"টিনটিন" ভালোবাসার অপর নাম
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
ছোট্টবেলায় আমি তখন ক্লাস থ্রীতে পড়ি । আমার দাদা একদিন স্কুল থেকে ফিরলো একটি ঝকঝকে মলাটের অদ্ভুত সুন্দর বই নিয়ে । বইটির নাম "রঙীন উৎসব", সত্যজিৎ রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় সহ নামকরা লেখকদের অদ্ভুত সুন্দর সব গল্প । বইটির অলংকরণও অসাধারণ । দারুন দারুন সব ছবি । বইটি পেয়ে আমি কিছুক্ষনের জন্য খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়লাম । ক্ষণকাল পরেই আবিষ্কার করলাম বইয়ের উপহার পেজে জ্বল জ্বল করছে আমার নাম । পুজোর উপহার । আমার দাদা কিনে এনেছে স্কুল ছুটির পর । আমার দাদা আমার থেকে অনেক বড় । আমি যখন ক্লাস থ্রী তে পড়ি দাদা তখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ।
আমার জীবনে ওই বইটাই ছিল প্রথম উপহার পাওয়া বই । তাই আমি যে কতটা খুশি হয়েছিলাম সেটা ভাষায় প্রকাশ করা ইম্পসিবল । যাই হোক, বইটি নিয়ে আমি বারে বারে তার মিষ্টি গন্ধটা শুঁকতাম বুক ভরে । রাতে ঘুমোতে যেতাম বইটা শিয়রের কাছে নিয়ে । তবে তখনো কিন্তু আমি বইটির কোনো গল্প পড়া শুরু করিনি । দুই দিন পরে রাতে খাওয়ার পরে পড়তে বসলাম । আমার একটি অদ্ভুত অভ্যাস ছিলো এবং এখনো আছে । আমি কোনো বই একেবারে প্রথম থেকে পড়া শুরু করি, মাঝখান থেকে নয় । প্রথম থেকে শুরু করে শেষ অব্দি । বেছে বেছে পড়ার অভ্যাসও আমার নেই । তাই, শুরু করলাম পড়া একেবারে প্রথম থেকেই । প্রথমেই দেখতে পেলাম টিভির পর্দায় দেখা আমার চিরপরিচিত কার্টুনের মত কিছু ছবি । কার্টুন আমি খুবই লাইক করি । কিন্তু, সে তো টিভির পর্দায় । বইয়ের পৃষ্ঠায়ও যে কার্টুন দেখা যায়, পড়া যায় সে সম্পর্কে আমার আগে থেকে কোনো ধারণাই ছিল না ।
অদ্ভুত একটা উত্তেজনা টের পেলাম বালক বয়সের মনের মধ্যে । এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করে ফেললাম কার্টুন গল্পটি । নামটি আমার এখনো মনে আছে, কোনোদিনও ভুলবো না । ওটাই ছিলো আমার লাইফে পড়া প্রথম কমিক্স স্টোরি । আমি অবশ্য তখনো জানতাম না যে ও গুলো কে কমিক্স বলে । আমার বাবাই পরে বলেছিলো যে ওই ধরণের বইয়ে ছাপা স্পিচ বেলুন সম্বলিত কার্টুন চরিত্রে কোনো গল্পকে বলে কমিক্স স্টোরি ।
যাই হোক, এক নিঃশ্বাসে পড়ে তো শেষ করলাম ছোট্ট সেই কমিক্সটি । নাম - "ডানপিটে খাঁদু আর তার কেমিক্যাল দাদু", লেখক ও শিল্পী : নারায়ণ দেবনাথ । আমি কিছুক্ষন মুগ্ধতায় বিভোর থাকলাম । এত্ত ভালো লেগেছিলো সেটি যে কি বলবো । কিছুক্ষনের জন্য আমি নিজেকে খাঁদু ভাবা শুরু করলাম । সেই শুরু । কমিকসের প্রতি ভালোবাসা আজ পর্যন্তও বিন্দুমাত্র কমেনি আমার । এত বড় হলাম, কিন্তু ছোটবেলার সেই বালক বয়সের মনটি আমি হারিয়ে যেতে দেইনি । এখনো সময় পেলে কমিক্স পড়ি, আর সেই ছোটবেলার মতোই সমান আনন্দ পাই ।
