পুরান ঢাকার ৯৫ বছরের পুরানো হোটেলে সকালের নাস্তা খাওয়ার অভিজ্ঞতা(🦊১০% লাজুক খ্যাক এর জন্য)
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন।আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার দোয়ায় সবাই ভালো আছেন।আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।সবার কাছে আশা করবো সবাই সাবধানে থাকবেন।কিছুদিন আগে আমার বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম পুরান ঢাকার প্রায় ৯৫ বছর পুরানো হোটেল চৌরঙ্গীতে।পুরান ঢাকায় এইরকম হোটেল বেশ কয়েকটা আছে।এই হোটেলগুলো তারা তাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখছে।এখানে শুধু কিছু লিমিটেড খাবারের আইটেম পাওয়া যায় নির্দিস্ট কিছু সময়ে। আর এইটাই এই হোটেল এর বৈশিষ্ট্য যা প্রায় ৯৫ বছর ধরে চলে আসছে।আজকে এগুলো নিয়ে আপনাদের মাঝে খুঁটি নাটি তুলে ধরব।বেশি কথা না বলে চলেন শুরু করি।
উপরের যে হোটেলটি দেখতে পাচ্ছেন এইটা হচ্ছে প্রায় ৯৫ বছর এর বেশি পুরানো একটা হোটেল।শুনেছি অনেক নামি দামি মানুষজন নাকি এখানে খেয়ে গেছে।এই হোটেলের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে মূলত সকালের নাস্তার জন্য বিখ্যাত।এখন দুপুর এবং সন্ধায় কিছু আইটেম পাওয়া যায়।এই হোটেলটির অবস্থান পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে।রাস্তার পাশে এই হোটেলটি।দেখে হয়তো নরমাল কোন হোটেল বলে মনে হতে পারে। তবে এইটা প্রতিষ্ঠাকাল প্রায় একশত বছরের কাছাকাছি।এখনও এই এই হোটেলটি তার বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে।চলেন এবার খাবারের দিকে নজর দেওয়া যাক।
এইটা হচ্ছে এখানকার সারাদিনের মেনু।আমরা যেহেতু সকালে গেয়েছি তাই আমরা সকালের নাস্তা অর্ডার করেছি।আমরা গেয়েছিলাম ৩ জন।আমার বন্ধু সাব্বির,মাহাফুজ এবং আমি।আমরা ৩ জন মিলে সকালের নাস্তার অর্ডার করলাম লুচি,ডাল এবং ডিম।যেহেতু আমরাই প্রথম কাস্টমার ছিলাম তাই আমাদের খাবার দিতেও দেরি হয় নাই।
অর্ডার দেওয়ার পর আমি আমার বন্ধু মাহাফুজের সাথে একটা সেলফি তুলে নিলাম।আমার বন্ধু সুন্দর করে একটা সকালের পোজ দিয়ে দিল।
এইদিকে আমার বন্ধু সাব্বিরের অবস্থা।কারন সে সারারাত ঘুম না পেরে যখন ভোরে তাকে নিয়ে যাই খাইতে।এই জন্য তার এই অবস্থা।ছবি তোলা শেষ করে খাবারের দিকে নজর দিলাম।আমি খুব আগ্রহি ছিলাম যে কি আছে এই খাবারের মধ্যে।চলেন এবার খাবারের দিকে যাওয়া যাক।
খাবার দেওয়ার সাথে সাথে আমি আবার কিছু ছবি তুলে নিলাম।আসলে খাবারের পরিবেশন দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম।সেই আগেরকার আমলের প্লেটে সুন্দর করে লুচি এবং ডাল দিয়েছে।ডালের উপরে বিট লবণ দেওয়ার এবং সুন্দর করে পেঁয়াজ,মরিচ দিয়ে দিয়েছে।যা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।ডিম ভাজিটি যেন একটু আলাদা হয়েছে দেখে অনেক ভালো লাগতেছিল।ডিমের উপর দিয়ে সুন্দর করে বিট লবনে দেওয়া।আসলে আমি দেখে মুগ্ধ।আসলে এখন সবাই সেই পুরান যুগ ছেড়ে নতুনে চলে এসেছে। আগের আমলের কিছুই আর নাই বললেই চলে। কিন্তু এনাদের অতীতের প্রতিটি টান দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে।আর আপনারা এখন এগুলোর দাম শুনে হয়তো হতভম্ব হতে পারেন।এতো গুলো খাবারের দাম মাত্র ৩৫ টাকা প্রতিজন।দুইটা লুচি,ডাল এবং ডিমের মিলে মাত্র ৩৫ টাকা।লুচি আর ডালের দাম ছিল ২০ টাকা এবং ডিম ১৫ টাকা।
এরপর ছবি তোলার পর্ব শেষ করে আমি আমার খাবারটি আমার কাছে নিয়ে নিলাম।খাবার মুখে দিতেই অন্য রকম একটা স্বাদের অনুভূতি হইলো আমার কাছে।তখন বুঝলাম যে এইটা কেন ৯৫ বছর ধরে চলছে।ডালের স্বাদের ভিতরে একটা ভিন্নতা আছে এবং লুচিটার স্বাদও আলাদা।অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। ডালের উপর বিট লবণ দেওয়াতে ডালের স্বাদটা অনেক বেড়ে গেছে।আর ডিমের কথা নাই বললাম।লুচি,ডাল আর ডিম দিয়ে যখন খাচ্ছিলাম তখন যা লাগতেছিল এক কথায় অসাধারণ।এসব খাওয়া শেষ করে আমরা চা খেয়েছি। আর চা এর ভিতরে একটা বিশেষত্ব ছিল।চলেন চা খাই এখন।
আপনার হয়তো চা কালারটা দেখেই বুঝতে পারতেছেন চা এর স্বাদটা কেমন হবে।আসলে চা তা খেয়ে অন্য রকম একটা ফিল হচ্ছিল।চা এর স্বাদটা যেরকম ছিল আমি পুরো ঢাকা শহরে এইরকম চা এর স্বাদ পাই নাই। আমার কাছে অন্নরকম লেগেছে।আর এর দাম ছিল ১০ টাকা। ১০ টাকা অনুযায়ীয়ে এক কথায় অসাধারণ।
আমি কিন্তু চা একটু বেশি খাই।অনেক জায়গায় যা খেয়েছি তবে এখানকার চা স্বাদটা একটু ভিন্নতা ছিল।চায়ে চুমুক দিতেই যেন একটা শান্তি লাগতেছিল।সকালে নাস্তা করে এইরকম সুন্দর একটি চা আমার সকালটাকে প্রাণবন্ত করে দিয়েছিল।আপনারা চাইলে গিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন।আর চা খাওয়া শেষ করতেই আমাদের সকালের নাস্তা করাও শেষ হয়ে গেলো। আমরা আমাদের খাবারের বিল দিয়ে চলে আসলাম।
আর এখানেই আমি শেষ করলাম আমার বন্ধুদের সাথে ৯৫ বছরের হোটেলে সকালের নাস্তা খাওয়ার অনুভূতি।জানি না কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছি আপনাদের মাঝে।যদি কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমার চোখে দেখবেন।সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি।
ফটোগ্রাফি | রবিউল ইসলাম |
---|---|
ডিভাইস | Realme 7 Pro |
ছবি তোলার স্থান | লোকেশন |
আমি রবিউল ইসলাম। আমার স্টীমিট আইডি @rabiul365। আমি একজন বাংলাদেশি।আমি আমার দেশকে নিয়ে গর্ববোধ করি।কারন আমি আমার মায়ের ভাষায় কথা বলি।দেশ আমার ভাষা আমার।আমি বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছি।আমি একজন সপ্ন বিভোর মানুষ।সপ্ন দেখতে পছন্দ করি।ভ্রমন আমার খুব পছন্দের কাজ।ভ্রমন ভালবাসি।মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবকে প্রকাশ করতে আঁকাআঁকি করে থাকি।চেষ্টা করি নতুন কিছু করার,কারন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়।

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।

95 বছর পুরনো হোটেলটি দেখে সত্যি আশ্চর্য হলাম। আমি পুরান ঢাকাতে আজো কখনো যায়নি তবে এমন সুন্দর একটি হোটেল আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এটি সত্যি অনেক চমৎকার তাছাড়া আপনি হোটেলে অনেক সুন্দর সুন্দর খাবার খেলেন, এগুলো দেখতে সত্যি অনেক লোভনীয় ছিল। সবমিলিয়ে আপনি পোস্টটি অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
বাহ এতো বছর পুরোনো। ভাবতেছি আর ৫ বছর পর সেখানে গিয়ে একটা রিভিউ দিবো। তখন হবে ১০০ বছর এর পুরোনো। খাবার গুলা তো দেখে মনে হচ্ছে খুবই স্বাদের ছিলো। বিশেষ করে চায়ের রঙ টা খুব ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে খুবই মজা হয়েছিলো চা টি।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই চা টা অন্যরকম ছিল। ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্য দিয়ে আমার পাশে থাকার জন্য।
