প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট ভ্রমণ (পঞ্চম পর্ব)।১০% সাইফক্স।
পানসী রেস্টুরেন্টে ভোজন পর্ব
আমরা প্রথমদিনের ঘোরাফেরা শেষে রুমে রেস্ট নিচ্ছিলাম। এর ভেতরে রেস্টহাউজের কেয়ারটেকার এসে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করল যে আমরা রাতে খাব কিনা। যদি আমরা রাতে রেস্টহাউসে খাই তাহলে তারা সেই হিসেবে ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আমরা চিন্তা করলাম যেহেতু আমরা সিলেটে ঘুরতে এসেছি। আর আমাদের হাতেও খুব একটা সময় নেই। তাই আজকে রাত্রে বাইরে খাওয়ার পরিকল্পনা করলাম।
কারণ আগামীকাল রাতে আমাদের এক জায়গায় দাওয়াত আছে। আমরা চিন্তা করলাম যেহেতু বাইরের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার খুব একটা সুযোগ আমরা পাবোনা। তাই ঠিক করলাম আজকের রাতে সিলেটের কোন একটা জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া-দাওয়া করি। আমাদের আগে থেকেই ইউটিউব থেকে সিলেটের কয়েকটি রেস্টুরেন্ট সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা ছিলো। সিলেটে লোকজনের কাছে সবচাইতে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট গুলির মধ্যেএকটি হচ্ছে পানসী রেস্টুরেন্ট। আমরা চিন্তা ভাবনা করে ঠিক করলাম আজ রাতের খাওয়াটা এই রেস্টুরেন্টেই করবো।
আমরা যেহেতু আমরা আমাদের গাড়ির ড্রাইভারকে ছেড়ে দিয়েছি আজকের মত। তাই রেস্টহাউজের কেয়ারটেকারকে বললাম সেখানে কিভাবে যাওয়া যায়? সে বলল রেস্টুরেন্ট এখান থেকে খুব একটা দূরে নয়। আপনারা সিএনজি নিয়ে চলে যেতে পারবেন। কেয়ারটেকার আমাদেরকে জানালো সে সিএনজি ঠিক করে রাখবে। আমাদের কোন সমস্যা হবে না। আমরা তাকে জানালাম আমরা সাড়ে নটার দিকে বাইরে যাবো। সেই হিসাবে যেন সে সিএনজি ঠিক করে।
তারপর সময়মতো আমরা তৈরী হয়ে বাইরে আসলাম। বাইরে এসে দেখি সিএনজি দাঁড়িয়ে আছে। পরে আমরা দুই সিএনজিতে করে পানসী রেস্টুরেন্টে পৌঁছলাম। যেহেতু রেস্টুরেন্টটি আমাদের কাছেই ছিলো।তাই আমাদের সেখানে পৌছতে খুব একটা সময় লাগলো না। কিন্তু সেখানে পৌছে আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি কখনো কোন রেস্টুরেন্টে একসাথে এত লোককে খেতে দেখিনি।
রেস্টুরেন্টের সামনের খোলা জায়গায় তারা তাঁবু টানিয়ে সেখানে অনেক চেয়ার-টেবিল পেতে রেখেছে। সেই খোলা জায়গায় বসে অনেক লোকজন খাওয়া-দাওয়া করছে। আমরা সেখানে না বসে চলে গেলাম রেস্টুরেন্টের দোতলায়। যেখানে একটু আরামে বসে খাওয়া যাবে। সেখানকার বসার ব্যবস্থাটা একটু ভালো।
আমরা রেস্টুরেন্টে ভেতরে বসে মেনু দেখে খাবার অর্ডার করলাম। আমরা সবাই একটু চিন্তায় ছিলাম যে এখানকার খাবার কেমন হবে। কিন্তু যখন আমরা খাওয়া শুরু করলাম তখন আমাদের ধারণা পুরোপুরি পাল্টে গেলো। সবগুলো খাবারই অত্যন্ত সুস্বাদু ছিল। আমরা অর্ডার করেছিলাম একটা ভর্তা প্লাটার, চিকেন ঝাল ফ্রাই, শুটকি ভুনা, চিকেন বিরিয়ানি, সাতকরা দিয়ে মাংসের একটি আইটেম আর ভাত।
আমরা ছয় জন লোক ছিলাম। তার ভেতর তিনজন বিরিয়ানি খেয়েছিলো আর বাকি তিনজন খেয়েছিলাম ভাত। প্রত্যেকটা খাবারই আমাদের কাছে অনেক মজা লেগেছিল। আমরা সবাই বেশ তৃপ্তি করে খেয়ে ছিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষে আমরা বিল পরিশোধ করতে গিয়ে দেখি বিল এসেছে মাত্র ১১০০ টাকা। বিল দেখে আমরা খুবই অবাক হয়েছি। এখানকার খাবারের স্বাদ যেমন ভালো তেমনি দামও তুলনামূলক অনেক কম।
সেখান থেকে বিল মিটিয়ে আমরা বাইরে চলে এলাম। রেস্টুরেন্টের ঠিক পাশেই ছিল একটি পানের দোকান। বাঙালির আবার ভুরিভোজের পরে পান না হলে চলে না।যদিও আমি পান খাইনা। কিন্তু আমার আপু দুলাভাই এবং ভাগ্নে পান খেলো নানা রকম মসলা যোগে। তারপর আমরা আমাদের রুমে ফিরে এলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে এই ভ্রমণের ষষ্ঠ পর্ব নিয়ে।
সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আসলেই ঠিক বলেছেন ভাই, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট। সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো আমাদের মন কেড়ে নেয়।আর সেখানে অনেক ভালো ভালো খাবার পাওয়া যায়। আপনি যদি বিভিন্ন হোটেল ঘুরে দেখেন একেক হোটেলের খাবার একেক রকম আপনার কাছে মনে হবে। ধন্যবাদ ভাই সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই থাকবে আপনার জন্য।
আমরা বাইরে খাওয়ার খুব একটা সুযোগ পাইনি। অন্য কোন রেস্টুরেন্টে আর খাওয়া হয়নি। তবে ইচ্ছা ছিল আরো কিছু রেস্টুরেন্টের খাবার চেখে দেখার।
এই রেস্তোরা দেখলে যে কেও প্রথমে ভাববে এটি কোনো বিয়ে বাড়ি,এতোটাই মানুষ থাকে।আমরাও আপনার মতোই উপরে উঠে গিয়েছিলাম আরাম করে খেতে।আর খাবার গুলোও আসলেই জাস্ট অসাধারণ। যে পানের দোকানের ছবি দিয়েছেন এখান থেকেও পান কিনেছিলাম,যদিও আমি খাইনি।
আসলেও এদের খাবারের স্বাদ অনন্য।
বাংলাদেশ কত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে তা ভ্রমণ না করলে ঠিক বোঝা যায় না। আপনার ভ্রমণ মূলক পোস্ট গুলো দেখলে সত্যিই খুব ভালো লাগে। সরাসরি যেতে না পারলেও অভিজ্ঞতা গুলো জানলে অনেক ভালো লাগে। সিলেট জার্নির মুহূর্তগুলো বেশ চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জার্নি শুভ হোক এই কামনা করি।
সিলেট ভ্রমনে শুধু একটিই সমস্যা। সেটি হচ্ছে পর্যটন স্পটগুলোতে যাওয়ার ব্যবস্থা গুলি খুব একটা ভালো না।