অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা (ষষ্ঠ পর্ব)
তারা সাইফকে জিজ্ঞেস করে হঠাৎ করে তুমি আমাদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতে শুরু করলে কেন? সাইফ যে তাদের পরিকল্পনা জেনে ফেলেছিলো এটা সে তাদের কাছে চেপে যায়। সাইফ বলে মনটা কয়েকদিন একটু অন্যরকম হয়ে গিয়েছিলো। তবে এখন মন আবার ঠিক হয়েছে। কাছে একেবারেই টাকা পয়সা নাই। চলো কোথাও একটা অপারেশন করি। তার সঙ্গী সাথীরা সাইফকে ফিরতে দেখে খুবই খুশি হয়। কারণ ডাকাতির সমস্ত পরিকল্পনা করতো সাইফ। তার পরিকল্পনাগুলো হতো একেবারে নিখুত। যার ফলে তারা চোখ বুঝে সাইফের উপর ভরসা করতে পারতো।
এই কারণে সাইফের সরে যাওয়াটা তারা কিছুতেই মানতে পারছিল না। আবার কয়েকদিন ধরে একটা বাড়ির উপরে তারা নজর রাখতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত সমস্ত খোঁজখবর নেয়ার পরে তারা ডাকাতির জন্য একটা দিন ধার্য করে। সাইফদের দলটা যখন সেই বাড়িতে ডাকাতি করতে ঢোকে। তখন একজন সদস্যকে তারা বাড়ির বাইরে পাহারায় রাখে। যাতে সে দলের বাকি লোকদেরকে পুলিশ বা অন্য কেউ আসলে সাবধান করতে পারে। এইবার ডাকাতির সময় সাইফ তার দলের সদস্যদের সবাইকে বলল তোমরা সবাই ভিতরে যাও। আমি বাইরে থেকে নজর রাখছি। যখন তার দলের লোকজন সেই বাড়ির ভেতরে ঢুকলো। তখন সাইফ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ কয়েক মিনিটের ভেতরে এসে তার দলের সবাইকে এরেস্ট করে নিয়ে যায়।
সাইফ সেখান থেকে পালিয়ে তার মায়ের কাছে ফিরে যায়। তারপর তার মাকে সবকিছু খুলে বলে। দীর্ঘদিন পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে সাইফের মা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। তখন সাইফ তার মা আর ভাইকে নিয়ে সেখান থেকে অনেক দূরে চলে যায়। কারণ সাইফ জানে তার সঙ্গী সাথীরা একসময় তার খোঁজে তাদের বাড়িতে চলে আসবে। আর একবার তারা তাকে খুঁজে পেলে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করবে। নতুন জায়গায় গিয়ে সাইফ তার ভাইকে সাথে নিয়ে ছোটখাট একটা ব্যবসা শুরু করে। তার মা দীর্ঘদিন পর দুই ছেলেকে একসাথে পেয়ে অনেক খুশি হয়। সে তার পুরনো জীবনের সমস্ত দুঃখ ভুলে যায়। শেষ বয়সে এসে এভাবে সন্তানদেরকে নিয়ে সে থাকতে পারবে সেটা সে কখনো চিন্তাও করেনি। এমনিতেও সে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। এখন দুই ভাই মিলে তার মায়ের দেখাশোনা করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মায়ের মুখে হাসি দেখে সাইফের তার নিজের জীবনে সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে যায়। তারপর তারা সুখ-শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। (সমাপ্ত)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।