ক্রিয়েটিভ রাইটিং || শিমুর বিয়ে (পর্ব -০১)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি। |
---|
আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করবো । গল্পটির নাম "শিমুর বিয়ে"। গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।
শিমুর জন্ম অত্যন্ত গরিব এক পরিবারে। শিমুর জন্মের এক বছর পরেই তার মা মারা যায় স্ট্রোক করে। শিমু যেহেতু তখন অত্যন্ত ছোট ছিল তাই তাকে ছোটবেলা থেকে মানুষ করার জন্য তার বাবা পুনরায় বিয়ে করে। প্রথম প্রথম শিমুর সৎ মা শিমুকে ঠিকঠাক মতো দেখলেও আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকে ভালো করে আর দেখেনা। আসলে শিমুর সৎ মায়ের কোন সন্তান ছিল না। নিজের কোন সন্তান না থাকায় সে শিমুকেও ভালো চোখে দেখতে পারত না। শিমুর বর্তমান বয়স ১৫ বছর। সংসারে অভাবের কারণে এখন থেকেই তার জন্য পাত্র দেখা শুরু হয়ে গেছে। যদিও বিয়ের ব্যাপারে তার ইচ্ছার কোন মূল্য নেই এখানে।
শিমুর বাবার ইচ্ছা, ছেলের বয়স একটু বেশি হলেও শিমুকে দেখে রাখতে পারবে এরকম পরিবার হলেই তাকে বিয়ে দিয়ে দেবে। শিমু দেখতে অনেক মিষ্টি। তার হাসিতেই সবাই মুগ্ধ হয়ে যায়। অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সবাইকে আনন্দে রাখার চেষ্টা করে। তবে যেদিন থেকে তার বিয়ের কথা শুরু হয়েছে, তার কেমন জানি মন খারাপ। ছোটবেলা থেকে এমনিতেই পড়াশোনা করার সুযোগ পায়নি গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করার জন্য। তার সৎ মায়ের সাথে সংসার সামলাতে সামলাতেই সে বড় হয়েছে
এই গ্রামে শিমুর একজনই ভালো বান্ধবী রয়েছে, তার নাম দীপা। সুখ দুঃখে তার কাছেই সে যায় এবং তার কাছেই সব সময় সবকিছু শেয়ার করে। আর এই বয়সে বিয়ে বা লাইফ সম্পর্কে পুরোপুরি শিমুর বোঝারও বয়স হয়নি। তাই এই বয়সে সে বিয়ে করতে চায় না। এই গ্রামে এক বিত্তশালী ব্যক্তির নাম সাগর। তার বয়স এখন ৪৬ বছর। গত বছরই তার বউ মারা গেছে কলেরায়। তাই সে বিয়ের জন্য পাত্রী পাত্রী খুঁজে বেড়াচ্ছিল ।
শিমুর বাবা যখন শিমুর জন্য পাত্র দেখছিল তখন এই সাগর সব ব্যাপার গুলো জানতে পারে। তারপর শিমুদের বাড়িতে শিমুর সাথে তার বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠায় এবং শিমুর বাবাকে দশ বিঘা সম্পত্তি আর ১ লাখ টাকা নগদ দেওয়ার বিনিময়ে বিয়ে করতে চায়। উল্টো যৌতুক দেওয়া আর কি। অন্য সময় দেখা যায় মেয়ে পক্ষ ছেলে পক্ষকে যৌতুক দেয়। কিন্তু এখানে ছেলে পক্ষই মেয়ে পক্ষকে দিচ্ছিল। আসলে অভাবের কারণে তার বাবার মনেও লোভের জন্ম নেয় । তাই সে তার মেয়েকে এমন একটা মধ্যবয়স্ক লোকের সাথে বিয়ে দিতে মনে মনে অনেকটা রাজি হয়ে যায়।
শিমু এই বিয়েতে মোটেও রাজি ছিল না। কিন্তু বাবার কথার চাপে মন খুলে সে কিছু বলতেও পারেনা। এই গ্রামের সমবয়সী এক ছেলের সাথে তার একটা ভালোবাসার সম্পর্কও রয়েছে। বাড়ির লোকজন যদিও এই বিষয়ে কোন কিছু জানে না। আর সেও কোনদিন কাউকে কিছু বলেনি। ছেলেটির নাম রাজ । তার বয়সও খুব বেশি না, এইবার ১৮ হয়েছে তার বয়স। শিমুর বান্ধবী দীপা যদিও রাজের বিষয় জানতো। তাই শিমুর জন্য যখন বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছিলো, শিমু দীপার কাছে এই বিষয়ে পরামর্শ নিতে যায়।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোটবেলায় মা মারা গেলে সেইসব বাচ্চাদের কষ্টের আর শেষ থাকেনা। যদিও শিমুর সৎ মায়ের বাচ্চা ছিল না তারপরও শিমু তার কাছ থেকে ভালোবাসা পায়নি। এখন আবার তার বাবা এত বয়স্ক লোকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে লোভে পড়ে। এখন শিমু কি করবে তার ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে পালিয়ে যাবে কিনা? অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের। ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।
আমার শেয়ার করা এই গল্পটি পড়ে আপনার যে ভালো লেগেছে, সেটা জেনে অনেক খুশি হলাম । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, আপনার এই মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আসলে গরিব হলে বেশিরভাগ মা বাবা মা ই এরকমটা করে থাকে। আর সৎ মা তো সব সময় সৎ ই থাকে, কখনো আপন হতে পারে না। তবে তার সৎ মায়ের যেহেতু কোনো ছেলে মেয়ে ছিল না, তিনি চাইলেই পারতেন নিজের সন্তানের মত করে শিমুকে মানুষ করতে। কিন্তু শিমুর তো দেখছি ৪৫ বছর বয়সের একজনের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে শেষ পর্যন্ত। সত্যি মানুষ লোভে পড়লে কতটা নিচে নামতে পারে এদেরকেই দেখলে বুঝা যায়। আবার দেখছি শিমুর আরেকটা ছেলের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এখন দেখা যাক কি হয়। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।
পরবর্তী পর্ব খুব তাড়াতাড়িই শেয়ার করবো আপু আপনাদের সাথে।
আসলে এমন অনেকে আছে যারা এরকম কাজগুলো করে থাকে। আর সৎ মা হলে তো আর কোন কথাই নেই৷ সে কখনোই অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো মনে করো না। যদি তার নিজের সন্তানের মতো মনে করত তাহলে কখনো এরকমটা করতো না৷ যেহেতু তার কোন ছেলে মেয়ে নেই তাই তিনি চাইলেই পারতেন সে শিমুকে নিজের সন্তানের মতো মানুষ করতে৷ তবে শেষ পর্যন্ত শিমুর এত বৃদ্ধ একজন মানুষের সাথে বিয়ে হয়ে গিয়েছে শুনে খুবই খারাপ লাগছে৷ আসলে মানুষ লোভে পড়ে কতটা নিচে নামতে পারে পারে এসব কিছু দেখলেই বোঝা যায়৷
লোভই তো সব সমস্যার কারণ ভাই। যাইহোক, পোস্টটি পড়ে আপনার এই মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
https://x.com/ronggin0/status/1808446664853565895?t=YVwA26BpOcAMERq4JLOmzw&s=19