এই ধরনের রেস্টুরেন্ট রিভিউ আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তবে আমি এই রেষ্টুরেন্টের একটি ভিডিও দেখেছি।যেটা বাংলাদেশের কোন একজন স্বনামধন্য ফুড ব্লগারের করা ভিডিওটি। নাস্তা দেখেই মনে হচ্ছে সাদ ছিল চমৎকার। আর এই জামানায় এমন দামে খাবার বিক্রি করা খুবই কঠিন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার কাছে ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। আর ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
৯৫ বছরের পুরানো হোটেলে নাস্তা করেছেন সত্যি আপনি ভাগ্যবান। কেননা এতো পুরোনো একটি হোটেল এখনো আছে অবাক হলাম আমি। হোটেলটিতে সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন আপনি। অনেক কিছুই খেয়েছেন। স্বল্প মূল্যে সব পাওয়া যায় দেখছি। আপনার অনুভূতি সম্পর্কে সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মতামতের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী রেস্টুরেন্টের খাবার গুলো আসলেই অনেক মজা হয়ে থাকে। আমি একবার পুরনো ঢাকায় অবস্থিত বিউটি বোর্ডিংয়ে একরাত ছিলাম। সেখানকার খাবার এবং পরিবেশ আমার এখনো মনে আছে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে তথ্যটি জেনে রাখলাম। আশা করি কোন একদিন সময় হলে গিয়ে দেখবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন এই ধরনের খাবার গুলো অনেক টেস্ট হয়ে থাকে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
হোটেলে সকালের নাস্তা করার মজাই আলাদা ।আপনি অনেক পুরাতন একটি হোটেলে নাস্তা করার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে বিষয়টি ।শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
পুরান ঢাকার চৌরঙ্গী রেস্টুরেন্টে আপনি এবং আপনার বন্ধুরা মিলে অনেক সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন। সেখানে কম দামে অনেক ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়। এত বছর পরেও রেস্টুরেন্টটি টিকে রয়েছে দেখে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী সব খাবারের দোকান আছে এটা জানতাম কিন্তু ৯৫ বছরের পুরনো হোটেল আজ দেখলাম। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার গুলো খেতে অনেকই খুব পছন্দ করে সে সাথে আমারও অনেক পছন্দ। আপনার বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করার পাশাপাশি সকালের নাস্তা সেরে নিলেন জেনে খুব ভালো লাগলো। এত সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাই আপনার এত সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য দিয়ে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।
95 বছর পর্যন্ত একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখা এটা খুবই একটি কঠিন ব্যাপার । তাহলে হোটেলটিকে এতো দিন টিকিয়ে সবাইকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এটা খুবই একটি ভালো বিষয় । আপনি এই হোটেলটিকে আমাদের সাথে পরিচিত করিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ । আপনার বিশেষ মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ও ধন্যবাদ ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই।এত সুন্দর মন্তব্য করে আমার পাশে থাকার জন্য।
পুরান ঢাকা সম্পর্কে খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে। তবে পুরনো আমলের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এই ধরনের রেষ্টুরেন্টগুলো থাকা খুব জরুরী। খাবারের দাম দেখছি অনেক কম। আপনি সহ আপনার দুজন বন্ধু সাব্বির এবং মাহফুজ মিলে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনাদের সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।