ছোটদের জন্য লেখা আমার একটি কবিতা "মা" (My Original Bengali Poetry "Mother")
সাধারণত আমি অন্ত্যমিল ব্যবহার করি না আমার কোনো কবিতায় । কিন্তু এই কবিতাটি ছোটদের জন্য লেখা, তাই অন্ত্যমিল ব্যবহার করেছি । কবিতাটির নাম "মা"
মা
একটা শালিক ভিজছে বসে বারান্দাটায়,
উঠছে কেঁপে দুলে দুলে জোলো হাওয়ায় ।
বৃষ্টির রেণু উড়ছে হাওয়ায় দিগ্বিদিক,
জলের তোড়ে যাচ্ছে ভেসে চারিদিক ।
গুরু গুরু ঘন ঘন মেঘ গর্জায়,
ছোট্ট খুকি ঘুম ভেঙে গোল বাধায় ।
বড় খোকা পড়াশোনায় দিয়ে ফাঁকি,
আঁকছে খাতায় নানারকম আঁকিবুঁকি ।
পেটুক হীরু বসে গেছে মুড়ি নিয়ে মাটিতেই,
এটা খাবো ওটা খাবো বায়নার তার অন্ত নেই ।
রাঁধতে রাঁধতে মা আজ হচ্ছে নাকাল,
নানানরকম বাটনা বেটে তার অবস্থা বেহাল ।
নানান রকম রান্না হয়েছে, খিচুড়ি ইলিশ আর কত কী,
বেগুন ভাজা, ডিমের ঝোল আর ভাজা ভেটকি ।
হীরু এসে একে একে ঢাকনা তুলে দেখে,
ঝাল, ঝোল, অম্বল সব চেটেপুটে চাখে ।
দুপুরবেলা, বাদলা দিনের অনেক বড়ো ভোজ,
সারি সারি পিঁড়ি পাতা শুধু হীরুর নেই খোঁজ ।
সবাই অবাক, পেটুক হীরু গেলো কোথায় আজ ?
এমন সময় হীরু হাজির সঙ্গে বন্ধু তাজ ।
তাজুল ওরফে তাজের জনম ভিন জাতের ঘরে,
ভীষণ গরিব পায় না খেতে দু'বেলা পেট ভরে ।
তারই সঙ্গে হীরুর অনেক দিনের দোস্তি
বললো হীরু "জানো মা, ওদের ভেঙে গেছে বস্তি" ।
"গোয়ালঘরে কাটছে দিন আধপেটা খেয়ে শেষে",
"একটা বেলা খাক না মা আমার সঙ্গে বসে" ।
তিনবেলা পূজা আহ্নিক করা বামুনের মেয়ে,
অপলক রইলো তাজের মুখের পানে চেয়ে ।
ইতস্তত করছে বাবা, ভিন জাতের ছেলে,
গৃহদেবতা যদি নারাজ হন তাকে ঠাঁই দিলে !
নিঃশব্দে মা এসে আর একটি পিঁড়ি হাতে,
বসতে দিলেন তাজুলকে হীরুর পাশে খেতে ।
সবাই অবাক, সবাই ভাবে ব্যাপারটা হল কী !
হীরুর মায়ের এই পাপটা কাটানের উপায় কি ?
হীরু ভাবে মা তার হলো সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণা,
"হীরুর সাথে তাজের তফাৎ" পায়না খুঁজে মা ।
N.B. The above art was created by me
মায়েরা এমনই হয়, সন্তানের বন্ধুদেরকেও আপন করে নেয়। অনেক সুন্দর ছন্দের সংমিশ্রণ ভাই। আরো লিখুন 👏💕
আপনারা প্রশংসা করলে তো লিখতেই হয় । তবে আমার নিজের মনে হয় আমি কবিতা লিখতে ঠিক জানি না :)
😀😁😆
দাদা আপনি একজন আশ্চর্য মানুষ। একজন প্রোগ্রামার যিনি আবার কবিতাও লেখেন। ভাবাটা খুবই দুরূহ। আমিতো চিন্তাই করতে পারি না। কবিতাটা অনেক সুন্দর হয়েছে।
প্রোগ্রামিং হলো রসকষহীন একটা বিষয় , যেটা আমি মোটেও লাইক করি না, শুধু জীবিকার খাতিরে প্রোগ্রামিং করি । আর এই সব সৃষ্টিশীল কাজেই নিজেকে পরিপূর্ণভাবে খুঁজে পাই । ধন্যবাদ ভাই ।
অসাধারণ এটা না বলে উপায় নেই, বেশ চমৎকার লিখেছেন দাদা। তবে ড্রয়িং কিন্তু আপনি বরাবরই বেশ ভালো করেন।
অনেক খুশি হলুম শুনে, ড্রয়িং বলুন , sculpting বলুন, ফোটোগ্রাফি বলুন, ক্রিয়েটিভ লেখালেখি বলুন সবই হলো নিতান্ত শখের বশে :)
মা" নামটার মধ্যে পৃথিবীর সকল সুখ লুকিয়ে আছে। অনেক সুন্দর হয়েছে দাদা।
সুন্দর কমেন্টটি করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই :)
ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর কবিতা লিখেছেন।
থ্যাংক ইউ ম্যা'ম :)
আমার দেখা একজন বেস্ট মাল্টি ট্যালেন্টেড ব্যক্তি আপনি। খুব ইন্সপায়ারেশন পাই আপনার পোস্ট গুলো দেখে। কবিতাটি দারুন হয়েছে 💝
হা হা , কি যে বলেন ! ড্রয়িং বলুন , sculpting বলুন, ফোটোগ্রাফি বলুন, ক্রিয়েটিভ লেখালেখি বলুন সবই হলো নিতান্ত শখের বশে :)
অন্ত্যমিলের প্রতি বেশ ভালো নজর দিয়েছেন দেখা যাচ্ছে। শেষ দুই লাইন ছাড়া প্রতি জোড়াতে অন্ত্যমিল খুব ভালোভাবে তুলে ধরেছেন। সত্যি বলতে কবিতাটি অসাধারণ হয়েছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি ছড়া উপহার দেয়ার জন্য।
শেষ দু'লাইনেও অন্ত্যমিল ব্যবহার করা হয়েছে -
অন্নপূর্ণা
মা
ণা আর মা । ঠিক আছে
অন্ত্যমিল ণা এর সাথে যায় না এবং প বর্গীয় সব বর্ণগুলি । তাই পা , ফা , বা , ভা , যা , মা সবগুলি ঠিক আছে ।
এককথায় অসাধারন, চমৎকার, দারুণ কবিতা লিখেছেন দাদা।ধন্যবাদ।
তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ :)
কি বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছি না ,অনেক সুন্দর লিখেছেন , মা সবকিছুই পারে তার সন্তানের জন্য।
হ্যাঁ, সেই জন্যই বলে "মা হওয়া নয় মুখের কথা" -- ধন্যবাদ আপনাকে :D
দাদা কবিতাটা খুবই সুন্দর হয়েছে। কবিতায় বর্ষার বৃষ্টি মুখোর দিনের বর্ণনার মাঝে লুকিয়ে রয়েছে মায়ের ভালোবাসা এবং অসহায়ের প্রতি টান। কবিতাটা আমার খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ দাদা কবিতাটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
কবিতাটির সারমর্ম বুঝতে পেরেছেন, অনেক অনেক ধন্যবাদ :)
আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা।