ছুটির দিনের ঘোরাফেরা (শেষ পর্ব)
সেদিন জিন্দা পার্ক ভ্রমণ শেষে আমরা চিন্তা করছিলাম যে এখন সেই স্টার কাবাব খেতে যাবো। যদিও আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকে স্টার কাবাব এর দূরত্ব অনেক। এর ভিতরপ্রায় দুপুর হয়ে গিয়েছে। পেটের ভিতর ছুঁচোর নাচন টের পাচ্ছি। মনে হচ্ছিলো এই পার্কের রেস্টুরেন্ট থেকেই খাওয়া-দাওয়া সেরে নেই। কিন্তু ভাগ্নের কারণে আর সেটা পারিনি। যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমরা রওনা দিলাম স্টার কাবাবের উদ্দেশ্যে। অবশ্য গাড়িতে ওঠার আগে আপু একজন ফল ওয়ালার কাছ থেকে বিভিন্ন রকম ফলের ভর্তা কিনে এনেছিল। ঢাকায় আমি এই ধরনের ভর্তা করতে দেখেছি। বিভিন্ন রকমের ফল একসাথে হামান দিস্তায় পিষে এক ধরনের আচারের মতো তৈরি করা হয়। খেতে বেশ মজা লাগে।
আমি এর আগে স্টার কাবাব এর ধানমন্ডি শাখা থেকে খেয়েছি। কিন্তু আজ আমাদের লক্ষ্য ছিল তার বনানী শাখায় যাওয়ার। সেখানে পৌঁছাতে আমাদের প্রায় ঘন্টাখানেক লাগলো। আমি চিন্তা করেছিলাম শুক্রবার দুপুর বেলা খুব একটা ভিড় হবে না। কিন্তু দোতলায় বসতে গিয়ে দেখলাম সেখানে লোকে লোকারণ্য। শুক্রবার দুপুরে যে এত মানুষ বাইরে খেতে আসে সেটা আমার মাথায় ছিল না।
যাইহোক আমরা সেখানে বসে প্রথমে মেনু দেখতে লাগলাম। যদিও কি খাব সেটা মোটামুটি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। মেনু দেখার পর আমরা অর্ডার করলাম মাটন কাচ্চি সাথে মাটন লেগ রোস্ট আরা বোরহানি চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা জানালো তাদের কাছে বোরহানি নেই। যার ফলে আমরা ড্রিঙ্কস হিসাবে মাউন্টেন ডিউ নিয়েছিলাম। স্টারের খাবার নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ওদের মাটন কাচ্চি যেটা চিনিগুড়া চাল দিয়ে করে সেটা আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার। বরাবরের মতো এবারও আমি প্রচন্ড ক্ষুধা লাগার কারণে প্রথম দিকে ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম।
তবে আমি এর আগে যখন মাটন লেগ রোস্ট খেয়েছিলাম আমার কাছে তখন ভালো লাগেনি। কিন্তু সেদিন খেতে বসে আপু তিনটি মাটন লেগ রোস্টের অর্ডার করলো। আমি খেতে চাইনি তারপরও চিন্তা করলাম একটু খেয়ে দেখি। গরম গরম মুখে দিয়েই আমি অবাক হয়ে গেলাম। মাংসটা এত জুসি এবং নরম হয়েছিল যেন মুখের ভিতর গলে যাচ্ছে। এমনিতেই ওদের মাটন কাচ্চির পরিমাণ যথেষ্ট। তার সাথে আবার যোগ হয়েছে মাটন লেগ রোস্ট। একদম পেট পুরে খেলাম। খাওয়ার পর মনে হচ্ছিল পেটে আর এক ফোটাও জায়গা নেই।
এদিকে প্রায় নামাজের সময় হয়ে গিয়েছে। আমি খাওয়া শেষ করেই দৌড়ে গেলাম নামাজ পড়তে। নামাজ শেষ করে এসে দেখি সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ তখনও ড্রাইভার ফেরেনি নামাজ থেকে। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা বিভিন্ন রকম গল্প করতে থাকলাম। আমরা যেই বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম খেয়াল করে দেখলাম সেই বাড়িটা অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মত লাগছে। বাড়িটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে বাড়ির মূল মালিক এখানে থাকে না। সেই বাড়ির ভেতর আমরা কবুতর মুরগি এগুলি দেখতে পেলাম। বনানীর মত এমন একটি জায়গায় কেউ বাড়ি এমন অবস্থায় ফেলে রাখবে না। আমরা এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছিলাম। কিছুক্ষণ পর ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে উপস্থিত হলে আমরা সবাই গাড়িতে উঠে বসলাম বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো নতুন লেখা নিয়ে।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | বনানী |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


স্টার কাবাব তাহলে একটা রেস্টুরেন্টের নাম। শুক্রবারে ছুটির দিনে একটু লোক বেশিই হয় সব জায়গা। মাটন লেগ রোস্টটা দেখে আমারও মনে হচ্ছে বেশ সুস্বাদু ছিল।
ছুটির দিনের ঘোরাফেরা করতে কার না ভালো লাগে। চমৎকার সময়ে কাটিয়েছেন ভাইয়া। মটন কাচ্চি আমার কাছে খেতে ভীষণ সুস্বাদু লাগে। রেস্টুরেন্টে খাবার গুলো কিন্তু লোভনীয় ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে
আমি স্টারের ধানমন্ডি তে খেয়েছিলাম।আমার কাছে অত টা ভাল লাগে নাই।তবে ওদের বোরহানী টা জোস বলা যায়। আমি বাড়ির জন্যও আলাদা বোতল কিনে এনেছিলাম।তবে এবার বানানী শাখায় মাটন লেগ রোস্ট অবশ্যই ট্রাই করব।আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য
ছুটির দিনে স্বজনদের সাথে এত সুন্দর একটি জায়গা পরিদর্শন চমৎকার ইনজয় করেছেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার ছুটির দিনের ঘোরাফেরা শেষ পর্বটি। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর করেছেন। সাথে প্রতিটি বস্তু দর্শনের স্টেপ মনমুগ্ধকর বর্ণনা আরো আকর্ষণীয় করেছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
বিভিন্ন ধরনের ফলের ভর্তার কথা আমি অনেক শুনেছি বিশেষ করে এই ভর্তাটা খেতে ভীষণ দারুন। পেটে ক্ষুধা নিয়ে এক ঘন্টা গাড়িতে করে গিয়ে তারপর স্টার কাবাবে গিয়ে খেয়েছেন। বেশ ভালোই লাগলো। মাটান এর লেগ পিস টা দেখেই মনে হচ্ছে বেশ সুস্বাদু হয়েছে। আপনার কাছেও তো বেশ ভালো লেগেছে। এরকম ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া-দাওয়ার মুহূর্ত অনেক আনন্দ লাগে।
ভাইয়া খুবই তৃপ্তি সহকারে মাটন লেগ রোস্ট খেয়েছেন এবার। সত্যি বলতে ভাইয়া মাটন লেগ রোস্ট গুলো মুখে দেওয়ার সাথে সাথে যদি নরম লাগে তাহলে বোঝা যায় সেটি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। আর বনানীর মত জায়গায় পরিত্যক্ত বাড়ির কথা শুনে কিছুটা হলেও বিস্মিত হয়ে গেলাম ভাইয়া।