"আমার বাংলা ব্লগ" তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্পেশ্যাল DIY কনটেস্ট - আমার বাংলা ব্লগ জাহাজ।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন বন্ধুরা? অনেকদিন পর আমি একটি DIY পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। এটি আমার কাছে একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্বয়ং দাদা কনটেস্টের আয়োজন করেছে। গত বছরে অনেক আনন্দ পেয়েছিলাম ইউজারদের আয়োজন করা কন্টেস্টে পার্টিসিপেট করে। এবার দাদা নিজেই একটি প্রতিযোগিতা দিয়েছে। আমার অংশগ্রহণ করতে একটু দেরিই হয়ে গেল। আসলে এক্সাম চলার কারণে আমি গত শুক্রবার পর্যন্ত প্রচুর বিজি ছিলাম। এরপর আবার বাংলা ব্লগের থিম সং শুটিং ডিরেকশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। যাইহোক, কয়েকদিন ধরে অল্প অল্প কাজ করে অবশেষে আজকে সম্পুর্ন কাজ শেষ করতে পেরেছি।
কনসেপ্ট
২০২১ সালে যাত্রা শুরু বাংলা ব্লগের। তিনটি বছরের এই যাত্রাকে একটি জাহাজের সাথে তুলনা করেছি। একটি জাহাজ যেমন বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে দিয়ে শত শত যাত্রী নিয়ে ছুটে চলে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে, ঠিক তেমনি বাংলা ব্লগ কমিউনিটিও তার নিজস্ব নিয়মে সকল সমস্যা সমাধান করে হ্যাপি ইউজার নিয়ে ছুটে চলেছে।
যেহেতু ৩ টি বছর পার করেছি আমরা, তাই ৩ তলা বিশিষ্ট জাহাজ তৈরি করেছি। জাহাজের ক্যাপ্টেন হলো আমাদের @rme দাদা। ক্যাপ্টেন জাহাজ টিকে দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছেন। @blacks ভাই জাহাজের ফার্স্ট অফিসার অর্থাৎ ক্যাপ্টেনের অধীনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা, যিনি ক্যাপ্টেনের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেন এবং নাবিকদের তত্ত্বাবধান করেন। আমরা এডমিন, মডারেটর হলাম জাহাজের নাবিক। আর কমিউনিটির প্রতিটি ইউজার হলো জাহাজের যাত্রী। জাহাজের প্রতিটি তলা এক একটি বছরকে রিপ্রেজেন্ট করছে। আশাকরি কনসেপ্ট'টি বুঝতে পেরেছেন।
এবার চলুন দেখে নিই জাহাজ তৈরিতে কি কি ম্যাটেরিয়াল প্রয়োজন হলো:
নং. | নাম | পরিমান |
---|---|---|
১ | স্টাইরোফোম | ৪ টি |
২ | পোস্টার রং | প্রয়োজন মতো |
৩ | কাটার | ১ টি |
৪ | গ্লু গান | ১ টি |
৫ | গ্লু স্টিক | প্রয়োজন মতো |
৬ | টুথপিক | ১ বাক্স |
৭ | পেন্সিল | ১ টি |
৮ | স্কেল | ১ টি |
৯ | মার্কার পেন | ১ টি |
১০ | তুলি | ২ টি |
১১ | হ্যাক্সো ব্লেড | ১ টি |
প্রথমে প্রয়োজন কয়েকটি সমতল আকৃতির স্টাইরোফোম। এটা ম্যানেজ করতে চলে গেলাম বাজারের Walton শোরুমে। ওখান থেকে আমরা দুইবার গিয়ে প্রথমবার দুইটি, পরের বার চারটি স্টাইরোফোম নিয়ে আসছিলাম। যাইহোক, যা কিছু প্রয়োজন সব ম্যানেজ করে বন্ধুর বাসার বেলকুনিতে কাজ শুরু করলাম। আসলে বড় সাইজের একটি জাহাজ বানাতে একজন প্রয়োজন ছিল। এক হাতে কাজ করার সময় পাশে একজন হেল্প করার মত না থাকলে ব্যাপারটা খুবই কঠিন হয়ে যায়।
সবকিছু রেডি করে তারপরেই কাজ শুরু করেছিলাম। আমার কাছে তেমন কিছুই ছিল না। সবকিছুই নতুন কিনে এনেছিলাম। যাইহোক প্রত্যেকটা স্টেপ চলুন ধাপে ধাপে দেখে নিই:
স্টেপ-১:
প্রথমেই স্টাইরোফোম স্কেল দিয়ে মেপে ওয়ান সাইড রাউন্ড শেপে কেটে নিলাম। এটি জাহাজের পাটাতনের অংশ।
স্টেপ-২ :
পাটাতনের আরো কয়েকটি অংশ একই উপায়ে কেটে নিলাম। এরপর সবগুলো একসাথে করে আঠা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
