জেনারেল রাইটিং || স্মৃতিচারণ : বিড়াল হারিয়ে যাওয়ার গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই ভালো আছো। আমিও ভালো আছি।

cat-8971203_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

বন্ধুরা, আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে একটি স্মৃতিচারণ শেয়ার করবো। আসলে অনেক দিন পরেই তোমাদের সাথে কোন স্মৃতিচারণ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আজ থেকে অনেক বছর আগের কথা তখন আমার বয়স ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে হবে। আর তখন আমি গ্রামে থাকতাম। আমাদের বাড়ি থেকে আমার মামাদের বাড়ি দূরত্ব খুব বেশি দূরে না। পায়ে হেঁটে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে যেতে। যাইহোক, মামার বাড়ি কাছে হওয়ার কারণে যখনই মন চাইতো তখনই চলে যেতাম মামাদের বাড়িতে।মামাদের বাড়িতে দাদু বিড়াল পুষতে খুব ভালবাসতেন। প্রায় এক ডজন এর মত বিড়াল ছিল মামা বাড়িতে। দাদু প্রতিদিনই বিড়াল গুলোর সেবা যত্ন করতো খেতে দিতো।

আমি ছোটবেলায় দেখেছি দাদু যে থালায় ভাত নিয়ে খাচ্ছে বিড়াল গুলোও সেই থালা থেকে খেয়ে নিতো। এই বিষয়গুলো আমার মামার কাছে খুব বেশি একটা ভালো লাগতো না। আর আমিও যখন যেতাম আমার এগুলো একটু ভয় লাগতো তবে বিড়াল গুলো যখন নরমাল অবস্থায় থাকতো আমি বেশ আদর করে দিতাম। আর এই এক ডজন বিড়াল গুলোর মধ্যে আমার প্রিয় বিড়াল ছিল দুইটি। যাদেরকে আমি ডাক দেওয়ার সাথেই চলে আসতো তারপরে আমার কোলে বসে থাকতো আদর করে দিতাম। অন্যান্য লোকের কাছে পোষ না মানলেও এই দুটো বিড়াল ছিল আমার কাছে অনেক পছন্দের। যাইহোক, দাদু যখন বিড়াল গুলোর সাথে খাওয়া-দাওয়া করতো আদর্শ সেবা যত্ন করতো আমার মামার কাছে সেটা খুব বেশি ভালো লাগতো না। কারণ এত পরিমাণে বিড়াল যদি ঘরের ভিতরে ঘুরে বেড়ায় তাহলে তার বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতে অসুবিধা হয়ে যেতো।

এ কারণে মামা একবার পরিকল্পনা করে সব বিড়াল গুলোকে মামার বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে খাল পার করে অন্য একটা এলাকায় দিয়ে আসে। এই ব্যাপারটা আমি প্রথমে জানতে পারিনি। যেদিন মামা এই কাজটা করেছিল সকালে আমি সেদিন দুপুরে মামাবাড়িতে গেছিলাম। যাওয়ার পরে দেখি তাদের মন খারাপ এবং মামা ও দাদুর ভিতরে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। তারপর আমি গিয়ে দেখি বাড়িতে কোন বিড়ালই নেই। তখন কারণটা জিজ্ঞেস করলে জানতে পারি মামা সব বিড়াল নিয়ে অন্য একটি এলাকায় রেখে এসেছে। এই কারণটা জানার পরে আমারও বেশ খারাপ লাগে। কারণ এই বিড়াল গুলোর মধ্যে আমার দুটি প্রিয় বিড়াল ছিল। আমি অনেকটা কান্নাকাটি শুরু করে দেই। মামাতো বেশ বিপদের মধ্যে পড়ে যায়। একদিকে দাদু বকা দিচ্ছে আরেকদিকে আমি কান্নাকাটি করছি। আমার বিড়াল হারিয়ে গেছে বলে আমি সেই চিৎকার শুরু করে দেই।

