ফোটোগ্রাফি পোস্ট : "বাংলাদেশের গ্রাম -০২"steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago


গতকাল বেশ সকাল সকাল ঘুমিয়ে ছিলাম । আজ তাই খুব ভোরে ঘুম ভেঙে গেলো । ঘুম থেকে উঠেই তনুজা বললো চলো গ্রামের কয়েক জায়গায় শুনেছি পুজো হচ্ছে, দেখে আসি পুজো প্যান্ডেল । এই গ্রামে মোট চার জায়গায় পুজো হয় । তার মধ্যে দুটি একদম কাছেই । তাই, সেখানে যাওয়াই ঠিক হলো । একটা টিশার্ট আর ট্রাউজার পরে রেডি হয়ে গেলুম । পায়ে হাওয়াই চপ্পল (নীল সাদা নয় কিন্তু আবার) ।

বাড়ি থেকে বেরিয়েই ইঁটের রাস্তা দিয়ে কিছু দূর গিয়ে একটা পুকুর দেখতে পেলাম । পুকুরে হাঁসের দল মনের সুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে । আর কি দেখলুম বলুন তো ? অনেকগুলো রাঙা শাপলা ফুল ফুটেছে দেখতে পেলুম । খুব উত্তেজিত হয়ে উঠলুম রাঙা শাপলা দেখে । শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল ।

শাপলার কয়েকটি ছবি তুলে আরেকটু এগিয়ে দেখি অনেকগুলো চায়ের দোকান । দারুন সরগরম একটা আড্ডাখানা । চায়ের দোকানগুলোর সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য অনেকগুলো বেঞ্চি পাতা রয়েছে দেখলুম । সেই সাথে তাস, দাবা আর ক্যারম খেলার ঢালাও ব্যবস্থা । ফ্রী ওয়াইফাই নেটের সুব্যবস্থাও রয়েছে এইসব চায়ের মজলিসে ।

এরপরে আমরা একটা পুজো প্যান্ডেলে ঢুকলাম । মন্দিরে দেখলাম প্রতিমা তখনো অসম্পূর্ণ । রঙ করা হয়নি । সেখান থেকে বেরিয়ে আবার হাঁটা শুরু হলো আমাদের । বেশ কিছুটা হেঁটে একটা ছোট্ট খালের ধারে এসে পৌঁছলাম । জায়গাটার নাম বেশ অদ্ভুত "ভূতের হাট" । এইখানে খালের পাড়ের মাঠে একটা বট গাছের তলে রয়েছে একটা ইঁটের তৈরী মন্দির । এটা চন্ডী মণ্ডপ । এখনকার প্রতিমায়ও রঙের কাজ অসম্পূর্ন রয়েছে দেখলাম । জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম আজকে রাতের মধ্যেই সব সারা হয়ে যাবে ।

ছবিটবি তুলে ফেরার পথে একটা জায়গায় দেখলাম এক বুড়ো চাচা তার ক্ষেতের আখ বিক্রি করছে । লক্ষী পুজোর আগে আখ খাওয়ার খুব একটা চল নেই এখানে । তাই ছোট আখ কয়েকটা এনেছে বিক্রির জন্য । তিনটে আখ কিনে বাড়ি রওনা দিলাম । শিশির বোস নামে আমাদের এক আত্মীয়ের ঘাড়ে তুলে দিলাম আখ তিনটে । তিনিই বাড়ি অব্দি পৌঁছে দিলেন । বাড়ি ফিরেই এক খানা আখের একটা টুকরো শেষ করলাম । খুব মিষ্টি না হলেও খেতে বেশ লাগলো ।


এই সেই জল টলটলে পুকুর যেখানে শাপলা ফুটেছে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ০৫ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


ডাল পালা মেলা প্রাচীন এক বট গাছ পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ০৫ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


হাঁসের দল চরে বেড়াচ্ছে পুকুরের জলে ঢেউ তুলে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ০৫ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


রাঙা শাপলা ফুটে রয়েছে পুকুরের জলে । হাওয়ার তালে তালে মৃদু কাঁপছে তারা ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ০৫ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


প্রথম চণ্ডীমণ্ডপের প্রতিমা । অনেক কাজই অসম্পূর্ণ এখনো অব্দি ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ১৫ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


প্রথম চণ্ডীমণ্ডপ থেকে বেরিয়ে দ্বিতীয় চণ্ডীমণ্ডপ যাওয়ার পথে দেখলাম রাস্তার এক ধরে অসংখ্য আকন্দ ফুলের গাছ ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ৩০ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


এটা একটা শিশু পাকুড় কাছ । ফল এসেছে গাছে । এই ফল পাখিদের খাদ্য ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ৪০ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


দ্বিতীয় চণ্ডীমণ্ডপের প্রতিমাতেও রং আর সাজসজ্জার কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে দেখলাম ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৭ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


বটগাছের তলায় টিনটিন আর তনুজা দাঁড়িয়ে হাওয়া খাচ্ছে ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৮ টা ০০ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।


চাচার আখের দোকানে আখ কিনছি ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : ভোর ৮ টা ২০ মিনিট
স্থান : খুলনা, বাংলাদেশ ।



ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  
 9 months ago 

দাদা বেশ ভালো লাগলো আজকে আপনার দ্বিতীয় পোস্টটি দেখে তো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। গ্রাম বাংলা যে প্রকৃতি আপনি তুলে ধরেছেন তা কিন্তু আমরা যারা ঢাকায় থাকি তারা সচরাচর দেখতে পাইনা। আমার কাছে আরও ভালো লেগেছে বৌদি এবং টিনটিন বাবুর উচ্ছাস। ভালো থাকবেন দাদা।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 9 months ago 

সকাল সকাল উঠে বেশ দারুণ একটা সফর দিয়েছেন তাহলে।গ্রামের প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখা যায় একদম সকাল সকাল।এই যে রাঙ্গা শাপলা ফুটে আছে,তা সকাল সকাল গিয়েছেন বলেই দেখেছেন।এমনিতে দুপুর গড়াতেই এগুলো নুইয়ে পড়ে।এছাড়া বিকেলেও কিন্তু হাটতে বেরোলে ভালোই উপভোগ করতে পারবেন।বৌদি আর টিনটিন দেখছি বটের তলে হাওয়া খাচ্ছে,আর আপনাকে খুঁজে পাচ্ছি না,হিহিহি।যাইহোক আখ কিনে সেই আত্মীয়ের ঘাড়ে দিয়ে বেঁচে গেলেন,নাহলে আপনিই বয়ে নিয়ে যেতে হতো।ফটোগ্রাফিগুলো দেখে খুব ভালো লাগলো দাদা।

 9 months ago 

আসলে দাদা প্রকৃতির সৌন্দর্য বুঝতে হলে খুব ভোরে বা খুব সকালে উঠলেই বোঝা যায়। প্রকৃতি কত সিমসাম এবং সুন্দর আর গ্রাম বাংলার কথা তো বাদই দিলাম ।গ্রাম মানেই আলাদা সৌন্দর্য এক প্রকৃতির মুগ্ধতা । আর তার সাথে আপনার ফটোগ্রাফি এবং আপনি কিছু প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং আপনার কিছু সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে দাদা ।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারলে খুব ভালো ফিল হয়।আর বাইরের প্রকৃতির সৌন্দর্য খুব সুন্দরভাবে অবলোকন করা যায়। ভোরে প্রকৃতি তার স্নিগ্ধতা কে ছড়িয়ে দেয়।আপনি ভোর বেলা উঠে ভালো ই ঘুরাঘুরি করলেন দাদা।শাপলার ফটোগ্রাফিটা কিন্তু সেই সুন্দর হয়েছে।এরপর পুকুরের টলটলে পানি এসব কিছুই অনুভূতিতে স্নিগ্ধতা এনে দেয়।সব ফটোগ্রাফি ই ভীষণ সুন্দর ছিল।আর আপনার বর্ননা পড়তে আরো বেশী ভালো লেগেছে। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল আমিও ওখানটাতেই আছি।এটাকেই মনে হয় বলা হয় পড়ার মধ্যে ডুবে যাওয়া।ধন্যবাদ দাদা ফটোগ্রাফির পাশাপাশি সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 9 months ago 

বাহ! দারুণ ফটোগ্রাফি করেছেন দাদা, প্রকৃতির প্রকৃত সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে গ্রামীণ পরিবেশে। গ্রামের পুকুরগুলো মুল আকর্ষণ কিন্তু এই শাপলা, বেশ দারুণ লাগে দেখতে। আখ এখন একটু কম মিষ্টি থাকবে তবুও খেতে কিন্তু দারুণ লাগে। গ্রামীণ পরিবেশ তাহলে ভালোই উপভোগ করছেন। ধন্যবাদ

 9 months ago 

বাংলাদেশের গ্রামীণ দৃশ্যের ফোটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো দাদা। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মন্ডপগুলো ঘুরে বেরিয়েছেন এটা বেশ ভালো ব্যাপার। আসার পথে যে, খাল পড়েছিলো সামনে সেই জায়গাটার নাম "ভুতের হাট"। আমার কাছে মনে হয় অনেক আগে এই জায়গায় এই হাটে ভূত বিক্রি হতো 😍 সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

আসলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে হলে সকালে ভোরেই ঘুম থেকে উঠতে হয়। গ্রাম বাংলার সৌন্দর্যগুলোই আলাদা যা সবাইকে মুগ্ধ করে। মনমুগ্ধকর কিছু শাপলা ফুল, গ্রাম বাংলার চাষ করা আখ, বটে বৃক্ষের নিচে টিনটিন বাবু ও তনুজা দিদি হাওয়া খাচ্ছে সব মিলিয়ে অসাধারণ ছিল ফটোগ্রাফি গুলো। অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর কিছু প্রাকৃতিক ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 9 months ago 

বাহ্! ফটোগ্রাফি গুলো দেখে তো মুগ্ধ হয়ে গেলাম দাদা। আসলে গ্রামীণ পরিবেশে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। রঙিন শাপলা ফুল আমার খুবই পছন্দ। সকাল সকাল গ্রামে ঘুরাঘুরি করার মজাই আলাদা। গ্রামে এককথায় দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন দাদা। যাইহোক এতো মনোমুগ্ধকর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

পায়ে হাওয়াই চপ্পল!

দাদা এটা কি জুতার কথা বললেন? গ্রামে এখন আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে। চায়ের দোকানেও এখন ওয়াইফাই আছে! একটা সময় সিডির মাধ্যমে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হতো। ভূতেড় বাড়ি হাটেঁর নামটি শুনে একটু অবাক হলাম।নিশ্চয় বটগাছে ভূত আছে 😁

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 56608.36
ETH 2976.28
USDT 1.00
SBD 2.15