ট্যুর থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার সম্মুখীন!

🌼 হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? আশাকরছি সকলে ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ।

আজকে আবারো চলে আসলাম নতুন আরও একটি লেখা নিয়ে। আশা করি আজকের লেখাটিও আপনাদের সকলেরই ভালো লাগবে।

আপনাদের সাথে এতোদিন ধরে আমার কাপ্তাই এবং রাগামাটির ট্যুরের মুহূর্ত গুলো শেয়ার করেছি এবং বরাবরই আমার অনেক ভালো লেগেছে আপনাদের সাথে শেয়ার করে। তবে আমি লাস্ট একটি পোস্ট এর নিচের লাইনে বলেছিলাম যে ট্যুর তো খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু ট্যুর এর পরবর্তী মুহূর্ত অর্থাৎ একেবারে শেষ মুহূর্ত ছিলো অসম্ভব ভয়ানক এবং এমন একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন আমাদের হতে হবে। সেটা আমরা কেউই ভাবিনি। তো ভাবলাম সেটাও আপনাদের সাথে অল্প একটু শেয়ার করা যাক।

যাইহোক বিষয়টি হলো, আমরা খাওয়া-দাওয়া করার পরে জুম রেস্তোরাতে গিয়েছিলাম এবং সেখানে কিছুক্ষণ চা, আইসক্রিম এসব খাওয়ার পরে আমরা যথারীতি সিএনজিতে চলে এসেছিলাম এবং সিএনজি আমাদেরকে বাস কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিলো। তো আগেই বলেছিলাম যে আমরা দশজন ছিলাম এবং ১০ জন ই কিন্তু মেয়ে ছিলাম। অর্থাৎ কোনো ছেলের সাথে যাইনি। এটা কেবো বলছি সেটা পরবর্তীতে বুঝতে পারবেন। যাইহোক আমরা টিকেট কেটে অর্থাৎ বাসের টিকেট কেটে যথারীতি বাসে উঠে গেলাম। তখন প্রায় সন্ধ্যা সাতটা।

আর যেহেতু প্রায় সারাদিন অনেক বেশি ঘুরাঘুরি হয়েছে। তাই অনেক বেশি টায়ার্ড ছিলাম এবং সে কারণেই আমি বাসে উঠার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পরেছিলাম। আমরা মোটামুটি সকলেই ঘুমিয়ে পরেছিলাম। কিন্তু হুট করেই ঘুম ভেঙে গেলো একটা শোরগোল এর জন্য এবং একটা মানুষ আসলে যখন গভীর ঘুম থেকে উঠে। তখন কিন্তু কিছু একটা চিন্তা করতে কিংবা সামনে কি ঘটছে সেটা বুঝতে কিছুটা সময় লাগে। তো আমাদের ও তাই হচ্ছিলো। তার উপরে আমরা একদম সামনের সেটগুলোতে বসে ছিলাম।

যাইহোক, আমি প্রথম দেখাতেই শোরগোল দেখতে পাচ্ছিলাম এবং আমার চোখের সামনে অর্থাৎ ঘুম থেকে উঠেই আমি যে মুহূর্তটি সম্মুখীন হয়েছি। সেটা হলো বাস কন্ডাকটার বাসের দরজাটি কোনোরকম চেপে ধরেছে এবং বাইরে থেকে বেশ কয়েকজন ছেলে বাসের দরজাটি ভাঙার চেষ্টা করছে। আমি তখন ভাবলাম যে হয়তো চোর কিংবা ছিনতাইকারীর কবলে পরেছে বাস। কারণ তখন বাইরে একেবারে অন্ধকার এবং তখনও আমরা রাউজান এর মধ্যে ছিলাম।

