সময়ের অপচয়। জেনারেল রাইটিং।
আমার গ্রামের এক বড় ভাই ইদানীং উনার ফেসবুকে বেশ সরব। যেমনটা আমি দেখেছিলাম ২০১১/১২ সালের দিকে। মানুষ ফ্রেন্ডরিকুয়েস্টের জন্য কমেন্ট স্প্যামিং করত। স্ট্যাটাস দিত সাপোর্ট পাওয়ার জন্য। এসব নিয়ে ফ্রেন্ডসার্কেলে বেশ হাঁসাহাসি হত। এই অজানা, অচেনা বন্ধুদের নিয়ে কি হবে? যাইহোক, ভাইয়ের এই চেষ্টাটা অবশ্য আর্থিক! তিনি ফেসবুকে ৫০০ ফ্রেন্ড বানিয়ে FACEBOOK STAR এর মাধ্যমে এখন টাকা কামাতে পারেন।
Photo by Pixabay
সেদিন একটা ফটো শেয়ার করল যাতে দেখে যায় তিনি ইতিমধ্যে ১২সেন্ট পেয়ে গেছেন। উনি এটা উনার স্ট্যাটাস, রিলস, এবং স্টোরিতে টানা তিনদিন শেয়ার করলেন। আসলেই তো! ১২ সেন্ট! বিশাল একটা ব্যাপার!
ঠিক, এই জায়গাটাতে এসেই আমার খুব আফসোস লাগে উনার জন্য। উনাকে বিগত একমাসেরও বেশি সময় ধরে আমি ফেসবুকে লেগে থাকতে দেখেছি। এই এক মাসে উনি ১২টি স্টার পেয়েছেন যার বাজার মূল্য ১২সেন্ট। ফেসবুকের মিনিমাম উইথড্র রেঞ্জ ১০০ ডলার! তাহলে, কত বছরে উনি এই এমাউন্ট পাবে? আমি নিশ্চিত, উইথড্র পাওয়ার জন্য যেসব প্রসেসে যাওয়া লাগে তা কমপ্লিট করতে উনি অলরেডি হাজার দুয়েক টাকা খরচ করে ফেলেছেন।
এতে অবশ্য আমার কোন অসুবিধা নেই। তবে আফসোস আছে যা আগেই উল্লেখ করলাম। আফসোসের কারনটা হলো, ভাইকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি এবং আমি জানি ফেসবুকে রিলস তৈরি করে সফল হওয়ার মত কোয়ালিটি উনার মধ্যে খুবই কম। এজন্য, উনি এখানে যত সময় ব্যয় করবে, ততটুকুই নষ্ট হবে।
মানুষ এখন সামান্য পরিশ্রমেই সফল হতে চায়৷ আর ফেসবুক, ইউটিউবের মত প্লাটফর্মগুলো সেরকম সুযোগ দিচ্ছে বলেই তারা এতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু, এই সেক্টরে যত মানুষ কাজ করে; সফলতার হার সেই হারে খুবই কম। কিন্তু তবুও মানুষ এর পিছনে লেগে আছে৷ কারন, যারা এসব প্রমোট করে তারা লাখ-কোটি টাকার গল্প শুনায়। কোন কারন ছাড়া এভাবে কোটি টাকা কামানোর যে নেশা বর্তমানে গণহারে বিস্তার লাভ করছে তা খুবই ভয়ানক। আমি যতটুকু বুঝি, এসবের জন্য নিজেকে উপস্থাপন করা যতটা জরুরী, ঠিক ততটাই জরুরী গ্যাজেটগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে জানা।
আপনি যদি সুশিক্ষিত নয় এমন কাউকে একটা ল্যাপটপ বা নোটবুক গিফট করেন, দেখবেন উনি সেটাতে মুভি কিংবা নাটক দেখে সময় পার করছে। অনেকে হয়ত গেমস খেলছে৷ কিন্তু ব্যবহারকারী যদি স্মার্ট হয় সে হয়ত এডোবির প্রোডাক্টগুলোর কাজ শিখে কিছু করার চেষ্টা করবে৷ ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে তার আনাগোনা বাড়বে। স্টিমিটের মত প্লাটফর্মে নিজের ব্যাকগ্রাউন্ড খুজবে।
কিন্তু, প্রথম ইউজার ঘুরবে বিভিন্ন মুভি সার্ভারে। বড়জোর, ফেসবুক ইউজ করবে। উরাধুরা চ্যাটিং করবে। গ্যাজেটের সঠিক ইউটালাইজ করা হয়ত তাকে দিয়ে হবেনা।
এখানে, আমার পরিচিত বড় ভাই একটি উদাহরণ মাত্র। আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে এমন চেষ্টাকারীর সংখ্যা অসংখ্য। সময় থাকতে যদি নিজের ট্যালেন্ট, প্যাশনের জায়গা খুজে না পায় তবে তাকে অবশ্যই ভুগতে হবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সময়কে কেন্দ্র করে খুব সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই চমৎকার পোস্ট আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। কারণ আপনার মধ্যে বেশ দারুন সজাগ সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করছি। আমাদের সবার এমন সচেতন হতে হবে।
ঠিক বলেছেন ভাই। আমাদেরকে সময় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
ধন্যবাদ, সুন্দর মতামত দেয়ার জন্য। ভালোবাসা রইল।