শুক্রবারের ক্লাস
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমি আছি কোনো রকম। গরমে তো অবস্থা খারাপ। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে ফলে গরম আরো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নিম্নচাপ ঘুর্ণিঝড় এ রূপ নিবে শিগ্রই। তখন হয়তো বৃষ্টি এসে পরিবেশ টাণ্ডা হবে। তবে ক্ষয়ক্ষতি ও হবে অনেক। যাক গতকাল শুক্রবার ছিলো। ঘটেছে কিছু মজার ঘটনা। সেগুলো শেয়ার করবো আজ।
শুক্রবার মানে ভার্সিটির ক্লাস। এবার আমি আছি ৭ম সেমিস্টারে। তো এই সেমিস্টারে এখনো ক্লাস করা হয়নি শুক্রবারের। প্রথম সপ্তাহে সবাই মিলে মিস দিয়েছিলাম। আর গত সপ্তাহে বন্ধুরা যায়নি দেখে আমিও যাইনি। তাই এই সপ্তাহে যেতেই হবে যত যাই হোক। তো আমি সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রউনা দিলাম। ক্লাস ছিলো সকাল ৭ টা ৩০ থেকে তবে শুরু হবে ৮ টা থেকে। কারণ অত সকালে ঘুম থেকে উঠে কে। যাক ক্লাসে ঢুকার আগে একটু আতর মেরে নিলাম। সুঘ্রাণ এর জন্য। তবে ভাবতে পারিনি কি হতে চলেছে সামনে। ক্লাসে ঢুকে সিট নিয়ে বসলাম। পাশের সিট এ আমার এক মেয়ে ক্লাসমেট বসেছিলো। আমি ঢুকতেই সম্ভবত সে আতর এর ঘ্রাণ নিতে পারছিলোনা। তার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। যদিও তখন আমি বুঝিনি ব্যাপারটা। ভাবলাম অসুস্থ হয়তো। সে দেখলাম দৌড়ে ক্লাসের বাইরে চলে গেলো। সম্ভবত বমি করে এসেছে। এরপর ক্লাসে এসে তো কাশি দিচ্ছিলো বার বার। ওর বন্ধুরা বললো বেশি খারাপ লাগলে চলে যেতে। পরে দেখলাম মেয়েটা পাশের আরেক ক্লাসমেট কে বলতেছে কিছু একটা। বুঝলাম আমার আতর এর জন্য এই অবস্থা। আমার খুব লজ্জা লাগতেছিলো তখন। কি করলাম এটা। যদিও আমার দোষ নাই। আর কারোই সমস্যা হয়নি। তবুও নিজের কাছে খারাপ লাগতেছিলো। এরপর ওই ক্লাস শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমি সেখান থেকে চলে আসলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম বাকি ক্লাস গুলো করবোনা। কারন আমি ক্লাস করলে ওই মেয়ে নিশ্চিত মরেই যাবে।
নিচে নেমে চা খেলাম। এরপর বন্ধুরা আসলো। এরপর ওদের সাথে কিছুক্ষন আলাপ আলোচনা করে আমি হাসপাতাল এর দিকে চলে গেলাম। আম্মুকে আজ রিলিজ দিবে। তো হাসপাতাল এ গিয়ে বসে ছিলাম অনেক্ষন। এরপর সব কাগজ পত্র ঠিকঠাক করে আম্মুর রিলিজ হলো। এবার আম্মু আব্বু ও খালাকে একটা CNG তে উঠিয়ে দিলাম। এরপর আমার বাইক রোদ হতে ছায়ায় আনলাম। কিন্তু দেখি অনেক গরম হয়ে আছে। এই অবস্থায় যদি বাইকে বসি তাইলে আমার পেছন শেষ
😂😂। বাইকে রুমাল ছিলো একটা সেটা দিয়ে ধিরে ধিরে ঠান্ডা করার ট্রাই করলাম। এরপর বের হলাম। আর আব্বু আম্মুকে বলেই রেখেছিলাম বাসায় ফিরতে দেড়ি হবে। হাতে টাকা ছিলোনা একদমই । ভাবলাম আবার একদিন উবার রাইডার হয়ে যাই। তো আগের দিন রাতে উবার পাস কিনেছিলাম। তাই এপ চালু করে ভার্সিটির সামনে চলে গেলাম। সেখানে এক আফ্রিকান একজন রিকুয়েস্ট দিলেন। ও আমার সাথে ভাংগা বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করছিলো। তাই বুঝতে ছিলাম না তেমন একটা। জিজ্ঞেস করলাম ভাই কই আপনি। এরপর আর বলতে পারেনা। পরে বুঝলাম উনি বিদেশি কেউ হবে। ওনার নাম ছিলো ড্যানিয়েল। আমি সামনে যেয়ে দাঁড়িয়ে আছি তবে আমাকে খুজে পাচ্ছেনা। তো তখন আমি ডাক দিলাম- "Hey, Daniel." পরে উনি দেখলাম একটা হাসি দিলেন। এরপর আমি হেলমেট দিলে সেটা লাগিয়ে বাইকে বসলেন। এরপর আমি ম্যাপ চালু করে বাইক টান দিলাম।
