খেলাধুলা বাদ দিয়ে ছেলেরা এখন ব্যস্ত মোবাইল নিয়ে।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করব। সেটা হচ্ছে আমার গ্রামের ছেলেদের খেলাধুলা নিয়ে।
কিছুদিন আগে আমি গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম অনেক দিন পর। গ্রাম আমার সব সময় প্রিয়। একারণে গ্রামে গেলে ভালোই লাগে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এবার একটি বিষয় আমাকে বেশ হতাশ করেছে। সেটা হচ্ছে আমাদের গ্রামের ছেলেপেলেরা খেলাধুলা একদমই ছেড়ে দিয়েছে। সাধারণত আমাদের গ্রামে এমন ঘটনা বেশ বিরল।
আমরা যখন গ্রামে ছিলাম এবং খেলাধুলা করার বয়স ছিল, তখন শীতকালে বলতে গেলে সারাদিনই আমরা খেলাধুলা করতাম। শীতকালে আমন ধান পাঁকে। ধান কাটার পর খোলা মাঠে আমরা ক্রিকেট খেলার মাঠ বানাতাম। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা সেরে আমরা মাঠে গিয়ে হাজির হতাম। সকাল থেকে ঠিক দুপুর পর্যন্ত আমরা খেলাধুলা করতাম। তারপর দুই ঘন্টার বিরতি। এই সময়টুকুর মধ্যে আমরা গোসল এবং খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার মাঠে এসে হাজির হতাম। যতক্ষণ পর্যন্ত বল দেখা যেত ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা খেলতাম। তারপর আবার একটু বিরতি।
আমরা সান্ধ্যকালের কিছু খাওয়া-দাওয়া করে আবার মাঠে চলে আসতাম। এবার আর ক্রিকেট মাঠ নয় বরং ব্যাডমিন্টন ফিল্ডে। ক্রিকেটে একসাথে অনেক জন খেলা গেলেও ব্যাডমিন্টনের সেই সুযোগটা নেই। চারজন খেলতো, আমরা সবাই দেখতাম। এভাবে একের পর এক প্রায় সবাই সবার পালা শেষ করত। যাদের শরীরে স্ট্যামিনা বেশি, তারা অনেকগুলো ম্যাচ খেলতো। কারও কোন আপত্তি ছিল না। কারণ সবার হাতেই পর্যাপ্ত সময় ছিল খেলাধুলা করার জন্য।
কিন্তু এবার হতাশার কারণ হলো, সারাদিন ধরে ক্রিকেট খেলা তো দূরের কথা খোলা মাঠে একটি মাঠ পর্যন্ত বানানো হয়নি। কোন ব্যাডমিন্টনের কোর্ট কাঁটা হয় নাই। ছেলেপেলেরা সারাদিন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। দেখা যাচ্ছে কেউ হয়তো টিকটক ভিডিও বানাচ্ছে অথবা কেউ ভিডিও এডিট করছে। তাছাড়া বহু ছেলেপেলে প্রবাসী হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যারা রয়েছে তাদের মধ্যে খেলাধুলা নিয়ে তেমন কোন প্রকার আগ্রহ দেখিনি। কয়েকজন আছে যারা আমাকে পেয়ে বেশ খুশি হয়েছে। কারণ তারা জানতো আমি খেলাধুলার উদ্যোগ গ্রহণ করব। এবার গ্রামে গিয়ে আমি বেশ ব্যস্ত ছিলাম। তারপরও চেষ্টা করেছি ছেলেগুলোকে মাঠমুখী করার জন্য। নিজের পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব করেছি।
