উন্নত জীবনের আশায় জীবন বিসর্জন (ষষ্ঠ পর্ব)
মাঝে মাঝেই সেখানে সেই সশস্ত্র লোকগুলি আসতো এসেই তাদের মাথায় বন্দুক ধরে তারপর তাদেরকে বাড়িতে ভিডিও কল করতে বলা হোতো। বাড়ির লোকজন যখন এই দৃশ্য দেখতো তখন তারা চিৎকার করে কান্নাকাটি করতে থাকতো। এভাবে যাদের বাড়ি থেকে টাকা দিতে পারলো তারা সেই সশস্ত্র লোকগুলোর কাছ থেকে ছাড়া পেলো। আর যারা টাকা দিতে পারল না তাদেরকে তারা গুলি করে মেরে ফেললো। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পর শাকিল গিয়ে পড়ল আরেক দালালের খপ্পরে।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এই দালাল বললো যদি শাকিলরা জনপ্রতি দুই লাখ করে টাকা দেয় তাহলে তারা শাকিলদেরকে ইতালি পৌঁছে দেবে। আর ইতালি পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত তারা শাকিলদের সাথেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত তারা টাকার জন্য আবার বাড়িতে ফোন করে। শাকিলের বাবা আগেই তার সমস্ত টাকা দালালদেরকে দিয়ে দিয়েছে। এখন তার কাছে আর কোন টাকা না থাকায় মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে সেই দালালকে আরো দু লাখ টাকা পাঠায়। এর ভেতরে শাকিল অনেকবার তার সেই বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তার নাম্বারটা সে সব সময় বন্ধ পেয়েছে। যার ফলে শাকিল বুঝে গিয়েছিলো তার সেই বন্ধু আসলে মানব পাচারকারী দলের সদস্য।
টাকা পাওয়ার পর সেই দালালেরা শাকিলদেরকে বলে তাদেরকে এক ধরনের নৌকায় করে ইতালির সীমানা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হবে। তাদেরকে জানানো হয় প্রতি নৌকায় ৩০ জন করে মানুষ। থাকবে কিন্তু যখন রওনা দেয়ার সময় হয় তখন শাকিল দেখতে পায় ৩০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নৌকায় ৭০-৮০ জনের উপর মানুষ উঠানো হয়েছে। এই ধরনের বোটে করে সমুদ্রে যাওয়া মানে নিজের জীবন বিসর্জন দেয়ার শামিল। শাকিল এটা ভালই বুঝতে পারে। কিন্তু তারপরেও তার কিছু করার থাকে না। কারণ সে একটা চিন্তাই করতে থাকে। যেভাবেই হোক তাকে ইতালি পৌঁছোতে হবে। কারণ তার পরিবারের সমস্ত টাকা ইতিমধ্যে তার পিছনে খরচ করা হয়ে গিয়েছে এটা সে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
!upvote 15
💯⚜2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ Participate in the "Seven Network" Community2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ ⚜💯.
This post was manually selected to be voted on by "Seven Network Project". (Manual Curation of Steem Seven).
the post has been upvoted successfully! Remaining bandwidth: 140%
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
শাকিলের বন্ধু সাজিদ এমনটা না করলেও পারতো। শাকিলদের অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই খুব খারাপ। যাইহোক বিভিন্ন দেশের জঙ্গলে আটকে রেখে দালালেরা মারধর করে বাড়ি থেকে টাকা আদায় করে। এমনটা প্রায়ই শোনা যায়। আমাদের এলাকার প্রায় ১০ জন লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে ইতালি গিয়ে সেটেল্ড হয়ে গিয়েছে। তাদের ভাগ্য আসলেই খুব ভালো। যাইহোক দেখা যাক শাকিলের ভাগ্যে কি আছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
৩০ জনের নৌকা ৭০-৮০ জন উঠলো। নৌকার ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী এটি ওভারলোড, তাই যে কোন মুহূর্তেই নৌকাটি ডুবতে পারে, এটিই কমন বিষয়। বিষয়টি সবাই উপলব্ধি করলেও, অগ্রিম টাকা দেওয়া সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব হয় না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা নৌকা উঠে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। শাকিল এর মত অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা এমনই ভুক্তভোগী। গল্পের পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষা রইলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি শিক্ষনীয় পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য।