উনি ড্রপ লোকেশন দিয়েছিলেন সদরঘাট এর ঐদিক। তো আমি বঙ্গবাজার হয়ে যাচ্ছিলাম সদরঘাট এর ঐদিক। মাঝে জ্যাম এ পরলেই দেখতাম ওই ব্যাটা চিল্লায় বলে চিপা দিয়ে যাইতে। হয়তো ইমার্জেন্সি ছিলো। আমার মজাই লাগতেছিলো। পাশে দিয়ে রাস্তা ফাকা হলেই বলতো ডানে ডানে। মানে খুবই প্যারা দিচ্ছিলো রাশ রাইডিং করার জন্য। জ্যাম এ পরলেই বিরক্ত হয়ে যেতো। যাক তারপর তাকে নামাই দিলাম। তবে এটা ভালো লাগছে যে লোকটা আমার সাথে বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করেছে। এরপর সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। সদরঘাট এর দিকে যাচ্ছিলাম। যেতেই একটা ট্রিপ আসলো। মতিঝিল যাবে। তাকে মতিঝিল পৌছে দিলাম। এরপর আরেকজন পেলাম যিনি মহাখালী যাবেন। তাকে মহাখালি পৌছে দিলাম। এবার লাস্ট একজন কে পেলাম তাকে পান্থপথ নামিয়ে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। পকেট খরচ হয়ে গেলো।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।

VOTE @bangla.witness as witness

OR
আপনি আতর নিয়েছেন যেটা ক্লাসে আপনার বান্ধবীর বারোটা বেজে গিয়েছে। যখন এই কথাগুলো পড়ছিলাম অনেক হাসি পাচ্ছিল। যাইহোক, বেচারা ভালোই ভোগান্তি ভোগ করেছে পরে ক্লাস না করে চলে গিয়েছেন । ঢাকা শহরে একটু সুবিধার যাতায়াত হল উবার রাইডার তাও আবার বিদেশী একজন লোক পেয়েছেন। ঢাকা শহরে চলাফেরা করা কতটা কঠিন বিদেশি ব্যক্তি ভালই বুঝতে পেরেছে। আজকের পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই।
সপ্তম সেমিস্টারে প্রথমবারের মতো ক্লাস করতে গিয়ে বেশ একটি ঘটনা ঘটে গিয়েছিল দেখছি। আসলে কিছু কিছু মানুষ এরকম সুগন্ধ সহ্য করতে পারেনা যার কারণে এমন হয়ে থাকে। যাইহোক ওনাকে একটু রেহাই দেয়ার জন্য আপনি ক্লাস না করে চলে আসলেন এবং সোজা হসপিটালে আপনার মায়ের কাছে চলে গিয়েছিলাম। এরপর সেখান থেকে আপনার আব্বু,আম্মু এবং খালাকে সিএনজিতে তুলে দিয়ে নিজের হাত খরচ জোগাড় করার জন্য হয়ে গিয়েছিলেন উবার রাইডার। এবং উবার রাইডার হতে গিয়ে এক বিদেশী কে উঠিয়ে আলাদা একটা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন দেখছি। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই সব মিলিয়ে এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এরে ভাই! সপ্তাহে একদিন হয় ক্লাস, তাও এভাবে ফাঁকি দিলে হবে!! পরে পরীক্ষার আগে চোখে সর্ষে ফুল দেখবেন যে.... ক্লাস করা থাকলে বিষয় গুলো বুঝতে সুবিধে হয়, আর পরীক্ষার আগে প্যারা কম হয়। আর উবার এর অভিজ্ঞতা তো বেশ ভালোই লাগলো!বিদেশিদের আধো-বাংলা আর তো বেশ দারুণ লাগে শুনতে। তবে রাশ ড্রাইভিং এর জন্য তারা দিচ্ছিলো ব্যাপারটা ভালো লাগে নাই যদিও। রাস্তায় বাইক চালানোর সময় নিজের সেইফটি সবার আগে ভাই!