শেকড়ে ফিরে যাওয়া-গল্প ( তৃতীয় পর্ব)
শাকিব চাকরি ছাড়ার আগে তার স্ত্রীকে কিছুই জানায়নি। বাড়িতে ফিরে সে প্রথমে তার স্ত্রীকে বললো আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে এসেছি। এই কথা শুনে শাকিবের স্ত্রী আকাশ থেকে বলল পড়লো। সে বলতে লাগলো তুমি এত বড়ো একটা সিদ্ধান্ত নিলে আমাকে একবার জানানোর প্রয়োজন মনে করলে না? সাকিব তখন বললো আমার আইডিয়াটা তো তোমার সাথে অনেক আগেই শেয়ার করেছি। তাই আর নতুন করে তোমাকে কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করিনি। তখন শাকিবের স্ত্রী শাকিবকে জিজ্ঞেস করলো তাহলে এখন আমাদের চলবে কিভাবে? সাকিব বললো আমার প্ল্যান তো তুমি জানোই। নতুন করে আবার জিজ্ঞেস করছো কেনো?
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
তখন সাকিবের স্ত্রী তাকে জোর করতে লাগলো। বললো তুমি সত্যি করে আমাকে এখন বলো আমাদের সংসারটা চলবে কিভাবে? তখন সাকিব তার স্ত্রীকে বসকে যে কথাগুলো বলেছিল সেই কথাগুলোই রিপিট করলো। সাকিবের কথা শুনে তার স্ত্রী তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। সে বলল আমার পক্ষে কিছুতেই গ্রামে গিয়ে থাকা সম্ভব না। আমি ছোটবেলা থেকেই শহরে মানুষ হয়েছি। তুমি গেলে যাও আমি তোমার সাথে গ্রামে যাবো না। শাকিবের স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে শান্তভাবে তার স্ত্রীকে বললো সেটা তোমার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমি চাই তুমি বাচ্চাদের নিয়ে আমার সাথে গ্রামে চলো। গ্রামের জীবনটা শহরের জীবন থেকে অনেক ভালো। শহুরে এই জীবনে আমরা কি পেয়েছি? সারা মাস ধরে শুধু কাজ আর কাজ। সপ্তাহের একদিন পরিবার নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়া। এইতো জীবন? এই জীবন আমার আর ভালো লাগছে না। তাই আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। এখন তুমি তোমার সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এই ব্যাপারে আমি তোমাকে জোর করবো না।
আগামী মাসের এক তারিখ আমি গ্রামে ফিরে যাবো। তুমি যেতে চাইলে আমার সাথে সবকিছু গুছিয়ে তৈরি থেকো। সেদিন রাতে সাকিব তার বাচ্চা দুটোকে নিয়ে খেতে বসলো। খাওয়া-দাওয়া শেষে সে তার বাচ্চা দুটোর সাথে তার পরিকল্পনা শেয়ার করলো। ছোট মানুষ তারা খুব একটা কিছু না বুঝেই অনেক খুশি হোলো। যখন তারা শুনলো গ্রামে গিয়ে তারা ইচ্ছামতো খেলাধুলা করতে পারবে, খোলা মাঠে দৌড়াতে পারবে, ইচ্ছা হলেই পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পড়তে পারবে, ঝড়ের সময় আম গাছের নিচে আম কুড়াতে পারবে। সমস্ত কিছু শুনে তারা দারুন খুশি হোলো। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
খুব চমৎকারভাবে আপনি ধারাবাহিক গল্পটি তুলে ধরছেন। আপনার ধারাবাহিক গল্পটি পড়তে খুব আনন্দ লাগতেছে। চাকরি চলে যাওয়ার পর সাকিবের গ্রামে গিয়ে তার ছেলে মেয়ে কি করবে তার ব্যাখ্যাটা দারুন হয়েছে। আসলে গ্রামে আম গাছের নিচ থেকে আম কুড়ানোর মজাটাই আলাদা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ধারাবাহিকভাবে এমন একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
শাকিবের চিন্তা ভাবনা আসলেই খুব ভালো লেগেছে। শহুরে জীবনে তেমন কি আর আছে। শুধুমাত্র চাকচিক্য ছাড়া শহরে আর কিছুই নেই। যেহেতু শাকিবের দুই বাচ্চা গ্রামে যেতে রাজি হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে শাকিবের স্ত্রী ও গ্রামে যেতে রাজি হবে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।