রাতের বেলা বড় ভাইদের জোরাজোরিতে একটু শহরের বুকে।
বড় ভাইদের জোরাজুরি আর ভালোবাসার টানে তাদের সাথে শহরের বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যার সময় আমরা সবাই মিলে রওনা দিলাম শহরের প্রধান বাজারের দিকে। রাতের আলোয় আলোকিত বরগুনা শহরের বাজারটি যেন একেবারে অন্য রকম দেখাচ্ছিল। দোকানগুলোতে ঝলমলে আলো, নানা রঙের পণ্য আর মানুষের কোলাহলে ভরপুর ছিল পুরো জায়গাটা।
বড় ভাই খুব যত্নসহকারে তার প্রয়োজনীয় জিনিস পেনড্রাইভ দেখতে লাগলেন এবং কিনলেন । আমি তাদের সাথে হাঁটতে হাঁটতে বিভিন্ন দোকানের বৈচিত্র্যময় পণ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছিলাম। কেনাকাটা শেষ করে বড় ভাইরা প্রস্তাব দিলেন চপ সিংয়ারা খাওয়ার। কিছুদুর হাটতেই শহরের এক সাইডে একটি লেক পড়ে, তেমনি আজকেও লেকের কাছে আসা মাত্রই আবার প্রস্তাব দিলেন লেকের পাড়ে একটু আড্ডা দেওয়ার।
রাতে লেকের পাড়ে যাওয়ার সুযোগ কমই হয়, তাই আমি খুশি হয়ে রাজি হয়ে গেলাম। লেকের পাড়ে পৌঁছানোর পর, সেখানে আমরা কিছু খাবারের দোকান খুঁজে পেলাম। বড় ভাইরা আমাদের সবার জন্য মজার মজার খাবার কিনলেন। আমরা লেকের পাশে একটি খোলা জায়গায় বসে খেতে শুরু করলাম। আড্ডা কি এমনি এমনি হয় ?। খাচ্ছিলাম আর বেষ ভালো একটা সময় উপভোগ করছিলাম।
খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে আমরা নানা রকম গল্প করছিলাম, হেসে উঠছিলাম আর পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করছিলাম। বড় ভাইদের জীবনের নানা অভিজ্ঞতার কথা শুনতে শুনতে সময় যেন কোথা দিয়ে কেটে যাচ্ছিল টেরই পাচ্ছিলাম না। আলাপের এক পর্যায়ে, বড় ভাইদের একজন বললেন, “তুমি জান “ এখানে আসলে আমরা অতো সহোজে বাসায় যেতে চাইনা।
খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমরা সবাই মিলে লেকের পাড় ধরে একটু হাঁটি। রাতের লেকের সৌন্দর্য আর ঠান্ডা বাতাসে হাঁটতে হাঁটতে আমাদের বেশ ভালো লাগছিলো। বড় ভাইদের সাথে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো যেন আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর আর মজবুত করছিল। রাত ৮: ৪০ বাজলো আমরা বাড়ির পথে রওনা দিলাম। কেননা আজকে আমার লেভেল ৩ এর ক্লাস ছিলো তাই আমি ভাইদের বারবার তাড়া দিচ্ছিলাম।
ফেরার সময় সবাই একটু ক্লান্ত ছিল, কিন্তু মনটা ছিল ভরপুর আনন্দে। বড় ভাইদের সাথে এমন সুন্দর একটি আড্ড দিয়ে সত্যিই মনটা ভরে গিয়েছিল। আমাদের এই ছোট্ট যাত্রা এবং লেকের পাড়ে খাওয়া-দাওয়া আমাদের জীবনের একটি বিশেষ স্মৃতি হয়ে থাকবে হয়তো। কারণ ভাইয়ারা এবার সবাই বরগুনা থেকে একদম বিদায় নিবে। কারন তাদের সেমিস্টার শেষ।
বড় ভাইদের সাথে কাটানো মুহুর্তটি আমাকে আরও বেশি করে বুঝিয়ে দিল পরিবারের ভালোবাসা আর একসাথে কাটানো সময়ের মূল্য কতটা। সত্যিই, জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলোই আমাদের জীবনের বড় বড় সুখের উৎস।আজকের প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি হাসি আর প্রতিটি গল্প আমার মনে চিরদিন অমলিন হয়ে থাকবে হয়তো।
আসলে শহরের রাতের বেলা ঘোরাঘুরি করার মজাই আলাদা। তারপর পাশাপাশি যে কোন প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার মুহূর্ত টা দারুন হয়ে থাকে। বড় ভাই ব্রাদারের সাথে কোথাও যাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। যেমনটা আমিও অনেক ঘুরাঘুরি করেছি বড় ভাই ব্রাদারের সাথে আপনার মুখ কাটানো মুহূর্তটা আমাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে।