আয়েশা (রাঃ) মসজিদ দর্শনের অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


হজে আসার আগে আমি জানতাম হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে আমাদেরকে বেশ কিছু জায়গায় ঘোরানো হবে। যেহেতু আমরা এখানকার কোন কিছুই চিনি না। তাই এই বিষয়টা নিয়ে আমি বেশ খুশি ছিলাম। কিন্তু সৌদি আরবে আসার কয়েকদিন পরেই আমার ভুল ভেঙ্গে গেলো। বুঝতে পারলাম আমরা যা আশা করেছিলাম তার অনেক কিছুর সাথেই এখানকার পরিস্থিতি মিলবে না। হজ এজেন্সি গুলো হজে আগত লোকদের সাথে নানা রকম প্রতারণা করে থাকে। অনেকেই অধিক মুনাফা করতে গিয়ে তাদের কথা রাখতে পারেনা। বেশি মুনাফা করতে গিয়ে তারা হাজীদেরকে নানা রকম সমস্যায় ফেলে। যাই হোক যখন বুঝতে পারলাম হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে আমাদের তেমন কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে না। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেদেরকে নিজেদের খরচে ঘোরাফেরা করতে হবে। এজন্য আমার সাথে রুমে যারা ছিলো তাদের সাথে কথাবার্তা বলেছিলাম।

1000008178.jpg

তারাও এই বিষয়ে আমার সাথে একমত হয়েছিলো। যেহেতু আমরা এত দূরের একটা দেশে এসেছি। তাই এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলো না দেখে গেলে মনের ভেতরে এক ধরনের অতৃপ্তি কাজ করবে। সেই কারণেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আশেপাশের যে উল্লেখযোগ্য জায়গা গুলো আছে সেগুলো নিজেরাই ঘুরে ফিরে দেখবো। সেই পরিকল্পনার মোতাবেক গতকালকে গিয়েছিলাম আয়েশা মসজিদ দেখতে। এটি মুসলিমদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। বিশেষ করে যারা মুসলিম মহিলা রয়েছে তাদের জন্য। কারণ তাদেরকে ওমরা করতে হলে এই আয়েশা মসজিদ থেকে এহরাম বাধার নিয়ত করতে হবে। আমার রুমমেট কয়েক দিন ধরে আমাকে বারবার বলছিলো সেখানে যাওয়ার জন্য। যেহেতু সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা তাই আমিও চিন্তা করলাম দুজনে গিয়ে সেখান থেকে ঘুরে আসি।


1000008183.jpg

প্রথমত আমাদের তিনজনের যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আমাদের ভেতরে একজনের একটি ব্যক্তিগত কাজ পড়ে যাওয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম দুজনে সেখানে ঘুরতে যাবো। তবে গতকাল বিকেলে আমরা দুজন প্রথমে গিয়েছিলাম একটি জায়গায় কিছু জিনিসপত্র দেখতে। উদ্দেশ্য ছিলো যদি পছন্দমত কিছু পায় তাহলে কেনাকাটা করবো। সেখানে গিয়ে আমি দুটি লাগেজ কিনেছি। লাগের দুটো বেশ কম দামের ভেতরে পেয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক লাগেজ কেনা শেষ হতে আমি চিন্তা করলাম একটি ট্যাক্সিতে করে হোটেলে চলে যায়। আমরা সেখানে যাওয়ার সময় হেঁটেই গিয়েছিলাম। জায়গাটা আমাদের হোটেল থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয়। তবে লাগেজ হাতে নিয়ে হাটতে ইচ্ছা করছিলো না। এজন্য ট্যাক্সিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা সেখানে রাস্তার পাশে দাঁড়াতেই একটি গাড়ি আমাদের পাশে থামলো। কথাবার্তা বলতে গিয়ে দেখি ছেলেটি বাংলাদেশি।


