সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন জরুরী||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আজ-৭ই আশ্বিন|১৪২৯ বঙ্গাব্দ,শরৎকাল |

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগবাসি?আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।আজকে আমি আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আমার আজকের লেখার বিষয় হচ্ছে আমাদের সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কতটা জরুরী। একটা মানুষের পৃথিবীতে সুস্থ হয়ে জন্ম নেওয়ার থেকে বড় প্রাপ্তি আর কোন কিছুই হতে পারে না।সবকিছুতেই সৃষ্টিকর্তার নিকট কতই না অভিযোগ আমাদের।আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়।আমাকে এটা দিলে না,ওটা দিলেনা ইত্যাদি সমস্যাতে জর্জরিত আমি।আমার এতো ল্যাকিংস।দিনের শুরুটা এভাবেই হয়ে থাকে, হতাশা,অপ্রাপ্তি ,কি করলাম।জীবনে আরও ভালো পর্যায়ে যাওয়া সম্ভব ছিল,ইত্যাদি।আসলে এগুলো ভেবে আদৌ কি কোন লাভ আছে।সৃষ্টিকর্তা চাইলে আরও খারাপ অবস্থানেও থাকতে পারতেন।সবসময় আমাদের সৃষ্টিকর্তা যা দিয়েছেন বা দিবেন তা আমাদের ভালোর জন্যই,এটা ভেবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন।আপনি যে সুস্থ,এটাই আসলে অনেক,এর থেকে বেশি কিছু চাওয়াটা হয় তো একধরনের বোকামি হবে।

colorful-1289704_1280.png
সোর্স

মূল ঘটনায় আসা যাক,আজকে কলেজে যাওয়ার সময় বাসে দুজনকে দেখতে পেলাম।মানুষ কতটা অসহায় হতে পারে।স্বামী এবং স্ত্রী দুজনই পঙ্গু,যতদূর সম্ভব জন্ম থেকেই।দুজনের বয়স ৫৫ প্লাস হবে।স্ত্রীর দুই পা এ সমস্যা হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হয়,হাঁটটে পারেননা।আর তার স্বামীর এক হাত আছে,অন্য হাত কনুই পর্যন্ত আছে,সরু এবং অকেজো। আজকে সিট পাইনি তাই ইঞ্জিন কভারে বসতে হয়েছিল।তারা দুজন আমার সামনের সিটেই বসেছিলেন। প্রথমে বুঝতে পারিনি বিষয়টা সিটে বসেছিলেন তো।যখন তারা দুজনে রাজবাড়ী স্টপেজে নেমে যায়,তখন বুঝতে পারি বিষয়টা, যে দুজনেই পঙ্গুত্ব নামক অসহায় জীবনে ভুগছেন। তাদের দুজনের মধ্যে ভদ্র মহিলার স্বামী আগে বাস থেকে নেমে যায়। তারপর তার স্ত্রী হামাগুড়ি দিয়ে বাসের গেইট পর্যন্ত যায়। কিন্তু গেইট থেকে নিচে হামাগুড়ি দিয়ে নামতে পারাটা প্রায় অসম্ভব।তখন তার স্বামীর একহাত দিয়ে কোনমতে কোলে তুলে তাকে বাস থেকে নামতে সাহায্য করে। আসলেই একটা মানুষের হাত,পা না থাকলে যে কতটা কষ্ট হতে পারে নিজের চোখে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।আসলেই আমরা সুস্থ থাকলেও আমাদের কত অভিযোগ সৃষ্টিকর্তার নিকট।না জানি তাদের কতটা অভিযোগ থাকতে পারে সৃষ্টিকর্তার নিকট,তাদের এই পঙ্গুত্বের জীবন নিয়ে। এই অবস্থাতে নিজেকে একবার কল্পনা করলে হয়তো বুঝতে পারবেন,সৃষ্টিকর্তা আপনাকে কতটা দিয়েছেন।তাহলে আর অভিযোগ আসবেনা হয়তো,কৃতজ্ঞতা ছাড়া।আমারও আর কোন অভিযোগ নেই আজকের পর থেকে সৃষ্টিকর্তার নিকট।

ধন্যবাদ আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আমার লেখাটি কেমন লাগলো কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন বন্ধুরা। আবার নতুন কোন লেখা নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের সামনে হাজির হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।আর অবশ্যই যেকোন অবস্থাতেই থাকুননা কেন,নিজের সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন।

আল্লাহ হাফেজ

Sort:  
 2 years ago 

আমরা যখন আমাদের নিজের অবস্থান নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হই তখন যদি আমাদের চারপাশের মানুষগুলোকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করি তাহলেই বুঝতে পারি তাদের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা চলাফেরা করতে পারে না। কিন্তু নিজের জীবিকার জন্য এবং দুমুঠো ভাত জোগাড় করার জন্য সবার কাছে হাত পাতে। সত্যি তাদের জীবন অনেক কষ্টের।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আসলে মানুষের উচ্চাভিলাসী চাওয়া পাওয়া মানুষকে এমন করে তুলে।আমরা অল্পতে সন্তুষ্ট হতে পারি না আর এই জন্যেই এমনটা হয়।আর বাসের ওই ঘটনার মত কত উদাহরণ আমাদের চারপাশে আছে একটু খেয়াল করলেই দেখতে পারবেন।যাইহোক সুন্দর লিখেছেন।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া । শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

আসলেই ঠিক সুস্থতা কত বড় নেয়ামত তা অসুস্থ না হলে সম্পূর্ণভাবে বোঝা যায় না। হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যহীন যদি সুস্থ না থাকা যায়। ওনাদের স্বামী এবং স্ত্রীর জন্য সত্যি খুব খারাপ লাগছে। তাদের বয়স কিন্তু কম না যথেষ্ট পরিমাণ। জীবনের প্রতিটা ধাপ এইভাবে কষ্ট করে তারা পার করে দিচ্ছে। অথচ আমরা সুস্থ থেকেও মনে করি জীবনে অনেক কিছুই পেলাম না। এর জন্যই যে যে অবস্থায় আছি সেখানেই মহান সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আপনার লেখাটি সত্যি অনেক ভালো ছিল আপু। আপনার মধ্যে মনুষত্ববোধ বলতে একটি বিষয় অনেক ভালো কাজ করেছে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শুভ কামনা রইল।

 2 years ago 

মানুষের চাওয়ার কোন শেষ নাই। যত পাই তত পেতে মন চাই। মানুষ কখনো ও চিন্তা করে না হ্যা আমরা তো ওনাদের থেকে অনেক ভালো আছি। মানুষের সবচেয়ে বড় সসম্পদ নিজের দেহ অঙ্গ প্রত্যঙগ গুলো। জীবনের তাগিদে অসহায় মানুষদের জীবন যাএা কথা তুলে ধরছেন আপনার লেখা মাধ্যমে। অনেক ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

জি আপু ঠিক বলেছেন একদম। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আসলে দুনিয়ায় কোন মানুষ সুখী নয়। কোন না কোন দিক থেকে অসুখী। তবে কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যাদের দুঃখ কষ্টগুলো মেনে নেওয়া যায় না। তবে এই বিষয়ে একটাই পরামর্শ থাকবে সমস্ত তার মধ্য থেকেই সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করতে হবে আমাদের। আর নিজেকে ভাবতে শিখতে হবে অন্যের চেয়ে যথেষ্ট ভালো রয়েছি এটাই আমাদের বড় পাওয়া।

 2 years ago 

জি ভাইয়া ঠিক বলেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 92640.23
ETH 3113.67
USDT 1.00
SBD 3.17