শেকড়ে ফিরে যাওয়া-গল্প (পঞ্চম পর্ব)
সাকিব তার স্ত্রীর সাথে রাগ করে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এলো। তারপর সবকিছু গোছগাছ করে নিয়ে তার দু-তিন দিনের ভেতরে গ্রামের বাড়িতে চলে গেলো। তার চাচাতো ভাইকে বলে সে আগে থেকেই বাড়িতে কাজ করার একজন লোক ঠিক করে রেখেছিলো। যার ফলে সাকিবের সেখানে গিয়ে খুব একটা সমস্যা হোলো না। সাকিব প্রথমেই গ্রামে গিয়ে ঘুরে ফিরে কিছু জমি দেখে জমি কিনতে লাগলো। সাকিব এমন জমিগুলো কিনলো যেগুলোতে মোটামুটি ভালো ফসল পাওয়া যাবে। তাছাড়া বাড়ির আশেপাশের জায়গা গুলো একেবারে জংলা হয়ে পড়েছিলো। সে দিনমজুর নিয়ে সেই জংলা জায়গা গুলো সব পরিষ্কার করলো।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
শাকিব পরিকল্পনা করেছে বাড়ির আশেপাশের যে খালি জায়গাটুকু পড়ে থাকবে সেগুলিতে সে বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ করবে। সাকিবের মূল পরিকল্পনা হচ্ছে বাজার থেকে যতটা সম্ভব কম জিনিসপত্র কেনা লাগে সেই ব্যবস্থা সে করবে। গ্রামে পৌঁছে সবকিছু ঠিকঠাক করতে সাকিবকে বেশ ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছিলো। তবে এই ব্যস্ততার ভিতরেও তার পরিবারের কথা প্রায়ই মনে পড়তো। মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে বাচ্চা দুটোর সাথে সে কথা বলতো। বাচ্চা দুটো তার বাবাকে দেখতে না পেয়ে মন খারাপ করে থাকতো। এভাবেই শাকিবের কর্মব্যস্ত দিনকাল চলে যাচ্ছিলো। এদিকে পুকুর পরিষ্কার করিয়ে সেখানে শাকিব মাছ ছেড়েছে। শাকিব ঠিক করেছে এই মাছের জন্য সে কোন ফিড ব্যবহার করবে না। মাছগুলো পুরো প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠবে।
সাকিবের পরিকল্পনা হচ্ছে নিজের পরিবারের জন্য যতটুকু লাগে সেটুকু সে অর্গানিকভাবে উৎপাদন করার চেষ্টা করবে। শাকিব জমি কিনে যাদের কাছে দিয়েছে চাষ করার জন্য তাদেরকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলেছে। জমির কিছু অংশ সে নির্ধারিত করে রেখেছে নিজের পরিবারের ফসল ফলানোর জন্য। সেই অংশটুকুতে সে কৃষকদেরকে কোন রকমের রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে মানা করেছে। যদিও গ্রামের কৃষকরা রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করতে খুবই আগ্রহী ছিলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
সাকিবের চিন্তা ভাবনা একেবারে পারফেক্ট। অর্গানিকভাবে উৎপাদন করা জিনিসপত্র খেতে পারলে শরীর খুব ভালো থাকে। আমারও মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করে সাকিবের মতো এমন জীবন বেছে নিতে। আমার মনে হচ্ছে সাকিবের স্ত্রী শেষ পর্যন্ত অবশ্যই গ্রামে যেতে বাধ্য হবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।