1000008187.jpg

পরে তার সাথে দামদর করে তার ট্যাক্সিতে উঠে বসলাম। ট্যাক্সিতে উঠে বসে আমরা দুই রুমমেট যখন গল্প করছিলাম তখন সে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করল যে আমরা আয়েশা মসজিদ যেতে ইচ্ছুক কিনা? তখন আমরা হ্যাঁ বলতেই সে বলল তাহলে সে আমাদেরকে তখনই নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু আমি বললাম আগে লাগেজ গুলো রুমে রেখে তারপর বের হতে হবে। পরবর্তীতে তার সাথে দরদাম করে ঠিক করলাম সে আমাদেরকে হোটেলের সামনে নামিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে। আমরা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে তারপর তাকে নিয়ে আয়েশা মসজিদ যাবো। যাইহোক আমরা রুমে ফিরে তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে কাপড়চোপড় পাল্টে নিচে নামলাম।


1000008180.jpg

সেখানে গিয়ে দেখি ছেলেটি আগে থেকেই সামনের পার্কিং স্পেসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমরা সেখানে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম। ততক্ষণে সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়েছে। মক্কার রাস্তার সড়ক বাতি গুলো সব জ্বলে উঠেছে। আমরা তার গাড়িতে করে আয়েশা মসজিদের দিকে যেতে লাগলাম। তবে সেখানে পৌঁছানোর পরে বুঝতে পারলাম জায়গাটা আসলে খুব একটা বেশি দূরে নয়। যাই হোক সেখানে পৌঁছে আমরা দুজনে সেই মসজিদে ঢুকে প্রথমে ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম। তারপর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। বের হয়ে মসজিদের আশেপাশে একটু দেখে তারপর আমরা আবার গাড়িতে উঠে বসলাম। ফেরার সময় আমি মক্কার রাতের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ফিরছিলাম। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি ধর্মীয় স্থাপনা দেখার তৃপ্তি মনে নিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। আর এভাবেই গতকালকের ঘোরাফেরা শেষ হোলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমক্কা, সৌদি আরব

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 days ago 

আয়েশা (রাঃ) মসজিদ ভ্রমনে গিয়েছিলেন আপনারা দুজন, এটা দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। সৌদি আরবে যাওয়ার পর থেকে দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরাঘুরি করার জন্য আপনি চেষ্টা করতেছেন বিষয়টা খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে দর্শনীয় স্থানে ঘুরাঘুরি না করলে তৃপ্তি পাওয়া যায় না এটা ঠিক বলেছেন। আপনার ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তগুলো পড়তে কিন্তু বেশ ভালোই লাগতেছে। আপনারা মসজিদে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়েছিলেন এটা শুনে তো আরো ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্তটি উপস্থাপন করার জন্য।

 7 days ago 

পবিত্র নগরীতে থেকে প্রতিনিয়ত দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমন করে আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করছেন। আর আমরা আপনার পোস্ট গুলো দেখে আপনার সাথে সাথে এমন পবিত্র জায়গা গুলো দেখে নিতে পারছি। এটা জেনে ভালো লাগলো যে মসজিদের ভিতরে আপনারা দুই রাকাত নফল নামায ও আদায় করেছেন। বেশ ভালো লাগলে ভাইয়া।

 7 days ago 

আসলেই তাই এত দূরে গিয়েও সেখানে দর্শনীয় পবিত্র স্থানগুলো চোখে না দেখলে অতৃপ্তি কাজ করবে। বেশ ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্ট দেখে। আয়েশা (রাঃ) মসজিদ‌ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে খুবই মুগ্ধ হলাম। সেই সাথে এই জায়গাটা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। চারপাশে পরিবেশটা খুবই সুন্দর। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের লাইটিং অনেক বেশি ভালো লাগছে দেখতে।

 7 days ago 

আসলেই আমাদের দেশের ট্রাভেল এজেন্সি গুলোর কথায় কাজে কোনো মিল থাকে না। নিজ খরচে আশেপাশের জায়গা গুলো ঘুরাঘুরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন,এই ব্যাপারটা খুব ভালো লেগেছে। বাহিরের দেশে ঘুরাঘুরি করার মজাই আলাদা। তাছাড়া সৌদি আরবে তো দর্শন করার মতো প্রচুর ধর্মীয় স্থান রয়েছে। তাই এসব জায়গা গুলো স্বচক্ষে না দেখলে সত্যিই আফসোস লাগবে পরবর্তীতে। যাইহোক আয়েশা (রাঃ) এর মসজিদ দর্শনের অভিজ্ঞতা দারুণভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ভাই। সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 60122.55
ETH 3199.29
USDT 1.00
SBD 2.43