ছোটবেলার বন্ধুত্ব এক অবিনশ্বর বন্ধন
বন্ধুত্ব একটি অত্যন্ত মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, যা আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আসে। ছোটবেলার বন্ধু এবং কলেজ, ভার্সিটি কিংবা ইনস্টিটিিউটের বন্ধু—এই দুই ধরনের বন্ধুত্বের মধ্যে অনেক পার্থক্য এবং অনন্যতা রয়েছে। এই পোস্টে আমি এই দুই ধরনের বন্ধুত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে লেখার চেষ্টা করবো আমার জীবনের বাস্তব প্রভাব থেকে।
ছোটবেলার বন্ধুত্ব শুরু হয় জীবনের সেই সময়ে যখন আমরা সবে মাত্র পৃথিবীকে জানতে শুরু করি। ছোটবেলার বন্ধুরা আমাদের সাথে প্রথম স্কুলে যায়, প্রথম খেলনা ভাগ করে, প্রথম দুষ্টুমি করে। নির্ভেজাল সম্পর্, এই সময়ে বন্ধুত্বে কোনো স্বার্থপরতা থাকে না। আমরা শুধুমাত্র আনন্দ এবং ভালোবাসার জন্য বন্ধুত্ব করি। জীবনের প্রথম অধ্যায়ের সবচেয়ে মূল্যবান অংশগুলির মধ্যে এটি একটি। ছোটবেলার বন্ধুরা আমাদের শৈশবের প্রতিটি মধুর মুহূর্তকে স্মরণীয় করে তোলে। কারো সাথে হয়তো বন্ধুত্ব থেকে যায় অনেকে হয়তো ভুলেও যায়।
এই যে আমার কিছু বন্ধু যাদের সাথে আমার ছোট বেলায় বেড়ে ওঠা তারাও আজ সবাই ব্যাস্ত কিন্তু খোঁজ নিতে ভুলেনা। এটাই হয়তো বন্ধুত্ব যেখানে কোনো স্বার্থপরতা নেই, নেই কোনো চাওয়া। চাওয়া শুধু একটু আড্ডা দেওয়ার সময় এই যে ইদ চলে আসছে ছোটবেলার অনেক বন্ধু এখনো ফোন করেন, খোঁজ নেন, বাসায় গেলে আড্ড জমানোর জন্য সময় বের করেন। ছোটবেলার বন্ধুত্ব জীবনের সেই মধুর সময়, যখন প্রতিটি মুহূর্ত ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এবং আনন্দে ভরপুর।
ছোটবেলার বন্ধুরা আমাদের জীবনের প্রথম সহযাত্রী। তারা আমাদের সাথে প্রথম স্কুলে যায়, প্রথম বইটি পড়ে, প্রথম দুষ্টুমি করে, এবং প্রথমবারের মতো জীবনের মানে বুঝতে সাহায্য করে। এই বন্ধুত্বগুলো কোনো স্বার্থপরতা বা প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং তারা এক নিঃস্বার্থ ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ। স্কুলের পরপরই ব্যাগ ফেলে মাঠে দৌড়ানো, বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট, ফুটবল খেলা। সেই মুহূর্তগুলো ছিল চিন্তামুক্ত আনন্দে ভরপুর।
ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ঝগড়া, আবার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সব ভুলে গিয়ে একসাথে হয়ে যাওয়া।ছোটবেলার এই বন্ধুত্বের মূল্য আসলে অনির্বচনীয়। এই বন্ধুরা আমাদের জীবনের প্রতিটি সুখ-দুঃখে পাশে থাকে, আমাদের প্রথম হাসি-কান্নার সাক্ষী হয়, এবং আমাদের জীবনের প্রথম শিক্ষা দেয়।
অপর দিকে কলেজ, ভার্সিটি কিংবা ইনস্টিটিিউট জীবনের বন্ধুত্ব সাধারণত বাস্তবিক হয়। কলেজের বন্ধুত্বগুলো আমাদের প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এই বন্ধুরা অনেক সময় আমাদের কর্মজীবনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রান খুঁলে আড্ড দেওয়ার মতো একটা জায়গার অভাব থাকেই।
ছোটবেলার বন্ধু এবং কলেজের বন্ধুর মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। ছোটবেলার বন্ধুত্ব সাধারণত আরও নির্ভেজাল এবং গভীর আবেগের ভিত্তিতে তৈরি হয়, যেখানে কলেজের বন্ধুত্ব বাস্তবিক হয়। ছোটবেলার বন্ধুরা আমাদের শৈশবের নির্মলতা এবং নির্দোষতার প্রতিফলন, যেখানে কলেজের বন্ধুরা আমাদের প্রফেশনাল এবং ব্যক্তিগত জীবনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সকল বন্ধুরা ভালো থাকুক। সকলকে অনেক মিস করছি।
আমি রিদওয়ান হোসাইন। পরিবারের শেষ সন্তানটি আমি। পড়াশোনা করছি কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি নিয়ে। ভ্রমণ করা, গান গাওয়া ও শোনা এবং ফটোগ্রাফি করা আমার খুবই পছন্দ। আমি পড়াশোনার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে লেখা শুরু করি, তাই "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব, আমার ভালোবাসা। নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার মুক্ত প্লাটফর্ম। এখানে নিজের মনের ভেতর জমে থাকা হাজারো কথা তুলে ধরা যায়।
আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হলো যে আপনি বন্ধুত্বের মূল্য এবং গভীরতা অত্যন্ত সুন্দরভাবে বুঝেন এবং ব্যাখ্যা করেছেন। ছোটবেলার বন্ধুত্বের নিঃস্বার্থ এবং আনন্দময় মুহূর্তগুলির বর্ণনা পড়ে আমার নিজের শৈশবের স্মৃতি জাগ্রত হয়েছে। আপনার লেখনীতে একটি সত্যিকারের আবেগ প্রকাশ পেয়েছে, যা পাঠকদের মনে গভীর ছাপ রেখে যায়। আপনার ব্লগের প্রতি আপনার ভালোবাসা এবং নিবেদন প্রশংসনীয়। শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাই।