সাইকেল চালাতে গিয়ে পা ভাঙার স্মৃতিময় গল্প //পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে। বিশেষ করে ছোটবেলার ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা এখন ভাবতেই যেন অনেক বেশি ভালো লাগে। আমরা কত আনন্দময় দিনগুলো পার করেছি, বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে খেলাধুলার মুহূর্তগুলো অনেক বেশি আনন্দদায়ক ছিল। ছোটবেলা সাইকেল কিনবা মোটরসাইকেলের টায়ার বিকেল বেলা বন্ধুদের সাথে চালাতাম। সেই দিনগুলো খুবই আনন্দের ছিল। তবে ছোটবেলা খুব একটা বেশি আশেপাশে মানুষের সাইকেল ছিল না, যদিও একটা দুইটা সাইকেল আমরা দেখতাম সেই সাইকেলগুলো চালানোর খুবি ইচ্ছে হতো। আসলে সাইকেল চালাতে গিয়ে ছোটবেলা অনেক ধরনের ছোট বড় দুর্ঘটনা আমাদের প্রত্যেকেরই জীবনে কম বেশি হয়েছে। তাই আজকে আপনাদের মাঝে স্মৃতির পাতায় সাইকেল চালানোর সেই গল্পটি নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি আজকের গল্প করে ভালো লাগবে।


cycle-2145189_1280.png

source

ছোটবেলা সাইকেল চালানো অনেক কঠিন ছিল, কারণ এখনকার বাচ্চাদের ছোট ছোট সাইকেল পাওয়া যায়।কিন্তু আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এত ছোট সাইকেল কেউ কিনতো না। বাবাদেরও অভাব থাকতো তারাও কিনে দিত না। আশেপাশে চাচা এবং মামাদের যখনই বড় সাইকেল বাড়িতে আসতো সেই সাইকেলগুলো চালানোর খুব ইচ্ছা জাগত। তবে কেউ সাইকেল দিতে চাইতো না, কারণ আমরা প্রথম প্রথম সাইকেল চালাবো এই সাইকেল পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে সেই ভয়ে। তবে আমার মামার একটি সাইকেল ছিল। এই সাইকেলটি নিয়ে মামা একবার আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। আর সেই সাইকেল চালানোর জন্য আমি মামাকে বারবার বলতেছিলাম। মামা বারবার বলতেছিল যে নতুন সাইকেল কিনেছি, এই সাইকেল পড়ে গিয়ে ভেঙে যাবে। তুমি পরে শিখো, কিন্তু আমি বায়না ধরেছিলাম যার কারণে বাবা বলল যে ঠিক আছে ওকে একটু সাইকেল চালানো শিখাও। তাই মামার সাথে আমি আমাদের স্কুল মাঠে আসলাম। সাইকেল চালানো শেখার জন্য।


মজার ব্যাপার হল আমাদের অনেক বন্ধু ছিল, এই বন্ধুদের মধ্যে কেউ যদি আগে সাইকেল চালাতে পারতো, তাহলে তাকে আমরা অনেক বড় চোখে দেখতাম। আর সেই বন্ধুও গর্ব করে আমাদের সামনে এসে সাইকেল চালানো দেখা তো। আর বলতো তোরা কখনোই পারবি না, আসলে আগে বড় বড় সাইকেল ছিল এই সাইকেল গুলো রডের নিজ দিয়ে চালানো হতো। এখন আর সেই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় না। তো বন্ধুরা মামার সাথে এই বড় সাইকেলটি নিয়ে আমি আমাদের হাই স্কুল মাঠে আসলাম। সেই মাঠ অনেক বড় ছিল, মামা পেছনে সাইকেলটি ধরে থাকলো এবং আমাকে সাইকেল চালাতে বলল। আসলে আমি রডের উপর দিয়ে সাইকেলের প্যাডেল নাগাল পাচ্ছিলাম না, তাই মামা বলল রডের নিচ দিয়েই শিখতে হবে।


তাই আমি সাইকেলের রডের নিজ দিয়েই চালানোর চেষ্টা করতেছিলাম। মামা পেছন থেকে সাইকেল ধরেছিল এবং মাঝেমধ্যে মামা সাইকেল একটু ছেড়ে দিত, আমি এক দুই প্যাটেল করেই পড়ে যাইতাম, তখনই মামা ধরতো। এভাবে অনেক সময়ই পার হয়ে গেল। তারপরে আস্তে আস্তে আমি এক দুই প্যাটেল করে চালাতে পারছিলাম। আর যখনই এক দুই প্যাটেল আমি চালাতে পারছিলাম, এত আনন্দিত হচ্ছিলাম তখন যা বলার মতো না। আসলে ছোটবেলা এই সাইকেল চালানো শেখা অনেক ইচ্ছা এবং অনেক আবেগের ছিল।


