প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট ভ্রমণ (সপ্তম পর্ব)। ১০% সাইফক্স।
সূর্যমুখী বাগান থেকে ঘোরাফেরা করে আমরা যখন গাড়িতে উঠলাম তখন ঠিক করলাম পথে আর কোথাও থামা যাবে না। কারণ আমাদের আজকে ৩টি স্পটে যেতে হবে। যে জায়গাগুলি যথেষ্ট দুর্গম এবং অনেক দূরে দূরে। যার ফলে আমরা ড্রাইভারকে বললাম তাড়াতাড়ি চালাতে। তিনি মোটামুটি স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
আমরা প্রথমে যে জায়গাটাতে যাবো সেই জায়গাটা আমাদের গাড়ির ড্রাইভার ভালো মতো চেনেনা। যার ফলে আপুর এক পরিচিত লোক আছে যার বাড়ি ওই এলাকাতে। আপু সেই লোককে ফোন দিলে সে খুশি মনে আমাদেরকে সাহায্য করতে রাজি হল। সে আমাদেরকে একটি নির্দিষ্ট জায়গার কথা বলল। আমরা গাড়ী নিয়ে সেখানে গেলে সেখান থেকে তিনি আমাদের পথ দেখাবেন।
ড্রাইভার সাহেবকে এই লোকেশনের কথা বলা হলো। আমরা মিনিট বিশেকের ভেতরে সেই লোকেশনে পৌঁছে গিয়ে দেখি জামিল নামের সেই লোকটি সেখানে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছে। যেহেতু আমাদের ড্রাইভার জায়গাটি ভালোমতো চেনে না। তাই জামিল ভাই একটি মোটরসাইকেলে সামনে যাচ্ছিল আর আমাদের গাড়ি তার মোটরসাইকেলের পিছু পিছু যাচ্ছিল।
এভাবে কিছুক্ষন চলার পর শুরু হলো গ্রামীন রাস্তা। রাস্তার অবস্থা খারাপ ছিল কিন্তু কিছুই করার নেই। সৌন্দর্য উপভোগ করতে গেলে এই সমস্ত সমস্যা আপনাকে মেনে নিতেই হবে। এভাবে আমরা কিছুক্ষণ চলার পর হঠাৎ করে জামিল ভাই গাড়ি থামাতে বলল। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা কি আমাদের নির্ধারিত জায়গায় চলে এসেছে কিনা। তিনি বললেন এখনও আমরা সেখানে পৌছায়নি।
আমার তখন জিজ্ঞেস করলাম তাহলে এখানে কেন থেমেছি। তিনি তখন বলল সামনে একটি চমৎকার ফুলের বাগান আছে। আপনাদের জায়গাটি ভাললাগতে পারে। তাই চিন্তা করলাম আপনাদের সেই বাগানটি দেখিয়ে নিয়ে যায়। তারপর আমরা তার পিছে পিছে যেতে লাগলাম। যদিও মনে মনে হিসাব করছিলাম যে এইখানে থামার জন্য আবার আমাদের অন্য কোনো স্পট মিস না হয়ে যায়। কিন্তু সেই ফুলবাগানে পৌঁছে চমকে গেলাম।
সেই বাগানে এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। বিভিন্ন রকমের ফুলে বাগানটি একটি পার্কের রূপ ধারণ করেছে। বাগানের মালিক পক্ষ এমন ভাবে সাজিয়েছে বাগানটি। দেখলে আপনার মনে হবে এটি একটি পার্ক এবং সে যে একজন যথেষ্ট বুদ্ধি মানুষ সেটা তার বাগানে এলেই বোঝা যায়। কারন সে এই বাগানটাকে একটি পার্ক বানিয়ে সেখানে টিকেটের ব্যবস্থা করেছে। বাগানে যে সমস্ত দর্শনার্থী আসবে তাদেরকে টিকিট কেটে বাগানে প্রবেশ করতে হবে। এখান থেকে তার চমৎকার একটি ব্যবসার ব্যবস্থা হয়েছে।
এই বাগানে আমার সবচাইতে ভাল লেগেছে গাঁদা ফুলের বাগান।হলুদ এবং কমলা রঙের ফুলে ভরে আছে এই বাগানটি। বাগানের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে একটি ছোট্ট খাল। সেইখানে নৌকায় করে ঘোরার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তাছাড়া বাগানের ভেতরে দেখলাম একটি চটপটির স্টল। দর্শনার্থীরা যাতে হালকা কিছু খেতে পারে সেজন্য এই স্টল এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাগানে আসার সময় আমাদের মনে যে বিরক্তি জেগেছিল বাগানে আসার পর সেটা বেমালুম গায়েব হয়ে গেল।
অন্যরকম এক ভালো লাগায় মন আচ্ছন্ন হয়ে গেলো। আমরা বেশ কিছুক্ষণ সেই বাগানে কাটালাম। অনেক ছবি তুলেছি সেখানকার। যদিও আমরা বুঝতে পারছিলাম পরিকল্পনার বাইরে এই বাড়তি সময়টুকু আমাদেরকে যথেষ্ট ভোগাবে। তার পরেও এই সৌন্দর্যের হাতছানি আমরা উপেক্ষা করতে পারিনি। বেশ কিছুটা সময় সেখানে কাটানোর পর আমরা আবার আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মনে মনে জামিল ভাইকে একটি ধন্যবাদ দিলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে এই ভ্রমণের আরো একটি পর্ব নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ভাইয়া আপনার সিলেট ভ্রমণের লেখা এবং ছবি যতই দেখছি ততই ভালো লাগছে।বিশেষ করে আজকের পার্কের দৃশ্য গুলো।ফুলগুলো ছিলো অসাধারণ। সিলেট আসলেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই জায়গাটি খুব সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে ভাই কি বলবো, যখন কোন টার্গেট থাকে মাথায়, তখন আসলে একটা জায়গাতে হিউজ পরিমান সময় দেওয়ার সম্ভাব না। যার কারণে সব জায়গাতে কিছু কিছু সময় ভাগ করে নিতে হয়। যেমন করে আপনি বাকি তিনটা জায়গায় ঘোরার জন্য সূর্যমুখী ফুলের বাগান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যেতে হয়েছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি সব সময়।