পুজো শেষ হলো, স্কুলে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো । ডিসেম্বর মাস । ক্রিকেট খেলার ধুম শুরু হয়ে যেত সেই সময় । শীত মানেই তখন ব্যাটের ছড়াছড়ি, বলের গড়াগড়ি । আমরা টেনিস বলে ক্রিকেট খেলতুম মাঠে । ক্রিকেটের প্রতি ছিল আমার দুর্নিবার টান, যেটা এখনো অব্দি ফিকে হয়নি । তো সেই বছরেই আমাকে খেলার জন্য ডাকতে এসে বন্ধুরা ফিরে যাওয়া শুরু করলো । আমি মাঠে যাওয়াই এক প্রকার বন্ধ করে দিলাম । কারণ , তখন আমার পড়ার টেবিলে শোভা পাচ্ছে - "এবারো বারো ", "প্রোফেসর শঙ্কুর কান্ডকারখানা", "শুকতারা পূজাবার্ষিকী", "সন্দেশ" এবং তখনকার সময়ের সব চাইতে জনপ্রিয় পূজা বার্ষিকী "আনন্দমেলা" । এসব বই পত্রিকা আগের থেকেই আমাদের বাড়িতে ছিল । আমার দাদার এগুলো । এর আগে কোনোদিনও ছুঁয়ে দেখিনি । কিন্তু, সেদিন "রঙীন উৎসব" বইখানি পড়ে আমি নতুন এক জগতের সন্ধান পেলাম । বইয়ের জগৎ, কল্পনার জগৎ , জানার জগৎ - সব মিলিয়ে রূপকথার এক অদ্ভুত মায়াবী জগৎ ।
এর আগে শুধুমাত্র ক্লাসের বই পড়তাম, নীরস লাগতো সেগুলো আমার কাছে । এরপর থেকে ধীরে ধীরে আমি মাত্রারিক্ত ভাবে বুক addicted হয়ে পড়লাম । বাইরের দুনিয়া এখন আর আমাকে টানে না । আমি এখন কল্পনার জগতের সন্ধান পেয়ে গেছি । সেখানেই কাটে আমার সকাল, সন্ধ্যা, রাত । সব চাইতে ভালো লাগতো কমিক্স । "শুকতারা" তেই আমার কমিকসের প্রতি টানটা আরো জোরালো হয়ে পড়ে । কারণ তখনকার শুকতারা মানেই ছিল নারায়ণ দেবনাথ । তার অসাধারণ সব সৃষ্টি হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট, বাহাদুর বেড়াল, ডানপিটে খাঁদু আর তার কেমিক্যাল দাদু ইত্যাদি অজস্র মন মাতানো কমিক্স । সবই কিন্তু সাদা কালো ।
আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী গুলোতেও ছিল কমিকসের ছড়াছড়ি । কিন্তু, সেগুলোও ছিলো সাদা কালো । এই আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকীতেই আমি প্রথম আবিষ্কার করি লী ফকের "ফ্যান্টম", অরণ্যদেব; আমার আরেকটি ভালোবাসার নাম । যাই হোক, একদিন আমার হাতে এলো আনন্দমেলার বেশ পুরোনো কিছু পাক্ষিক সংখ্যা । এর আগে তো শুধুই পূজাবার্ষিকী পড়তাম । আনন্দমেলার পাক্ষিক সেই সংখ্যাগুলো আমার স্মৃতির মনিকোঠায় চিরদিন জ্বল জ্বল করবে, কারণ ক্রমশ: প্রকাশ্য ।
তো সেই আনন্দমেলার পাক্ষিক সংখ্যা গুলোই ছিল হরেক রকমের কমিক্স এর খনি, সবই রঙিন এবং ঝক ঝকে প্রিন্ট । টারজান, রিপ কাৰ্বি, ডেনিস দ্য মিনেস, এস্টেরিক্স ও ওবেলিক্সের মজাদার সব এডভেঞ্চার, অরণ্যদেব (ফ্যান্টম), মজাদার গাবলু (হেনরি) এবং "টিনটিন এর এডভেঞ্চার" । "টিনটিন " নামটি আমাকে দুর্নিবারভাবে আকর্ষণ করে । এক নিঃশ্বাসে সেদিন পড়েছিলাম মাত্র দুই পৃষ্ঠার ধারাবাহিক ভাবে বেরোনো টিনটিনের এডভেঞ্চার কমিক্স "টিনটিন ও আশ্চৰ্য উল্কা " । পড়েই আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম । অপূর্ব গল্প, অদ্ভুত দর্শন ছোট্ট খাট্ট ভীষণ মজাদার চেহারার টিনটিন আর তার আদুরে কুকুর কুট্টুস (স্নোয়ী) দারুন লেগেছিলো । অস্থির হয়ে উঠলো আমার মন বাকি এপিসোড গুলো পড়ার জন্য ।
কিন্তু, বিধি বাম । পুরোনো সংখ্যা হলে যা হয় আর কি ! কোনো সংখ্যা এ বছরের তো কোনো সংখ্যা পরের বছরের, কোনটি আবার ৩ বছর আগেকার । ফলে, একটা ভীষণ ক্রোনোলোজিক্যাল এররের সম্মুখীন হলাম । কোনো সংখ্যায় পাই "কাঁকড়া রহস্য", কোনোটায় আবার "ফ্লাইট ৭১৪", কোনটায় "চন্দ্রালোকে অভিযান" - সে এক বিশাল জগা খিচুড়ি । সাধ্য কি সেখান থেকে কোনো গল্প বোঝা ।
সেই মন খারাপ আমার বহুদিন ধরে ছিল । ছোট ছিলাম তাই নিজের ইচ্ছেমত আনন্দমেলা কেনা সম্ভব ছিল না । আর আমার বাবা গল্পের বই পড়া তেমন একটা লাইক করতেন না । ফলে, মন খারাপ করে থাকা ছাড়া আর কোনো ওয়ে ছিল না । এই ভাবে কেটে গেলো আরো ৩ টি বছর । আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি । মিড্ টার্ম এক্সাম শেষ, বাবাকে বললাম টাকা দাও গল্পের বই কিনবো । অনেক সাহসী আমি তখন । বাবা টাকা দিলো । দাদার সাথে গেলাম বইয়ের দোকানে । বাবা মাত্র ১০০ টাকা দিয়েছিলেন । আমার টার্গেট ছিল টিনটিন কিনবো । তো টিনটিনের এতগুলো সংখ্যা দেখে তো আমি খুশিতে একেবারে আত্মহারা । মোট ২১ টা বই তখন বাংলায় বেরোতো টিনটিনের । আমি বেছিলাম ৮-১০ তা কিনবো । কিন্তু, দাম দেখে তো আমার চক্ষু চড়ক গাছ । এক একটা টিনটিনের কমিকসের দাম ৯৬ টাকা ।
মাথা ঘুরে গেলো । কোনোরকমে একটা বই কিনলাম "বোম্বেটে জাহাজ" । আমার চোখ মুখ দেখে দাদা আর নিজের বই না কিনে নিজের জমানো টাকা দিয়ে কিনে দিলো আরো একটা বই "লোহিত সাগরের হাঙ্গর", চাচা চৌধরীর দুটি কমিক্স, তিনটে কমিক্স ওয়ার্লড আর লীলা মজুমদার অনূদিত এডগার রাইজ বারোজের "বনের রাজা টারজান" ।
খুশিতে একেবারে আত্মহারা হয়ে গেলাম । বাড়ি ফিরে আগে নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে বসে গেলাম টিনটিন নিয়ে । তার সাথেই বেরিয়ে পড়লাম বুকে দুঃসাহস নিয়ে রহস্যের টানে, বিপদের বেড়াজালেও মাথা ঠিক রেখে, জীবনের মায়া তুচ্ছ করে বদমাশদের ধাওয়া করে তাদের হাঁড়ির হাল করতে । ক্ষুরধার বুদ্ধি, মনে অপরাজেয় সাহস আর অসততার সাথে কোনোমতেই আপোসে না যাওয়া টিনটিন । বাচ্চাদের মুহূর্তে আপন করে নেওয়া সেই টিনটিন , সঙ্গে ভীষণ আদুরে তুলতুলে তুষারের ন্যায় সাদা কুট্টুস । ক্যাপ্টেনের মতো ভীষণ সাহসী আর মজাদার সঙ্গী, বদ্ধ কালা কিন্তু অসম্ভব প্রতিভাধর প্রোফেসর ক্যালকুলাস, কোকিলকণ্ঠী বিয়াঙ্কা কাস্তাফিওর, দম ফাটা হাসির চরিত্র দুই মজাদার বোকা গোয়েন্দা যাদের দুই জনের চেহারা একেবারে same , নামেও ভীষণ মিল জনসন ও রনসন ।আর হার না মানা অন্ধকার জগতের শক্তিশালী গডফাদার রাস্তাপপুলাস, বস্টন আর ড: মুলার । অদ্ভুত চরিত্রের নেস্টর, ওয়াগ আর জেনারেল আলকাজার । আমি ডুবে গেলাম ।
জীবনে আমার পড়া সর্বশেষ্ঠ কমিক্স "টিনটিন"। রহস্য, এডভেঞ্চার, মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর লড়াই এবং ভীষণ মজা । এগুলো সব কিছুই পাওয়া যাবে দুই মলাটের একটি টিনটিন কমিকসের মধ্যে । সেই যে টিনটিনের প্রেমে পড়ে গেলাম । আমার তিরিশ বছরের এই জীবনে আজও বেরোতে পারলাম না টিনটিনের সেই জগৎথেকে । আমার ছেলের নামও তাই টিনটিন । ও যেন টিনটিনের মতোই সৎ নির্ভীক বন্ধুবৎসল আর রহস্যপ্রেমী হতে পারে সেটাই আমার একমাত্র চাওয়া ।
টিনটিন আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু :)
দাদা আপনার পুরো ঘটনাটি আমি আজকে সুন্দরভাবে পরে জানতে পারলাম, যে আপনি ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি খুবই আগ্রহী ছিলেন। বই পড়তে খুবই ভালবাসতেন এবং আপনার ছেলের নাম টিনটিন ক্যানো রেখেছেন। সেই রহস্য আজ আমার কাছে একদম পরিষ্কার। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে আজকের আপনার গল্পটা শেয়ার করেছেন। আমি সত্যিই খুবই আনন্দিত যে আপনার ছেলের নাম টিনটিন রেখেছেন এবং টিনটিনের গল্পের চরিত্রের ছেলেটির মতমতোই সৎ নির্ভীক বন্ধুবৎসল আর রহস্যপ্রেমী হতে পারে। টিনটিনয়ের জন্য এই দোয়াই রইলো।
দাদা আমি সত্যিই অবাক হয়ে গেছি, আপনি ক্লাস থ্রীতে পড়েন। তখন আপনাকে প্রথম আপনার দাদা উপহার দিয়ে ছিল রঙীন উৎসব বইটি। সেই বইটির কথা আপনার আজও খুব মনে আছে। প্রতিটা কথায় আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। আপনি খুবই দক্ষ এবং আপনি ছোটবেলা থেকেই বইপাগল। আপনি ছোটবেলা থেকেই বই পড়তে খুবই ভালোবাসেন। এটি আমি খুবই ভালো করে এখুন বুঝতে পারলাম, যে আপনি ছোটবেলা থেকে বই পড়তে পছন্দ করেন। এই বইটি নিয়ে আপনি ঘুমাতে যেতেন এবং সব সময় বইটি নিয়ে থাকতেন। জীবনে প্রথম উপহার দাদার কাছ থেকে বইটি পেয়ে আপনি খুবই আনন্দিত হয়েছিলেন। সেই দিনটির কথা আমার ভাবতেই ভালো লাগছে। আপনার সেই দিনগুলো অনেক আনন্দের ছিল। বইটির নাম সহ এবং গল্পগুলো আপনার মনে আছে। সত্যি দাদা আপনার প্রশংসা করতে হবে।
ছেলেবেলায় যেকোনো গল্পের বই উপহার হিসেবে পাওয়া মানে একটি আনন্দের বিষয় ছিল।আর সেটা যদি হয় প্রথম উপহার তাও আবার কোনো আপনজনের দেওয়া তাহলে তো কথাই নেই।সত্যজিৎ রায়ের গল্পের বইগুলো আমার কাছে ও খুব ভালো লাগে।নতুন বইয়ের পাতায় একটি দারুণ কাগজের গন্ধ পাওয়া যায়, যা আমার ও খুব ভালো লাগে।
আমার কাছে ও এই বিষয়টি নতুন দাদা।কার্টুন ফোনে প্রায় দেখা হয়, খুবই ভালো লাগে।যেকোনো গল্প একবারে না পড়ে শেষ করলে সেই গল্প পড়ার মজাটাই হারিয়ে যায়।
টিনটিন নামটি খুবই সুন্দর, সেই নামের পিছনে এত সুন্দর সুন্দর গল্পের রহস্য লুকিয়ে আছে আজই জানতে পারলাম।অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ দাদা।
বই পড়া নিঃসন্দেহে ভালো অভ্যেস এবং এটা আমাদের স্কুল জীবন হতে শুরু করানোর চেষ্টা করেন সবাই। বিশেষ করে আগে যে কোন বিষয়ে পুরস্কার হিসেবে প্রথম চয়েজ থাকতো সবার বই কিন্তু এখন সেই ধারাবাহিকতাটা বজায় নেই।
আপনার বই পড়ার আগ্রহটা সেই ছোট বেলা হতে ছিলো, এটা দেখে খুব ভালো লেগেছে আর এইখানে আপনার সাথে আমার পার্থক্য আপনি ভালো কিছু খোঁজার চেষ্টা করেছেন এবং নিজের জ্ঞান বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছেন আর আমি বই রেখে দুষ্টুমিতে বেশী ব্যস্ত থাকতাম, হি হি হি এখনো করি এটা।
তবে টিনটিন এর বিষয়টি বেশ ভালোভাবে পরিস্কার হলাম আজ, যদিও এর আগে একবার শুনেছিলাম আপনার মুখ হতে টিনটিন কমিকসের রহস্য। তবে আজ পুরো বিষয়টি ভালোভাবে পরিস্কার হলাম। ধন্যবাদ দাদা আপনার ছোট বেলার গল্প এবং টিনটিনের রহস্য শুনে ভালো লাগলো। আর আমাদের টিনটিন সোনামনির জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
অনেক অনেক ভালো লাগলো দাদা আপনার জীবনের সুন্দর মুহূর্ত গুলো পড়ে । অনেক ছোটবেলা থেকেই আপনি গল্পের বই পড়তে শুরু করেছেন যা এখন অব্দি আপনার ভালো লাগার হয়ে আছে। এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় ।টিনটিন যে আপনার খুবই পছন্দের কমিকস সেটা আপনার ছেলের নাম শুনলেই বোঝা যায়। টিনটিন আমার কাছেও খুবই ভালো লাগে । টিভিতে যখনই টিনটিন হয় আমার মেয়ের সঙ্গে আমি ও বসে বসে দেখি ।তবে কখনো টিনটিনের কমিক্স পড়িনি ।আমি টিভিতে প্রথম কার্টুন হিসেবে টিনটিন কে দেখেছি।আমাদের টিনটিন সোনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা।
বই পড়লে বই পড়ার প্রতি এক অদ্ভুত রকমের ভালোবাসা জন্মায়। কারণ বই হচ্ছে আমাদের চিরদিনের বন্ধু। বিশেষ করে এডভেঞ্চার ও কমিক্স বই গুলোর প্রতি ছোটবেলায় আমাদের অনেক বেশি আকর্ষণ ছিল। নতুন নতুন চরিত্র সম্পর্কে জানতে আগ্রহ অনেক বেশি ছিল। মাঝে মাঝে বই পড়তে পড়তে অন্য এক জগতে হারিয়ে যেতাম।ছোটবেলায় পড়ার বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে রেখে কত যে গল্পের বই পড়েছি তার কোনো শেষ নেই। গল্পের বইয়ের প্রতি আমার আলাদা রকমের আকর্ষণ ছিল। মজার মজার এডভেঞ্চার গল্পের মধ্যে নিজের চরিত্র গুলো খুঁজে পেতাম সবসময়। কেন জানি তারা আমার সঙ্গী হয়ে গিয়েছিল। ছোটবেলার দিনগুলো আজ মনে পড়ে গেল। লুকিয়ে লুকিয়ে গল্পের বই পড়া ও মায়ের বকুনি শোনা সবকিছুই যেন চোখের সামনে ভেসে বেড়াচ্ছে। আপনি আপনার প্রিয় মানুষটির নাম কেনো টিনটিন রেখেছেন এটা আজ বুঝতে পারলাম। টিনটিন বাবুর জন্য আশীর্বাদ রইলো সে যেন টিনটিনের মতোই সৎ, বন্ধুসুলভ এবং রহস্যপ্রেমী একজন মানুষ হতে পারে। দাদা আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
দাদা একটা জায়গায় আপনার সাথে আমার অদ্ভুত মিল পেলাম। টিনটিন আমার ও খুব পছন্দের কমিকস। ছোট বেলায় একবার কাউকে না বলে একটা লাইব্রেরীতে গিয়ে সারাদিন ধরে টিনটিনের কমিকস পড়েছিলাম। আমি আবার একটু বেছে বেছে পড়ি। আপনার পড়ার অভ্যাসের কথা শুনে খুব ভালো লাগলো দাদা।
আপনার বিভিন্ন পোস্ট পড়েই আমি বুঝতে পেরেছিলাম আপনি বইপাগল একজন মানুষ, বইপ্রেমী একজন মানুষ, বই ভালোবাসার মানুষ।এক কথায় বলা যায় বইপোকা দাদা। আপনার ভালবাসার টিনটিন দোয়া করি সেই টিনটিন এর মতই বেড়ে উঠুক, সাহসী হোক, সবার ভালবাসায় সিক্ত হোক।
দাদা প্রথমেই বলি আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপনার সাথে ঘটে যাওয়া ছোটবেলার মিষ্টি গল্পগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। গল্প পড়ে বোঝা যাচ্ছে দাদা আপনি কতটা বইয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। আর সবগুলো বইয়ের নাম যে টিনটিন ছিল সেটাও কিন্তু খুব দারুন বিষয়।
আপনার গল্প পড়ে দাদা ছোটবেলার অনেক কথা মনে পড়ে গেল, আপনার ঘটে যাওয়া ছোটবেলার প্রতিটা ঘটনা খুব সাবলীল আর সুন্দর ছিল, গল্পটি পড়ে খুবই মজা পেয়েছি, অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
দাদা আপনি বই ভালোবাসেন বলেই ক্লাস থ্রিতে কি বই উপহার পেয়েছিলেন আর তার নাম কি ছিল সেটা আপনার মনে আছে।ছোটবেলায় আমরাও অনেক বই উপহার পেয়েছি এবং পড়েছি কিন্তু কোনোটারও নাম বলতে পারবো না।আসলেই দাদা পড়লে আপনার মতোই পড়া উচিৎ।আমিও অনেক বই পড়েছি হুমায়ুন আহমেদের যখন যেটা পড়েছি তখনই খুব ভালো লাগতো আপনার মত অতো টানতো না। তবে হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, কেমিক্যাল দাদু,বাটুল দি গ্রেড এগুলো টিভিতে অনেক দেখেছি এখনো দেখি খুবই ভালো লাগে। কার্টুন দেখতে আমার সবসময়ই অনেক ভালো লাগে।আসলেই দাদা ছোটবেলায় এমন অনেক স্মৃতি আছে যেগুলো মনে পড়লেই মনটা অনেক ভালো হয়ে যায় আপনার প্রথম বই উপহার পাওয়াটা তেমন একটা দারুন স্মৃতি। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আপনার ছোটবেলার বই পড়ার আনন্দ গুলো আমাদের সাথে ভাগ করেছেন অনেক ভালো লেগেছে পড়ে। টিনটিন ও ফ্যান্টম এর ইতিহাসও জানতে পারলাম আপনার লেখা থেকে। অবিরাম ভালবাসা রইল দাদা আপনাদের জন্য।