চোর ধরা দেখার অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি।
চোর ধরা দেখার অনুভূতি
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি চোর ধরা দেখার অনুভূতি নিয়ে। আসলে এখন এমন চোর দেখা যায় না বলেই চলে। আসলে চোরের বাড়ি ও দূরে নয়, আমাদের এলাকার ছেলে। আর বয়স ও তেমন বেশি নয়( ১৫-১৬) বছর হবে হয়তো। তবে আমাদের কয়েক বাড়ির পাশে সন্ত্রাস রয়েছে। যদিও মেইন সন্ত্রাস অনেক আগে পুলিশে মেরে ফেলেছে তবে তার ছোট ভাই ও সন্ত্রাস। এতোকাল বাড়ির বাইরে ছিল তবে বছর খানেক ধরে বাড়িতে নিরিবিলি রয়েছে। অবশ্যই নিরিবিলি বললে ভুল হবে কারণ চোরের সম্ভাব কখনো পরিবর্তন হয় না।সেই সন্ত্রাস আমাদের এলাকায় গরীব ছেলেদের বাজে দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আসলে তার পাশের বাড়ি এই চোরের।তবে চোরের বাবা মানুষের বাড়িতে কাজ করে খায়।তবে চোরের পরিবারের কেউ আর চোর নয়।তারা মানুষ দরিদ্র হলেও কাজকর্ম করে খায়।যাইহোক এটা কিন্তু অরজিনাল চোর হয়েছে। আমাদের এলাকায় অনেক কিছু চুরি করে। যাই হোক তাহলে দেখে আসি আমার পোস্ট।
আমরা যখন ফোন পেলাম তখন রাত চারটা বাজে। আসলে আমার ভাসুরের অন্য ভাইয়েরা আমেরিকায় থাকে আর একজন ওসি ঢাকায় থাকে।তবে বাড়িতে ভাই আর ভাবি, তার ছেলে ছেলের বউ ও ভাইয়ের মা থাকেন।তবে বিল্ডিং এর শুধু ছেলে আর ছেলের বউ থাকে। ভাইয়ের ছেলের নাম শান্ত। দুই মাস আগে শান্তর চাচা বাহির থেকে আইফোন এনেছিল সেটা ও চুরি করে নিয়ে গেছে আবার শান্তর বউয়ের ফোন ও নিয়েছে।এবার আবার গতকাল রাতে এসেছে। যদিও আগের বার ধরা পরেনি । আর ভাইয়েরা আগের ঘরে থাকে । বাড়িতে তিনতলা বিল্ডিং করবে । তবে একতলা কমপ্লিট হয়েছে দোতালা ছাদ করবে তারপর সব বাকি কাজ করবে । তাই চিলেকোঠার দরজা দেয়নি উপরে ওভাবেই রয়েছে ছাদে । যাইহোক চোরটি গাছ বেয়ে বেয়ে ছাদের উপরে উঠে গিয়েছে। তারপর চিলেকোঠায় দরজা না থাকায় ভিতর দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল। প্রথম গিয়ে তার দাদির টাকার ব্যাগ নিয়ে এসেছে ছেলে আর ছেলের বউয়ের ঘরে ।এসেই আগে ছেলের মোবাইলটা পকেটে নিয়েছে । আর শান্তর ছেলের জুস ছিল খাটের সামনে বসে বসে খাচ্ছে। ইতিমধ্যে জুসর প্যাকেট থেকে বের করা শব্দ পেয়েছে শান্ত। সাথে সাথে জেগে গিয়েছে। তারপর চোরকে ধরে সবাইকে ফোন দিচ্ছে। আমাদের বাড়িতে থেকে সবাই গেল তারপর আশেপাশে থেকেও লোকজন এলো। সবাই কিছু উত্তম মাধ্যম দিল তার পরেও সে কিছু স্বীকার করছে না। অবশেষে স্বীকার করলো আগের ফোন দুটি নাকি ১৫০০০ টাকা বিক্রি করেছে। তারপর সাথে কে কে আছে তাও বলতে যাচ্ছিল না । এভাবে রাত ভোর হয়ে গেল।
তারপর সকাল হলে চোরকে বাইরে এনে গাছের সাথে বেঁধে রাখল।আসলে এতো মানুষ হয়েছে বলে বুঝানো মুশকিল। যাইহোক যেহেতু এলাকার ছেলে তাই তার বাবাকে জিজ্ঞেস করা হলো ছেলেকে কি করবে। তার বাবা মা বলল সবার বাড়ি থেকে এভাবে চুরি করে ওকে পুলিশি দিয়ে দিতে। আমাদের কিছু করার নেই আপনাদের বলে নিয়ে গেলাম আবার দুদিন পরে চুরি করবো আমরা তখন কি করব। চোরের বাবা মা আর ও অনেকের সম্মতিতে পুলিশকে ফোন দেয়া হলো। আসলে শান্তর চাচা ঢাকা থেকে ফোন দিল পুলিশকে।
কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ চলে আসলো। পুলিশ এসে চোরকে সব কিছু জিজ্ঞাসা করল কিন্তু চোর তখনও সত্যি কথা বলছিল না। সবকিছু লেখার পর কেস নিল তারপরে একটা ঘরের ভিতরে গিয়ে অনেক মারলো । মারার পরে বলে দিল আগের আইফোন গুলো কার কাছে বিক্রি করেছে। আসলে যারা ওরে দিয়ে চুরি করিয়েছে তারাই ওকে একটা বাটন ফোন দিয়ে আইফোন গুলো নিয়েছে,আর ১৫০০০ টাকা দিয়েছে ।যাইহোক অবশেষে পুলিশ চোরকে নিয়ে যারা আগের চুরি করা মোবাইল ব্যবহার করেছে তাদের বাসায় গেল। অবশ্যই পুলিশের কথা শুনে তার আগেই পালিয়ে গেছে বাড়িতে কেউ ছিল না তবে বলেছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আগের ফোনগুলো ফেরত দিতে । তারপর পুলিশ চোরটিকে নিয়ে গেল। যদিও চোরটিকে দেখে অনেক মায়া লেগেছিল কিন্তু ফোনগুলোবা অন্যান্য আরো কিছু জিনিস চুরি করার কথা শুনে বেশ খারাপ লেগেছে। আসলে আমাদের সবারই উচিত ছোট বেলা থেকে সন্তানকে সত্য কথা শিক্ষানো আর সৎ পথে চলার চেষ্টা করানো। আসলে সন্তান ভালো হলে বাবা-মার ভালো হয়। তবে অনেকদিন ধরে পরে চোর ধরার অনুভূতিগুলো বেশ ভালো লেগেছে। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 2/5) Get profit votes with @tipU :)
চোর ধরার দেখা অনুভূতি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আগে ফোন চুরি করে ধরা খাইনি ভেবে তার সাহস আরো বেড়ে গিয়েছে। পরবর্তীতে আবার চুরি করার জন্য এসেছে। পুলিশে দিয়ে দিয়েছে জেনে ভালোই লাগলো। কারণ আবার ছাড়া পেলে এরকম করার সাহস পাবে না। কিছুদিন আগে আমাদের দোকানেও এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল অন্য কোন সময় শেয়ার করব। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু পোস্ট পড়ে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি। আমার মনে হয় ব্লগিং জগতে প্রথম এই দৃশ্য দেখলাম। তবে যাই হোক আমাদের কিন্তু সাবধানে থাকতে হবে, আর নিজের জিনিসগুলো সাবধানে রাখতে হবে। সবাইকে এই সমস্ত বিষয়ে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে এভাবেই আমাদের সমাজটা কিন্তু চোর মুক্ত রূপে গড়ে তুলতে পারবে।
আসলে ভাইয়া সাবধানে তো থাকতেই হবে, ধন্যবাদ আপনাকে।
চোর ধরারর সব ফটোগ্রাফি ও চোরের চুরি করতে যাওয়ার বিস্তারিত জেনে তো হাঁসি পেলো খুব।কি চোর রে বাবা চুরি করতে এসে জুসের লোভ সামলাতে না পেরে শব্দ করে জুস খেতে গিয়ে অবশেষে ধরা পরতে হলো।বেচারা চোর।চোরটিকে পুলিশকে দিয়ে ভালো করেছে। আসলে শুধু চোর কেন খুনি মানুষ কে এইরকম ভাবে দেখলেও মায়া হয়।ধন্যবাদ আপু চোর ধরার বিস্তারিত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু দেখে মায়া হয় কিন্তু ওদের কাজকর্ম দেখে কিছু করার থাকে না। ধন্যবাদ আপু।
এই বয়সে এরকম প্রফেশন বেছে নিয়েছে তার মানে বুঝে নিতে হবে হয়তো পারিবারিক শিক্ষার অভাব আছে অথবা আশেপাশের মানুষদের থেকে খারাপ কিছু গ্রহণ করেছে। যদিও গাছ বেয়ে বিল্ডিংএ উঠে, তারপর ঘরের ভেতর থেকে চুরি করার এই ব্যাপারটা আমাদের এখানেও বেশ প্রচলিত। যাই হোক, আগে চুরি হওয়া আইফোন এবং বর্তমানে চুরি হওয়া সব কিছু ফেরত পাওয়া গেলেই হল। যদিও এদের মারধর না দিলে স্বীকার করতে চায় না কোন কিছু, এমন ভাবে ট্রেনিং দেওয়া থাকে। আসলে আপু, একে দেখে আমার নিজেরও কিন্তু মায়া হচ্ছে, তবে কি আর করা যাবে।
আসলে ভাইয়া এই সব মানুষের পারিবারিক শিক্ষার অনেক অভাব রয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি হয়তো পরিবারে অভাবও রয়েছে। একটা কথা আছে না আপু, "অভাবে স্বভাব নষ্ট"। এদের অবস্থা হয়েছে তাই। হয়তো অভাবের কারণেই অল্প বয়সে, চুরির স্বভাবটা তাদের মধ্যে জন্মে গেছে।
বর্তমানে মোবাইল চুরির ঘটনা প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। এতো দামি দামি ফোন চুরি করে চোরেরা একেবারে কম দামে বিক্রি করে দেয়। চোরটাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। নয়তোবা কিছু উত্তম মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিলে, কিছুদিন পর আবারো চুরি করতো। এমন ঘটনা দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।