আসলে এই ভাবে ঘোরাফেরা করাটা আমার ব্যক্তিগতভাবে খুব একটা পছন্দ না। আমি একটু রিল্যাক্স ট্রিপ পছন্দ করি। কোথাও ঘুরতে গেলে অবশ্যই সময় হাতে নিয়ে যাওয়া উচিত। তাহলে সেই জায়গায় ভ্রমণের পরিপূর্ণ মজাটা পাওয়া যায়।
সত্যি ভাইয়া জায়গাটি খুবই সুন্দর । আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে গাঁদা ফুলের বাগানের মধ্যে চটপটির স্টল যেখানে ভ্রমণকৃত মানুষেরা এসে হালকা খাবার দাবার করতে পারে এই ব্যবস্থাটা সত্যিই অসাধারণ একটা বুদ্ধিমানের কাজ। এবং এমন সুন্দর পরিবেশে ঘুরতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আপনার পোস্টটা পড়ে সত্যি অনেক মজা পেলাম ।এমন পোস্ট আমাদের আরও উপহার দেবেন আশা করি ধন্যবাদ আপনাকে।
এই ফুলের বাগান আসলেই আমার কাছে অত্যন্ত চমৎকার লেগেছে। আবার যদি কখনো সুযোগ পায় সেখানে যাওয়ার অবশ্যই যাবো।
ভাই চমৎকার কিছু জায়গার ছবি দেখে নিলাম কয়েক মুহূর্তে। সিলেট খুবই সুন্দর জায়গা তবে আমি এসব জায়গায় ঘোরার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি। ফ্লাওয়ার লেকের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যিই মন মুগ্ধ হয়ে গেল ভাই। আপনার সিলেট ভ্রমনের পোস্টগুলো যত দেখছি ততো বেশি ভালো লাগছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
বাংলাদেশের ভিতরে যে কয়েকটি জায়গা আমার পছন্দ তার ভেতর সিলেট অন্যতম। চেষ্টা করুন সিলেট থেকে ঘুরে আসতে। মন ভালো হয়ে যাবে নিশ্চিত।
সিলেটে কখনো যাওয়া হয়নি আমার 😅 তবে আপনার পোষ্টগুলো দেখে তা উসুল করে নিলাম 😍আজকের পর্বের দারুন ফটোগ্রাফি করেছেন সাথে সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন 👌👌বিশেষ করে গাধাফুলের সমারোহ দেখতে পেলাম আপনার পোষ্টের মাধ্যমে 😍😍একসাথে এত গাধা ফুল এর আগে কখনো আমার দেখা হয়নি😍😍 ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য 🌹❤️🌹
সিলেট আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি জায়গা। সেখানে অনেকগুলো স্পট আছে যেগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে। সময়-সুযোগ করে একবার ঘুরে আসুন।
তা একদম বাস্তব কথা বলেছেন ভাইয়া। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে গেলে কষ্ট তো একটু করতেই হয়। তবে যায় বলেন না কেন বাগানের ফুল দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ফ্লাওয়ার লেক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে বাগানটি। অনেক সুন্দর কিছু গাধা ফুলের ফটোগ্রাফি করেছেন। পরের পর্বের জন্য তাহলে ভাইয়া অপেক্ষায় থাকলাম নতুন কোনো জায়গা দেখার জন্য ❤️
আমার এখানে যাওয়া হয়নি কারণ খুব অল্প দিনের জন্যে গিয়েছিলাম আমি।গাছ গুলো সাজানো দেখতেই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে।দারুণ পরিবেশ।
@tipu curate
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
Upvoted 👌 (Mana: 1/6) Get profit votes with @tipU :)
বাহ ভাইয়া,আমার তো হিংসে হচ্ছে। এত সুন্দর সুন্দর ফুলে ভরা বাগান,আর সেখানে আপনারা ঘুরে এলেন।আমি যেতে পারছি না,নিশ্চয়ই সবাই খুব মজা করেছেন সেখানে৷ ফুলের বাগান দেখলে আমার ইচ্ছে হয় ঘুরে ঘুরে দেখি।ভাইয়া অসম্ভব সুন্দর জায়গায় ঘুরে এসেছেন। আর আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সুযোগ পেলে অবশ্যই সিলেট থেকে ঘুরে আসবেন। সিলেট সত্যিকার অর্থেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।