স্টেপ- ৩ :
এবার জাহাজের প্রথম ফ্লোরের নিচে পাটাতন গুলো লাগিয়ে নিলাম। জাহাজের সামনের অংশেও ফোমের দুইটা অংশ আঠা দিয়ে সুন্দরভাবে লাগিয়ে নিলাম।
স্টেপ- ৪:
এবার বারান্দার সাপোর্ট এবং দেয়াল গুলোতে জানালা, দরজা কেটে নিলাম। এ পর্যায়ে যতগুলো দেয়াল প্রয়োজন সবগুলো একসাথে তৈরি করে নিয়েছিলাম।
স্টেপ- ৫:
প্রথমেই নিচতলার কাজ। নিচতলা অর্থাৎ আমাদের ২০২১ সালের যাত্রার শুরুর সময়। নিচ তলায় চারটি দেয়াল আঠা দিয়ে সুন্দর ভাবে লাগিয়ে নিলাম।
স্টেপ- ৬:
পর্যায়ক্রমে ২০২২, ২০২৩ সালের বাংলা ব্লগ বা জাহাজের দ্বিতীয় তৃতীয় তলার দেয়াল এবং ছাদগুলো লাগিয়ে নিলাম। এই অংশ শেষ করার পর জাহাজটি দেখতে সুন্দর লাগছে। ২০২৩ এর উপর অর্থাৎ তৃতীয়তলার উপর চতুর্থ তলার ছাদ বসিয়ে দিলাম। এটাই আমাদের উদযাপনের মুহূর্ত। ছাদের উপর অবশ্য একটি কন্ট্রোল রুম বসিয়ে দিয়েছি। কন্ট্রোল রুম না থাকলে তো আর জাহাজ চলবে না। এখানে দাঁড়িয়েই জাহাজ কন্ট্রোল করবে আমাদের দাদা।
স্টেপ- ৭:
এবার রং করার পালা। তিন চার রকমের রং করেছি মোট। প্রথমেই উপর থেকে শুরু করেছিলাম। দেওয়াল গুলোতে সবুজ রং করেছি। আমাদের বাংলা ব্লগের লোগোর রং সবুজ। এজন্য দেয়ালে সবুজ রং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
স্টেপ- ৮ :
প্রত্যেক তলার ছাদের বাউন্ডারী সেল্টে লাল রং করে দিয়েছি। একদম নিচের তলায় হলুদ রং দিয়েছি। জাহাজের সামনের অংশে লাল রং দিয়েছি।
স্টেপ- ৯:
একদম শেষে গিয়ে মই বসিয়ে দিয়েছি লাল রং করে। সাথে একটি চেয়ারও বসিয়েছি। আরো ছোটখাটো কিছু কাজ ছিল, অল্প কিছু রং করা বাকি ছিল, সেগুলো শেষ করে ফেলেছি।
সেলিব্রেশন টাইম:
এইবার হচ্ছে সেলিব্রেশন টাইম। জাহাজটি খুব সাবধানে নিয়ে গিয়েছিলাম একটি পুকুর পাড়ে। নিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ফোমের জিনিস তো তাই সহজেই উড়ে যেতে চায় বাতাস পেলে। আরো আগে ছবি তোলার ইচ্ছা ছিল আসলে শেষ করতে পারিনি দ্রুত। হাতে যদি আরও একদিন সময় থাকতো তাহলে রং করা আপনারা যেমন দেখতে পাচ্ছেন এর থেকে অনেক ভালো করা যেত। খুব দ্রুত রং করা শেষ করেছি যার কারণে ফিনিশিং এ একটু কমতি রয়ে গেছে।
যাইহোক, অল্প আলোতেই ফটোগ্রাফি গুলো করেছি। জাহাজটি এখন পথ চলার জন্য রেডি।
অবশেষে সাকসেসফুলি "আমার বাংলা ব্লগ" জাহাজ'টি চলতে সক্ষম হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে শত শত যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে এই জাহাজ'টি। হিহিহি।
শেষ করছি এখানেই। দাদাকে আরও একবার ধন্যবাদ জানাই। ইনশাহ আল্লাহ নেক্সট ইয়ারেও এমন মজার কোন কন্টেস্টে পার্টিসিপেট করার সৌভাগ্য হবে। আজ বিদায়।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
বাহ, বেশ দারুণ জাহাজ বানিয়েছেন ভাই। শুভেচ্ছা রইল।
আপনার জন্যও শুভকামনা ভাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ, দারুন হয়েছে মামু, জাহাজটি পানিতেও দারুন চলেছে দেখছি।। প্রথম কিন্তু আপনিই হবেন।।
শান্তনা পুরস্কার পাব 😜
আরে না মামু, কি যে বলেই, আপনিই প্রথম হবেন।
বাহ অসাধারণ একটি ডাই প্রজেক্টটি নিয়ে আপনি তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেন। সত্যি অসাধারণ হয়েছে আপনার পোস্টের বর্ণনাও অসাধারণ ছিল। এত সুন্দর একটি জাহাজ তৈরি করে নিলেন আপনি ভীষণ ভালো লেগেছে। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার একটি বিষয় কাজ করলো এবারে আপনারা সবাই এডমিন মডারেটর ভাই-বোনেরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। আপনাদের সবার জন্য শুভকামনা রইল। বাহ! জাহাজ তো একেবারে পানিতে নামিয়ে দিলেন ভাইয়া 😊😎।
এ জাহাজ নিয়ে কক্সবাজার যাওয়া যাবে না? 😜
অবশ্যই নিয়ে আসেন আপনার ভাগ্নিরা খুশি হবে আর আমি বীচের পানিতে ছেড়ে দিবো🥰💗
অত বড় বড় ঢেব এসে আমার জাহাজটা আবার তলিয়ে না দেয় 🥲🥲
ভাই ভাসানোর আগে আামদের একটু দাওয়াত দিলেই পারতেন, কিছু খাওয়া দাওয়াও হয়ে যেতো, হি হি হি। দারুণ হয়েছে সত্যি।
আসলেই ভাই দাওয়াত পাওয়ার দরকার ছিলো। তবে সমস্যা নেই সুযোগ পেলে সুমন ভাইয়ের থেকে আমরা চানার বালুখাই মিষ্টি খেয়ে নেবো। 😍
এ জাহাজ নিয়ে কক্সবাজার চলে যাব ভাই। 🤣
অসম্ভব সুন্দর এবং খুবই ইউনিক একটি আইডিয়া ছিলো ভাইয়া।আমরা বাংলা ব্লগ কিন্তু ঠিক জাহাজের মতোই আমাদের সবাইকে বহন করে চলেছে।আপনার আইডিয়া টা সুন্দর ছিল।খুব ভালো লাগছে দেখতে কালার কম্বিনেশন সব মিলিয়ে দারুন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
আসলে সুমন ভাই আপনি তো দেখছি দারুন একটা কনসেপ্ট নিয়ে এই ডাই পোস্টটি তৈরি করেছেন। সত্যিই আপনি যে কথাগুলো বলেছেন তা একদম সম্পূর্ণ সঠিক। আসলে দুই দাদাদের জন্য আজ আমার বাংলা ব্লগটা এতদূর এগিয়ে এসেছে। আর আমার বাংলা ব্লগের জাহাজে চড়তে পেরে সত্যিই নিজেকে ধন্য মনে করছি। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটা ডাই পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাই।
এই জাহাজে আমরা আরো অনেক দূর যেতে চাই। 💕
দারুণ কনসেপ্ট এর উপর আপনার ডাই প্রজেক্ট টি তৈরি করেছেন ভাই। আসলেই জাহাজের ক্যাপ্টেইন এবং ফার্স্ট অফিসার এর সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকলে আমরা কবেই কোন দিকে পথ হারিয়ে ফেলতাম, কে জানে!! আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে উপস্থাপন 😍😍। এতো দেখছি সত্যি সত্যিই জলে ভাসছে! এই জাহাজটি আরোও আরোও বড় হোক। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাই।
এই জাহাজে চড়ে আমরা সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াবো। 🥳
প্রথমেই অসংখ্য ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার বাংলা ব্লগের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্পেশাল ডাই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য। জাহাজ তৈরীর থিমটা এক কথায় অসাধারণ হয়েছে। শ্রদ্ধেয় বড় দাদা, ছোট দাদা, এডমিন, মডারেটর ও সদস্যদের আলাদা আলাদা রোল দিয়ে দিয়েছেন সত্যি দারুন লাগলো বিষয়টা। জাহাজটা দেখতে চমৎকার সুন্দর হয়েছে আর ফটোগ্রাফি গুলো একদম মাস্টার ক্লাস। এই জাহাজে উঠে আমার বাংলা ব্লগ পুরো পরিবার অজানা গন্তব্য বেরিয়ে পড়বো অ্যাডভেঞ্চারে। এই প্রতিযোগিতায় আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাই।♥️♥️♥️
এই জাহাজ নিয়ে প্রথমে সমুদ্রে নামতে হবে। 😜
হুম ভাই প্রথমে বঙ্গোপসাগর হয়ে তারপরে ভারত মহাসাগর ও আরব মহাসাগর হয়ে আস্তে আস্তে আটলান্টিক মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর এইসব মহাসাগর গুলো পাড়ি দেবো।
ভাইয়া আপনার তৈরি করা জাহাজ অসাধারণ হয়েছে। আপনি এত সুন্দর করে এই জাহাজটি তৈরি করেছেন দেখে ভালো লাগলো। এই ধরনের কাজগুলো করা মোটেও সহজ ছিল না। সব মিলিয়ে অসাধারণ হয়েছে। আশা করছি প্রতিযোগিতায় ভালো অবস্থান অর্জন করবেন। অনেক অনেক শুভকামনা এবং ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।