অনেকদিন পর বন্ধুর সাথে ফুটবল ম্যাচ দেখা।
কাল রাতে হঠাৎ করে বন্ধু রাফসানের ফোন পেলাম। বেশ কিছুদিন হল ওর সাথে তেমন একটা কথাবার্তা হয় না। ফোন দিয়ে বলল আগামীকাল আমাদের এলাকায় একটা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা আছে। বেশ জমজমাট খেলা হবে। কিছু আফ্রিকান প্লেয়ার আসবে সেখানে খেলতে। খেলা দেখতে চাইলে চলে আসিস। অনেকদিন হলো তেমন কোন খেলা দেখা হয় না সরাসরি। তাই চিন্তা করলাম এই সুযোগ মিস করবো না।
সাথে সাথেই বন্ধু ফেরদৌসকে ফোন দিলাম। কিন্তু ফোন দিয়ে ফেরদৌস কে পেলাম না। যাই হোক পরদিন সকালে আবার ফোন দিলাম ফেরদৌসকে। ফেরদৌসের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম রাফসান ফেরদৌস কেও ফোন দিয়ে জানিয়েছে খেলা হওয়ার কথা। ফেরদৌস বলল চারটার দিকে চলে আসো। তারপর দুইজন একসাথে খেলা দেখতে যাবো। যথারীতি আমি চারটা বাজার কিছুক্ষণ আগে রওনা দিলাম ফেরদৌসের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে।
এর ভেতরে বন্ধু রাফসানের ফোন পেলাম। রাফসান ফোন দিয়ে বলল তুই কোথায়? আমি এখন তোর বাসার কাছাকাছি। আমি তখন তাকে বললাম আমিতো ফেরদৌসের বাসার দিকে যাচ্ছি। তারপর আমি রাফসানকে বললাম তাহলে এক কাজ কর। তুই ট্যাপাখোলায় চলে আয়। সেখান থেকে আমরা তিনজন একসাথে খেলা দেখতে যাবো। রাফসান বলল ঠিক আছে আমি আসছি। এর ভেতরে ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে ছোট্ট একটা সমস্যা হয়েছে। সেই সমস্যার সমাধান করতে করতে বেশ কিছুটা সময় পার হয়ে গেলো।
ইতিমধ্যে রাফসান আমাদের কাছে চলে এসেছে। তারপর তিন বন্ধু মিলে একসাথে রওনা দিলাম খেলা দেখার উদ্দেশ্যে। খেলাটি অবশ্য রাফসানের এলাকাতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু রাফসান শহরে এসেছিলে একটা দাওয়াত খেতে। যার ফলে আমরা তিনজন একসাথে রাফসানের এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। আমরা খেলার মাঠে পৌঁছে দেখি খেলা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি খেলা কতক্ষন হয়েছে। পরে আশেপাশের লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারলাম অল্প কিছুক্ষণ হলো খেলা শুরু হয়েছে। খেলার মাঠে পৌঁছে আমি পুরোপুরি অবাক হয়ে গেলাম। অনেকে মনে করে বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। কিন্তু এই খেলার মাঠের ছবি দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবে বাংলাদেশে এখনও ফুটবলের জনপ্রিয়তা কতখানি। খেলার পুরো মাঠের চারপাশে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এত দর্শক কোন স্থানীয় ক্রিকেট ম্যাচে কখনোই আমি দেখিনি।
লোকজনের প্রচন্ড ভিড় হওয়ার কারণে এর ভিতর থেকে ভালোমতো ছবিও তুলতে পারিনি। লোক বেশি হওয়ার আরো একটা কারণ হচ্ছে সবার মুখে মুখে বিদেশি প্লেয়ারের কথা ছড়িয়ে পড়েছে। আমরাও মাঠে পৌঁছে সে প্লেয়ার গুলো খুঁজতে লাগলাম। পরে দেখতে পেলাম আফ্রিকান ৩-৪ জন প্লেয়ার এসেছে। তবে তাদের খেলা দেখে আমার সন্দেহ হলো তারা আদৌ ফুটবল ভালোমতো খেলতে পারে কিনা। কারণ তাদের থেকে আমাদের স্থানীয় প্লেয়াররাই ভালো খেলছিলো। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে খেলা দেখার পর প্রথমার্ধ সমাপ্ত হলো গোলশূন্যভাবে।
এদিকে আমি গেলাম নামাজ পড়তে। রাফসান আর ফেরদৌস গেল একটু ফাঁকা জায়গায়। কারণ এতক্ষণ ভিড়ের ভেতর দাঁড়িয়ে থেকে এই প্রচন্ড গরমে আমরা সবাই ঘেমে নেয়ে উঠেছি। আমি নামাজ পড়ে এসে আরো কিছুক্ষণ খেলা দেখে তারপর আমি আর ফেরদৌস অন্যদিকে ঘুরতে চলে গেলাম। খেলা শেষে অবশ্য খবর পেয়েছি। যে দল বিদেশি প্লেয়ার এনেছিল তারা ২-১ গোলে হেরে গিয়েছে। এই ব্যাপারটা আমি সবসময় খেয়াল করেছি। যারা স্থানীয় প্লেয়ারদের উপর ভরসা রাখে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ তারাই জেতে। যাই হোক দীর্ঘদিন পর সরাসরি একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ন ফুটবল ম্যাচ দেখে বেশ ভালো লাগছিল।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ফুটবল খেলা দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি ছোট থেকে ফুটবল খেলা দেখতে এবং খেলতে খুব ভালোবাসি। মাঠের এক কোনায় বসে বসে বাদাম খেতে খেতে ফুটবল খেলা দেখার মজাটাই আলাদা। ফুটবল খেলার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। আমি সেই আগের দিনের ফুটবল খেলা দেখার আনন্দটা অনুভব করলাম কিছুক্ষণ। কম বেশি এখন আমরা সবাই ফুটবল খেলা দেখতে পছন্দ করি। বিদেশি খেলোয়াড় এলে সেখানে আরো বেশি মানুষের ভিড় জমে যায়। সবার মনে আশা বিদেশি খেলোয়াড়ের খেলা দেখবো। খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল প্রিয় ভাই।