কিন্তু ছেলেপেলেরা খেলাধুলা বাদ দিয়ে সারাদিন মোবাইল, টিকটক, ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত আছে বলে বিষয়টা আমাকে বেশ হতাশ করেছে, মানসিকভাবে পীড়া দিয়েছে। এদের সুস্থ-স্বাভাবিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। কারণ, আমি জানি খেলাধুলা শারীরিকভাবে আমাদেরকে দক্ষ করে তোলে। আমরা যখন খেলাধুলা করেছি, এমনও হয়েছে, আমরা ৩-৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে গিয়েছি, এক ঘন্টার বেশি ফুটবল খেলেছি, এরমধ্যে বৃষ্টিও হয়েছে। ভেজা শরীর নিয়ে আমরা আশেপাশের পুকুরে ডুবিয়েছি অনেকক্ষণ। আবার এই ভেজা শরীরে তিন-চার কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে নিজের বাড়িতে গোসল করেছি। পরদিন আবার অন্য কোথাও খেলতে গিয়েছি। একই রকম রুটিন প্রতিদিন। কিন্তু কখনোই আমাদের জ্বর কিংবা সর্দি কিংবা ঠান্ডা স্পর্শ করেনি।
আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারবনা তাদের শারীরিক সক্ষমতা এমন রয়েছে কিনা? আমার ধারণা, সামান্য জ্বরেই তারা কুপোকাত হয়ে যাবে। কারণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ শারীরিক কসরৎ কিংবা খেলাধুলার প্রয়োজন আছে, তার শিকি ভাগও করে না। বিষয়টা খুবই কষ্টদায়ক ও দুঃখজনক।
বিঃদ্রঃ- DEXC ভোটিং ও Super Walk এর ছবি গতকাল রাতের তোলা। DEXC ভোটিং টাইম এখনও হয়নি আমার।
যে জায়গায় আগেরকার ছেলে মেয়েরা বেশিরভাগ সময় হাতে খাতা, কলম ও বই নিয়ে পড়াশোনা করতো।আর আজ সেই জায়গায় এখনকার জেনারেশনের ছেলে মেয়েরা মোবাইলের মধ্যে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এখনকার সময়ের ছেলে মেয়েরা পড়াশোনার মধ্যে তেমন একটা আগ্রহী নন। তারা সব সময় মোবাইলের মধ্যে ঘাঁটাঘাঁটি করতে ব্যস্ত।
ঠিক বলেছেন ভাই। সময়টা মনে হয় বদলে গেছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
সমাজের সকল ছেলেরা এখন মোবাইলে আসক্ত। খেলাধুলা করতে চায় না। ছেলে মেয়েরা মোবাইলের মধ্যে বেশ আসক্ত হয়ে পড়ছে। এখন সবাই খেলাধুলা বাদ দিয়ে সারাদিন মোবাইল, টিকটক, ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত আপনি ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
এই বিষয়ে কি আর বলব ভাই! আমি বরাবরই এটা নিয়ে বিরক্ত। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আমাদের সময় আমরা বিভিন্ন রকম খেলাধুলায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে থাকতাম। স্কুল থেকে এসেই বন্ধুরা মিলে খেলাধুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়তাম সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু এখনকার ছেলেরা মোবাইলে গেম খেলায় ব্যস্ত। যার জন্য তারা নিজের শরীর ভালো রাখার উপায় হারিয়ে ফেলছে পাশাপাশি এক প্রকার মানসিক রোগী হয়ে পড়ছে। এ সমস্ত বিষয়গুলো পিতা-মাতাদের মধ্যে সজাগ হতে হবে। তাদের খেলাধুলার বিষয়টা বুঝিয়ে বলতে হবে। ভবিষ্যতে ভালো চাকরি প্রত্যাশা করতে হলে আমাদের এ প্রজন্মকে সঠিক পথ দেখাতে হবে।
বাবা-মা তো চায় সন্তান বাহিরে না যাক। সারাদিন সন্তান গৃহবন্দী থাকলেই তারা খুশি থাকে। এতে করে এই সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়। খুব ভালো একটি বিষয় বলেছেন। ধন্যবাদ ভাই আপনার এমন সুন্দর মন্তব্যের জন্য।