তারপর মামা খুঁজতে শুরু করে সেই এলাকায় যেখানে বিড়াল ছেড়ে দিয়ে এসেছিল। আমিও মামার সাথে সাথে যাই দেখি কয়েকটি বিড়াল যেখানে রেখে দিয়েছিল তার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে বেড়াচ্ছে। আসলে নতুন এলাকায় গিয়ে হয়তো তারা কিছু চিনতে পারছিল না। সেই কারণে তারা এভাবে ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছিল। সেগুলো দেখে আমরা সেখান থেকে পাঁচটি বিড়াল খুঁজে পাই। এই পাঁচটি বিড়ালের মধ্যে আমার প্রিয় বিড়ালটিও ছিল। তবে অন্য আরেকটি যে প্রিয় বিড়াল ছিল সেটিকে আমরা সেটিকে খুঁজে পাইনি। সেইদিন সেই এলাকা খোঁজাখুঁজি করে বাড়ি চলে আসি। তবে এতে আমার মন শান্ত হয় না। কারন আমার তো প্রিয় বিড়াল দুটি ছিল একটি পেলে কি করে হবে। পরের দিন আমরা খোঁজ খবর লাগিয়ে রাখি যে এই বিড়াল গুলো খুঁজে পেলে আমাদের খবর দিতে। যাইহোক, পরেরদিন খবর আসে অন্য বিড়াল গুলোরও খোঁজ পাওয়া গেছে।

পরবর্তীতে গিয়ে সেই বিড়াল গুলোকে ধরে নিয়ে আসি। অবশেষে যে বিড়াল গুলোকে মামা পার করে দিয়েছিল আমরা খুঁজে পাই।আর যেহেতু আমার হারিয়ে যাওয়া দুটি বিড়ালই বাড়িতে চলে আসে। সে কারণে আমিও অনেক খুশি হই। মামার এই কাজের জন্য আমি রাগ করে মামার সাথে অনেকদিন কথাও বলি নি। অন্যদিকে দাদুও বেশ খানিকটা রাগ করে ছিলো মামার উপর। অবশেষে কিছুদিন যাওয়ার পরে ঠিক হয়। যাইহোক, হঠাৎ করে আজ এই বিড়ালের গল্পটা মনে পড়ে গেল। আমাদের বাড়িতে দুইটি বিড়াল থেকে। আসলে এই বিড়াল গুলো আমাদের পোষা বিড়াল না পাড়ার বিড়াল। আমাদের এখানে খেতে এসেছে তাদেরকে যখন খেতে দিচ্ছিলাম আমার এই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম।


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আজকের এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Cztq4BXWMFDxHzEZ2QSjxVFnsLBz27bskZMejC9cirzQ85MEJGtsm5hWaJuVngdv1B8bhQpR5JgyziewifDDtchB1uutEvCix5Baq3Kow4...HrFndeckgAdeTczZ2yUT7qZT9QggvS7DoC3cSHRK8Lzudd6HuVHjDihDS6QPqWcngTpkHr1F52teScwfJVJxW9smoQ3vTKGFmo3gcczEtpXXewE2NrM7wpofj.webp

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

আসলে বাড়িতে পোষা প্রাণীর প্রতি অন্যরকম মায়া সৃষ্টি হয়। যেহেতু অন্য এলাকায় ছেড়ে দেওয়া আসা হয়েছিল। আবার আপনারা সেখানে খোঁজাখুঁজি করে ফিরিয়ে এনেছেন। যাহোক সুন্দর একটা বিষয়ের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, আপনার এই সুন্দর মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

ও দাদা,কি স্মৃতি লিখলে!একদম খাপেক্ষাপ মিলে গেছে কিছুটা, এই 5 দিন আমাদের সন্তু হারিয়ে গিয়েছিল।5 দিন আমার পরিবারের খাওয়া-ঘুম উঠে গিয়েছিল মানসিক চিন্তায়।তারপর লাগাতার বাবা-দাদার খোঁজাখুঁজি, অন্যদের সঙ্গে বলা।অপরিচিত মানুষের ফোন নাম্বার নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি---আজ 5 দিন পর আমাদের সন্তুকে খুঁজে পেয়ে ভালো লাগছে।তোমার অনুভূতিটাও হয়তো একইরকম ছিল জেনে কিছুটা ভালো লাগছে।ধন্যবাদ দাদা।

 2 months ago 

বাড়িতে বিড়াল থাকলে এরকম ধরনের স্মৃতি মিলে যায় বোন।

 2 months ago 

আসলে শখের জিনিস হারিয়ে গেলে অনেক কষ্ট লাগে। আপনার মামা বিড়ালগুলো অন্য এলাকায় ছেড়ে দিয়েছে বলে আপনার দাদু এবং আপনি তো তাহলে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন। যাইহোক শেষ পর্যন্ত বিড়ালগুলো খুঁজে পেয়েছিলেন,এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, আপনার এই সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.20
JST 0.035
BTC 92456.60
ETH 3136.76
USDT 1.00
SBD 3.21