আমাদের দেশের মানুষজনের বিদেশি প্লেয়ারদের প্রতি একটা অন্য রকমের টান আছে। তারা মনে করে বিদেশি প্লেয়াররা মনে হয় সবাই ভালো খেলে।
হ্যাঁ ভাই একদম ঠিক কথা এটা মনে করে সবাই ছুটে চলে আসে খেলা দেখতে। আমাদের গ্রামে এরকম একটা হয়েছিল খেলা বিদেশি প্লেয়াররা এসেছিল। ঠিক এমনটাই হয়েছিল।
আসলে বন্ধুদের সাথে একত্রিত ভাবে খেলনা দেখার মধ্যে মজাটাই অন্যরকম
আর ফুটবল খেলাটা গ্রাম অঞ্চলের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটা খেলা। যখনই কোন জায়গায় টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয় সেখানে প্রচুর মানুষ আসে খেলা দেখার জন্য তা আপনার শেয়ার করা ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারা যাচ্ছে। আর এখন তো ফুটবল খেলার মৌসুম শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফুটবল খেলা হবে সব জায়গায়।
ছবিগুলো দেখলেই কিন্তু গ্রাম অঞ্চলে ফুটবলের জনপ্রিয়তা টের পাওয়া যায়। এত দর্শক কোন ক্রিকেট ম্যাচে আমি দেখিনি।
তিন বন্ধু মিলে আপনারা খুবই ভালো সময় পার করেছেন সেটা গল্প পড়েই বুঝতে পারলাম। ফুটবল খেলা দেখতে খুবই ভালো লাগে বিশেষ করে শেষ মুহূর্তে এসে একটা টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে সেই মুহূর্ত টা আমার অনেক ভালো লাগে। দেশের বাইরের প্লেয়ার হলেই যে তারা ভালো খেলবে তেমন টা সবসময় সঠিক হয়না। স্থানীয়দের কে আসলে কেউ তেমনটা মূল্যায়ন করতে চায় না এটা একদম ঠিক না তাদের কে একটু উৎসাহ দিলে সমস্যা কোথায়। যাক পরিশেষে এটা দেখে ভালো লাগলো যে স্থানীয়রাই জিতেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটা মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। আপনি এবং আপনার বন্ধুদের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ফুটবল খেলার মজাটাই এখানে। প্রতিটা মুহূর্তে টানটান উত্তেজনা থাকে।
খুব সম্ভবত বিদেশী প্লেয়ার এর আসাতেই দর্শক এতটা বেশি হয়েছিলো। ফুটবল খেলায় এত দর্শক সত্যিই সচরাচর লক্ষ্য করা যায় না।
তবে ফুটবল খেলা দেখতে আমার ভালোই লাগে।
তিন বন্ধু মিলে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে বেশ ভালই মজা করেছেন। স্থানীয়রাই ম্যাচটি জিতেছে এটা জানতে পেরে ভালো লাগলো।
বিদেশি প্লেয়ার আসার কারণে হয়তো দর্শক কিছু বেশি এসেছিলো। তবে গ্রামাঞ্চলে এখনো ফুটবলের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি।
তিন বন্ধু মিলে ফুটবল খেলা দেখার মজাই অন্যরকম ।সত্যি কথা বলতে বন্ধুরা এক সাথে হলে এম্নিতেই সব ভাল লাগে । অনেক ভাল লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে । ধন্যবাদ ভাইয়া ।
ঠিকই বলেছেন বন্ধুবান্ধব এক জায়গায় হলে এমনিতেই সব ভালো লাগে।
গত কয়েক বছর পূর্বে আমাদের এলাকায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল । তখন ফাইনালে একটি দল নাইজেরিয়ান কিছু ফুটবলার এনেছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে ওই দলটি সেদিন হেরে যায়। আজ আপনার লেখা পোস্ট দেখেও বুঝতে পারলাম আসলে স্থানীয়ারা যেভাবে মন প্রাণ খুলে ফুটবল খেলে। অন্যরা সেভাবে ভালবেসে ফেলতে পারে না এ কারণে স্থানীয়রা জিতে যায়।
একদম ঠিক বলেছেন স্থানীয় প্লেয়াররা তাদের সেরা এফোর্টটা দেয়। এজন্যই ভাড়াটে প্লেয়ার এনে জেতা সম্ভব না।
প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ ভাই। খেলা দেখার মজাটাই নষ্ট হয়ে যায়। অনেক ধন্যবাদ আপনার খেলা দেখার অনুভূতি সেয়ার করার জন্য
আসলেই ভাই অত্যাধিক গরম ছিলো। এজন্যই খেলা দেখে খুব একটা সুবিধা করতে পারিনি।