ইত্যাদি ছুড়ে মারে। তখন কুকুর রেগে গিয়ে তাদেরকে কামড়েতে আসে। যদি সেই কুকুর র‍্যাবিস ভাইরাস আক্রান্ত হয় তখন প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন নেওয়া আবশ্যিক হয়ে যায়।

কিন্তু আমরা আসলে খালি চোখে বুঝতে পারবো না কোন কুকুরের র‍্যাবিস আছে এবং কোন কুকুর নেই। র‍্যাবিস ভাইরাস আক্রান্ত কুকুর অথবা কোন মানুষ যদি র‍্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে ভাইরাসটি বেশ কিছুদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তখন আসলে বুঝার উপায় থাকে না যে সে কুকুরটি ভাইরাস আক্রান্ত কিনা কিংবা মানুষটি ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা? সেক্ষেত্রে যেকোনো কুকুর কামড়ালে বা আঁচড় দিলে আমরা স্বাভাবিকভাবেই ভ্যাকসিন নেই। কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে বড় আতংকর বিষয় হচ্ছে র‍্যাবিস ভাইরাসের ভ্যাকসিন বাংলাদেশ সাপ্লাই নেই। বাংলাদেশের দুটি কোম্পানি বর্তমানে র‍্যাবিস ভ্যাকসিন প্রস্তুত করে থাকে। সে দুটি হচ্ছে Incepta Pharmaceuticals এবং Popular Pharmaceutical. কিন্তু বলা বাহুল্য এ দুটি কোম্পানির ভ্যাকসিন বর্তমানে বাজারে সাপ্লাই নেই। সল্প পরিসরে তারা যেটুকু সরবরাহ করে, তা খুবই অপ্রতুল। বিষয়টি মড়ার উপর খড়ার গায়ের মতো।

এজন্য বর্তমানে কুকুর হতে সাবধান থাকতে হবে। আমাদেরকে বাহিরে বাচ্চাসহ গেলে অবশ্যই বাচ্চাদেরকে নিজের কাছে রাখতে হবে। তাদেরকে কোন অবস্থাতেই একা ছাড়া যাবে না। বাচ্চারা বাহিরে গেলে তাদের হাতে যেন খাবার না থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ খাবারের লোভে অনেক সময় কুকুর বাচ্চাদের হাতে কামড় দিতে পারে। কোন অবস্থাতে যদি কুকুর বা বিড়ালের কামড় বা আঁচড় লেগে যায় তাহলে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দিতে হবে। প্রয়োজনীয় ৫টি ভ্যাকসিন নিজের কাছে মজুদ করে রাখতে হবে ফ্রিজের মধ্যে।

ভাইরাস যদি সুপ্ত অবস্থা থেকে প্রকাশ হয় তাহলে জলাতঙ্ক রোগ হবে। আমরা জানি জলাতঙ্ক নিরাময় অযোগ্য রোগ। অর্থাৎ একবার যদি জলাতঙ্ক ধরা পড়ে তাহলে মৃত্যু ব্যাতিত তার অন্য কোন রাস্তা খোলা নেই। লক্ষণ দেখা দেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যেই রোগী মারা যায় এবং তীব্র বেদনা নিয়েই রোগীর মৃত্যু হয়। তাই আমাদেরকে অবশ্যই রাস্তাঘাটে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। কুকুর এবং বিড়াল থেকে সতর্ক থাকতে হবে। নিজের যদি পালিত বিড়াল বা কুকুর থাকে তাহলে তাদেরকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কুকুর-বিড়ালের ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।


2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং কুকুর বিড়াল হতে সাবধানে থাকবেন এই কামনা রইল


IMG_5055.jpg

আমার সম্পর্কে
আমি মুহাম্মদ সাব্বির আকিব। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি। জেলাঃ চাঁদপুর, থানাঃ ফরিদগঞ্জ। থাকি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ গাজীরচট নামক স্থানে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রসায়নে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে একটি ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট হিসাবে কর্মরত রয়েছি। বিবাহিত এবং আল্লাহ একটি পুত্র সন্তানের জনক করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
Sort:  
 5 months ago 

আমরা এই বিষয় গুলো নিয়ে খুবই উদাসীন। অধিকাংশ সময় তো কুকুর কে তাড়িয়ে দেয়। আবার আমাদের দিকে তেড়ে আসলে তাদের কপালে জোটে লাঠির বাড়ি। সুন্দর লিখেছেন আপনি। এগুলো আমাদের জানা উচিত। এরপর উচিত সেই অনুসারে ব‍্যবস্থা নেওয়া।

 5 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাই। এই বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.24
JST 0.033
BTC 85278.43
ETH 2261.57
USDT 1.00
SBD 0.65