ট্রাভেল || দার্জিলিং এর ধোত্রে ভ্রমন (পর্ব - ০৩)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি। |
---|
এর আগের পর্বে আমি তোমাদের সাথে "টোংলু" ভ্রমণ সম্পর্কে শেয়ার করেছিলাম। এই জায়গা ভ্রমণের দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার । যাই হোক, সেদিন এই জায়গা ভ্রমন করতে ট্রেকিং করে গেলেও, হোমস্টেতে ফেরার সময় আমরা গাড়িতে করেই আসি। ফেরার সময় আমরা একটা গাড়ি ভাড়া করেই আমাদের থাকার জায়গায় পৌঁছেছিলাম।
সেইদিন রাতে হোমস্টেতে থাকতে আমার বেশ ভালোই লেগেছিল। খাওয়া-দাওয়াও বেশ ভালই ছিল এই হোমস্টেতে। পরের দিন সকাল হতেই নতুন জায়গায় যাওয়ার প্ল্যান করা শুরু হয় আমাদের। তবে এবার ট্রেকিং এর মাধ্যমে নয়, গাড়িতে করেই যেতে হবে এরকম দূরের একটি জায়গা ঠিক করা হয়। জায়গাটির নাম ছিল "গোপাল ধারা টি স্টেট"। তবে সেখানে আমরা সকালের খাওয়া-দাওয়া শেষে করে তারপর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সকালবেলা আমাদেরকে তাড়াতাড়ি খাবারের আয়োজন করে দেয়, আমাদের হোমস্টের যারা দায়িত্বে ছিল তারা। আমি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে হোমস্টের চারপাশে বেশ ভালো করে ঘুরে দেখার চেষ্টা করি। হোমস্টের ছাদ থেকে পুরো জায়গাটাকে খুব ভালোভাবে দেখা যাচ্ছিল।
এখানে যে ঘরগুলো ছিল, সেগুলো কিন্তু আমাদের এখানকার থেকে কিছুটা আলাদা ছিল। তাছাড়া এখানের বিভিন্ন জায়গার ঘর গুলো দেখে আমার তো রীতিমতো ভয় লাগছিল। অনেক জায়গায় তো পাহাড়ের কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে, এরকম জায়গায় ঘর ছিল যা তোমরা ফটোগ্রাফিতেও আশা করি দেখতে পাবে। এখানে শীতকাল চলছিল, এরকমটা মনে হচ্ছিল এখানে গিয়ে কারণ চারিদিকে কুয়াশায় ঢাকা ছিল। এই জায়গা থেকে পাহাড়ের বিভিন্ন গাছপালাগুলো দেখতেও বেশ সুন্দর লাগছিল। এত সুন্দর অপরূপ দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। যারা দার্জিলিং ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছে তারা সাধারণত এরকম দৃশ্য সামনাসামনি দেখার সুযোগ পেয়েছে। আর এইবারে এই সৌভাগ্যটা আমার হয়েছিল আর কি।
যাইহোক, আমরা সকাল এগারোটার দিকে রওনা করি, "গোপাল ধারা টি স্টেট" এর উদ্দেশ্যে। এই জায়গাটি সম্পর্কে আমি আগে কখনো শুনিনি, তবে এইখানে আসার পরেই জানতে পেরেছিলাম। আমি আসলে অপ্রস্তুত অবস্থায় এই জায়গা ভ্রমণে গেছিলাম। অর্থাৎ আশেপাশে ঘোরার মত কোন জায়গা গুলো রয়েছে, সেটা সম্পর্কে আমি জেনে যাইনি। তাই সবকিছুই আমার কাছে নতুন লাগছিল। এই "টি" গার্ডেনের দৃশ্য তো সব থেকে বেশি মনোমুগ্ধকর ছিল। পাহাড়ের উপর এই "টি" গাছগুলো দেখতে জাস্ট অসাধারণ লাগছিল। "টি" গাছগুলো সাধারণত কাটিং করে রাখা হয়। এইজন্য আরও বেশি দেখতে ভালো লাগে। এর চারপাশ বাঁশ দিয়ে ঘেরা ছিল। তাই "টি" গার্ডেনের ভিতরে যাওয়ার কোন সুযোগই ছিল না। বাইরে থেকেই এর সৌন্দর্য আমাদেরকে উপভোগ করতে হচ্ছিল।
আমার অনেকটাই ইচ্ছে করছিল "টি" গার্ডেনের ভেতরে যাওয়ার। আমার যে বন্ধুরা সাথে ছিল তারাও ভিতরে যেতে চাইছিল। তবে কোনোভাবেই আমরা ভিতরে যাওয়ার সুযোগ পাইনি। অনেক সময় অনেক পর্যটক এর ভিতরে যাওয়ার সুযোগ পায়, তবে যারা এই "টি" গার্ডেন দেখাশুনার দায়িত্বে রয়েছে তাদের সাথে সেক্ষেত্রে যোগাযোগ করে নিতে হয়। আর যেহেতু আমাদের এই যোগাযোগটা ছিল না তাই এই গার্ডেনের ভিতরে প্রবেশ করার সুযোগটা আমরা আর পাইনি। এই "টি" গার্ডেনের আশেপাশে বেশ খাবারের দোকানও ছিল। আমরা সকালবেলা হোমস্টে থেকে খেয়ে গেলেও, এইখানে গিয়ে বন্ধুরা মিলে টুকটাক কিছু খাবার কিনে খেয়েছিলাম। এই জায়গা থেকে মোমো খেয়ে বেশ ভালো লেগেছিল। দার্জিলিংয়ের মোমো সম্পর্কে তোমরা হয়তো অনেকেই শুনেছো। আর এইখানে গিয়ে সেই অরজিনাল দার্জিলিংয়ের মোমো টেস্ট করার সুযোগ হয়েছিল। এর আশেপাশে শপিং করারও বেশ জায়গা ছিল।