এভাবে সাইকেল চালাতে চালাতে আমি অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম, পাশে দিয়ে দেখতে পেলাম আইসক্রিম বিক্রি করছে। গ্রামের এই আইসক্রিম গুলো তখন দুই টাকা করেছিলো। নারিকেলের আইসক্রিম খেতে অনেক মজা ছিল। আমরা এই আইসক্রিম খেলাম, মামা তারপরে আবারো আমাকে সাইকেল চালানোর শেখানোর জন্য চেষ্টা করতেছিল। তবে আমি এক দুই তিন চার এভাবে ভালোই প্যাডেল করতে পারছিলাম। তখন যেন অনেক বেশি ভালো লাগতেছিল। আর রডের নিজ দিয়ে সাইকেল চালানো খুবই কঠিন ছিল। তারপরেও চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম এভাবে চালাতে চালাতে আমি একবার পড়ে গেলাম। তবে তখন বেশি ব্যথা পায়নি। মামা তখন বললো আজকে অনেক চালিয়েছো কালকে আবার চালানো শেখাবনি, কিন্তু আমি যখনই এভাবে প্যাডেল মেরে সাইকেল চালাতে পারছিলাম তখন যেন আমার আরো বেশি ভালো লাগলো। আমি আরো কিছুক্ষণ সাইকেল চালানো শিখতে চাইলাম, আর তখনই একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেল আর এই ঘটনাতে কি হয়েছিল সেটা আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করবে ইনশাআল্লাহ। 🙏🤲🙏

গল্পটি চলমান,,,,,,।

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 22 hours ago 

ছোটবেলার স্মৃতিগুলো বেদনাদায়ক হলেও এখন বেশ মধুর মনে হয়। আমার জীবনের বেশ অনেক ঘটনা রয়েছে আপনার আজকের এই ঘটনা পড়তে গিয়ে সেগুলো বেশ মনে আসলো। আমরা প্রথমত রডের নিচে সাইকেল চালাতাম। এরপর রডের উপর। তারপর সিটে। আর আগের সাইকেল গুলো বেশ স্ট্রং ও ভারী ছিল। এখন কোন সাইকেল তো পাতলা লোহা দিয়ে তৈরি।

 21 hours ago 

আসলে এটা ঠিক যে আগে এইরকম ছোট সাইকেল ছিল না। সবগুলো বড় সাইজের সাইকেল।তবে রডের নিচ দিয়ে যে চালানো হয় সেটা আমরা হাফ প্যাটেল বলি।যাই হোক আপনার সাইকেল চালানোর গল্প পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 19 hours ago 

সাইকেল চালাতে গিয়ে ছেলেবেলায় পড়ে যাওয়ার স্মৃতি প্রায় সকলেরই আছে। আপনি যে ধরনের সাইকেল চালানোর কথা বলছেন যাকে আমরা হাফ প্যাডেল বলতাম। এই ধরনের সাইকেল চালানো আজকাল আর দেখাই যায় না। কারণ এখন তো বিভিন্ন সাইজের সাইকেল পাওয়া যায়। আমাদের ছেলেবেলায় এই হাফ প্যাডেল করে সাইকেল চালানোর খুব প্রচলন ছিল।

 19 hours ago 

একটা সময় আমি তো সাইকেল চালাতে বেশ ভয় পেতাম। এজন্য অনেক বড় হয়ে সাইকেল চালানো শিখেছি। আপনি সাইকেল চালানোর বিষয় নিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে অনেক কিছু লিখেছেন। তবে আমি কোনদিন সাইকেল চালানো নিয়ে বিজয়ী হওয়ার চিন্তা করি নাই।

 19 hours ago 

তখনকার বাবা মা আমাদের সাইকেলগুলো এমনই ছিল। আপনার সাইকেল চালানোর কথা পড়ে নিজের সাইকেল চালানো শেখার অতীত গুলো মনে পড়ে গেল। আমিও বাবা রয়েছে প্রথম সাইকেল চালানো শিখছিলাম তারপর অবশ্য আমাকে সুন্দর দেখে একটা সাইকেল কিনে দেওয়া হয়েছিলো।রডের নিচ দিয়ে সাইকেল চালাতে দেখেছি আমার ভাইকে। এভাবে সাইকেল চালানো বেশ কষ্টকর। সাইকেল চালাতে গিয়ে আসলেই কত হাত ভেঙেছে হাত কেটেছে। এই কষ্টগুলো স্মৃতিময়। ভালো লাগলো আপনার সুন্দর একটি পোস্ট পড়ে।

 18 hours ago 

আপনার সাইকেল চালানোর গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে ছোটবেলা আমরাও সাইকেল চালানো শিখেছি এবং সাইকেল চালাতে গিয়ে অনেকবারই পড়ে গিয়েছিলাম। দেখা যাক আপনার আগামী পর্বে কব হয়

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.24
JST 0.036
BTC 98327.91
ETH 3042.37
SBD 4.91