আইন অমান্যের পরিণতি ভালো নয়(ছোটো গল্প)

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


রোহান দ্রুত বেগে মোটরসাইকেল চালিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ করে রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট তার মোটরসাইকেল থামায়। মোটরসাইকেল থামিয়ে তার কাছে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র আর তার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চায়। ট্রাফিক সার্জেন্টের এমন আচরণে রোহান বেশ রাগান্বিত হয়ে ওঠে। সে ট্রাফিক সার্জেন্টকে বলতে শুরু করে আপনি জানেন আমি কে? আপনার কতো বড়ো সাহস আপনি আমার মোটরসাইকেল আটকান। এই কথা বলে রোহান পকেট থেকে ফোন বের করে তার বাবাকে ফোন দেয়। তার বাবা স্থানীয় প্রভাবশালী একজন রাজনৈতিক নেতা। তিনি ফোন রিসিভ করেই রোহানকে জিজ্ঞেস করেন কি হয়েছে কোন সমস্যা নাকি? রোহান তখন তার সমস্যার কথা বাবাকে বলে। তার বাবা ট্রাফিক সার্জেন্টের কর্মকাণ্ডে বেশ রেগে যায়। তিনি রোহানকে বলেন ফোনটা সার্জেন্টের কাছে দাও।

Black Modern Minimalist Reminder Instagram Post_20240415_233808_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে

রোহান লাউড স্পিকারে দিয়ে ফোনটা সার্জেন্টের কাছে দেয়। সার্জেন্ট হ্যালো বলতেই ওপার থেকে রোহানের বাবা চিৎকার করে ওঠেন। তিনি বলতে লাগেন আপনার সাহস কতো বড়ো? আপনি আমার ছেলের মোটরসাইকেল আটকান। এরপর থেকে কখনো আর এরকম কাজ করলে আপনাকে আমি সাসপেন্ড করিয়ে দেবো। ট্রাফিক সার্জেন্ট মন খারাপ করে রোহানের বাবার কাছে ক্ষমা চায়। তারপর রোহানকে ছেড়ে দেয়। রোহান যাওয়ার সময় ট্রাফিক সার্জেন্টের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়। সেই হাসিতে ছিলো বিদ্রুপ আর অপমান। ট্রাফিক সার্জেন্ট চিন্তা করতে থাকে তিনি তো আইন মেনেই রোহানের মোটরসাইকেল আটকে ছিলেন। কাগজপত্র ছাড়া মোটরসাইকেল রাস্তায় বের করা নিষেধ। পরবর্তীতে সে চিন্তা করতে থাকে যাক আমার কি? এই ধরনের ছেলেরা বেশিরভাগ সময় দেখা যায় এক্সিডেন্ট করে রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। এই চিন্তা ভাবনা করতে করতে সার্জেন্ট তার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। এদিকে রোহান ট্রাফিক সার্জেন্টের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে আরো দ্রুতগতিতে হাইওয়ে দিয়ে মোটরসাইকেল চালাতে থাকে।


কিছুক্ষণ পর তার সাথে তার আরো দুই বন্ধু যোগ দেয়। তিন বন্ধু মিলে মোটরসাইকেল নিয়ে রেস করতে থাকে। রেস করতে গিয়ে হঠাৎ করে রোহান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সাথে গিয়ে ধাক্কা খায়। প্রচন্ড গতি থাকার কারণে গাছের সাথে ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথেই রোহান জায়গায় মারা যায়। এর ভেতরে সেই ট্রাফিক সার্জেন্টের ওয়ারলেসে একটি কল আসে। সেখানে তাকে জানানো হয় তার ডিউটি জায়গা থেকে কিছুটা দূরেই একটি মোটরসাইকেলের অ্যাক্সিডেন্টে একটি ছেলে মারা গিয়েছে। সার্জেন্টকে দ্রুত সেখানে যেতে বলা হয়। ট্রাফিক সার্জেন্ট সেখানে পৌঁছে দেখে কিছুখন আগে সে যে ছেলেটাকে আটকে ছিলো সেই ছেলেটাই দুর্ঘটনায় শিকার হয়েছে। ভয়াবহ এক্সিডেন্ট হওয়ার কারণে লাশের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিলো যে চেহারা চেনা যাচ্ছিলো না। কিছুক্ষণের ভেতরে সেখানে রোহানের বাবা এসে উপস্থিত হয়। তিনি এসে ছেলের এই অবস্থা দেখে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করতে থাকেন আর বলতে থাকেন নিজের ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে আজকে আমি আমার ছেলের মৃত্যুর কারণ হলাম। এভাবেই তীব্র গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে একটি প্রাণ অকালে ঝরে গেলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 6 months ago 

বর্তমান সময়ে ইয়াং ছেলেদের কাছে মোটরসাইকেল যেন মৃত্যুর ফাঁদ। এরা বন্ধুরা একসঙ্গে হলে মোটরসাইকেল চালানোর কোন নিয়ম মানে না। সেজন্যই তো প্রতিনিয়ত এরকম মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তাছাড়া কিছু প্রভাবশালী বাবা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে সব জায়গায় সন্তানদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকে। এর ফলে সন্তানদের যে বিপদ হয় তারা বুঝতে পারে না।

 6 months ago 

মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট গুলো খুবই ভয়াবহ হয়। এই পোস্টটি খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তেছিলাম। যখনই ছেলেটার এক্সিডেন্টে মৃত্যু হল তখন খুব কষ্ট লাগলো। তবে ক্ষমতার অপব্যবহার করাটা মোটেও উচিত নয়। অনেক সময় এই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে গিয়ে অনেকে বিপদ ডেকে আনে। যেমন এই ছেলেটার মৃত্যুর জন্য স্বয়ং তার বাবা নিজে দায়ী।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 92868.99
ETH 3121.42
USDT 1.00
SBD 3.14