যাইহোক, এই "টি" গার্ডেন ঘোরার সময় কিছু "টি" পাতা নিয়ে আসার ইচ্ছা হয় আমার। তবে ওই "টি" গার্ডেনের ভেতর থেকে সেটা আনার সুযোগ হয়নি, আশেপাশে সেসব "টি" গাছ দেখতে পেয়েছিলাম সেখান থেকে কিছু "টি" পাতা ছিঁড়ে এনেছিলাম আর কি। যাইহোক, এই "গোপাল ধারা টি গার্ডেন" ভ্রমণ করে আমার অত্যন্ত ভালো লেগেছিল। এই জায়গা ভ্রমণ করা শেষ করে আমরা অন্য একটা জায়গা ভ্রমণ এর উদ্দেশ্যে রওনা করি। সেই জায়গাটাও পুরোপুরি আনকমন একটা জায়গা ছিল যা পরবর্তী পর্বে তোমাদের সাথে শেয়ার করবো।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | ধোত্রে , দার্জিলিং, ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
https://x.com/ronggin0/status/1804640658055114970?t=ifEqy2GvitzERfCi__HSOQ&s=19
দার্জিলিং এর ধোত্রে বেশ ভালো ভ্রমণ করেছেন। জায়গা দেখতে অনেক ভালো লেগেছে। তবে টি পাতা ভিতর থেকে আনতে পারেনি তবে বাইরে থেকে ঠিক এনেছেন। আপনি দার্জিলিং এর ধোত্রে নিশ্চয় ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু, অনেক ভালো সময় কাটিয়েছিলাম এইখানে গিয়ে। যাইহোক, আপনার এই মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার ঘুরাঘুরি করার সবগুলো পর্ব আস্তে আস্তে দেখতে পাচ্ছি, আর পড়ার সুযোগ পাচ্ছি, এটা খুব ভালো লাগতেছে। আজকে দার্জিলিংয়ের ধোত্রে ভ্রমণ করার তিন নম্বর পর্ব শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো আমার কাছে। দ্বিতীয় নাম্বার পর্বটা আমি পড়েছি। আজকে তৃতীয় নাম্বার পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আপনি তো দেখছি আজকে ভিন্ন একটা জায়গায় গিয়েছিলেন ঘুরতে। গোপাল ধারা টি স্টেট জায়গাটা কিন্তু খুব দারুণ। যদিও গার্ডেন এর ভেতরে ঢুকতে পারেননি তবে বাইরে থেকে হলেও সৌন্দর্যটা উপভোগ করেছেন শুনে ভালো লাগলো। ভেতরে ঢুকতে পারলে নিশ্চয় আরো বেশি ভালো সময় অতিবাহিত করতে পারতেন। যাই হোক পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
হ্যাঁ আপু, "গোপাল ধারা টি" স্টেটের ভিতরে প্রবেশ করার সুযোগ হলে তো অবশ্যই আরো ভালো সময় অতিবাহিত করতে পারতাম। যাইহোক, আপনার এই মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে এর আগের পর্বেই বলেছিলাম জায়গাটা আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে। আমাকে আপনার কাছে নিয়ে যান ভাই, তাহলে আপনার সাথে জায়গাটা আবার ঘুরবো😜। আপনি একবার ঘুরেছেন তো কি হয়েছে আমার সাথে দ্বিতীয়বার ঘুরবেন 😁। যাইহোক এই ধরনের জায়গা গুলোতে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা কিন্তু অনেক আগ থেকেই রয়েছে। কখনো যদি পারি অবশ্যই ঘুরতে যাবো। এই পর্বে তো দেখছি আরেকটা জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত শেয়ার করেছেন। জায়গাটা কিন্তু আসলেই সুন্দর। এই গার্ডেন টা দেখে জাস্ট মুগ্ধ হলাম। পাহাড়ের উপর অনেক সুন্দর করে এটা তৈরি করা হয়েছে।
হেহেহে.. আচ্ছা ভাই চলে আসেন কোন সমস্যা নাই, আপনাকে নিয়েও ঘুরতে যাব।
ওয়াও দার্জিলিং জায়গাটি আসলেই অনেক সুন্দর।গার্ডেনের ভিতর ঢুকতে পারলে আরো বেশি উপভোগ করতে পারবেন। তারপরও কিছু চা পাতা নিয়েছিলেন।আসলেই খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন সেখানে আপনি।আগের পর্ব টির সাথে এই পর্বটিও অনেক সুন্দর ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আগের পর্বটির সাথে এই পর্বটিও যে আপনার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে, সেটা জেনে খুবই খুশি হলাম আপু। আপনার এই মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।