তো এর পরে আসলে যা দেখতে পেলাম যে, কয়েকজন ছেলে অলরেডি রড হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে প্রবেশ করেছে এবং ড্রাইভারকে মারতে চাইছে এবং প্যাসেঞ্জারদের সাথে অনেক গরম হয়ে যাচ্ছিলো। তো এর একটু পর মুহূর্তেই মানুষের এতো ভিড় অর্থাৎ মানুষ অলরেডি বাসে জানালা দিয়ে বাসে ঢুকে যাচ্ছিলো লাফিয়ে লাফিয়ে। তো তখন দেখলাম যে বাসের ড্রাইভার ও নেই, কন্ডাক্টার ও নেই। অর্থাৎ অলরেডি দুইজনেই পালিয়ে গিয়েছে।

তো এরপরে দেখলাম যে কয়েকজন ছেলে আবার ও রড নিয়ে বাসে উঠলো এবং প্যাসেঞ্জারদের সাথে কেমন উগ্র ব্যবহার করা শুরু করলো। চিৎকার চেঁচামেচি করা শুরু করলো। কিন্তু তারপরে আরো কিছু ছেলে উঠে ওই ছেলেগুলোকে নামিয়ে দিলো এবং আমাদেরকে বলল যে আমরা যেনো বাস থেকে নেমে যাই।সত্যি কথা বলতে এই গ্রামের মাঝে তাও আবার রাতের বেলা কেমন যে পরিস্থিতি সম্মুখীন হয়েছিলাম। সেটা হয়তো এখন লেখায় প্রকাশ করলে আপনারা কখনোই বুঝতে পারবেন না। কিন্তু আমিও বুঝাতে পারবো না তখন এর ভয়টা ঠিক তেমন ছিলো।কারণ তখন মনে হচ্ছিলো যে মৃত্যুকে বোধহয় খুব কাছ থেকে দেখেছি। কারণ ওই যে বললাম, ওই ছেলেগুলো এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছিলো!

যাইহোক, পরবর্তীতে বাস থেকে নেমে যতোটুকু শুনলাম। সেটা হলো এই কোম্পানির আরও একটি বাস পিছনে একটা লোককে অনেক মারাত্মক ভাবে এক্সিডেন্ট করে পালিয়ে গিয়েছে এবং সে কারণে মানুষজন এবং স্টুডেন্টরা এই বাসটিকে ধরেছে এবং স্বাভাবিকভাবেই সকলের ভিড়ের মাঝে কিছু এমন মানুষ থাকে। যারা অতিরিক্ত ঝামেলা করার মুডে থাকে। তো ওরাই মূলত বাসের প্যাসেঞ্জারে মারতে চাইছিলো।কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই আরো কিছু ভালো মানুষ থাকে। উনারা সেটা করতে দেয়নি। যাই হোক, পরবর্তীতে আসলে দোকানদারদের জিজ্ঞেস করে অনেক মানুষদের জিজ্ঞেস করলাম যে কিভাবে এখন চট্টগ্রাম পৌঁছানো যায়।তো উনারা যেভাবে বলে দিলেন পরবর্তীতে সেভাবেই বাসায় ফিরলাম এবং বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় অনেক রাত হয়ে গিয়েছিলো। যদিও বাসায় এসে ঘটনাগুলো আর বলিনি। কারণ স্বাভাবিক ঘটনাগুলো বললে আসলে সকলেই অনেক ভয় পেয়ে যেতো সে কারণে।

যাইহোক, এটাই ছিল আসলে ঘটনা। অর্থাৎ সারাদিন খুব ভালো ছিলাম। কিন্তু আসার মুহূর্তে এরকম একটা পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়াটা কখনোই ভাবিনি। তবে এটা ভালো যে শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছিলাম। তবে তখন আমরা সকলে গাড়িতে বসেও ছেলেটির জন্যও মন খারাপ করছিলাম। অর্থাৎ যে এক্সিডেন্ট করেছে। আসলে এতে অবশ্যই বাস ড্রাইভারদের দোষ রয়েছে। কারণ ওরা আসলে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রায় সময় ঘটায়। যেটা আসলে অনেক বেশি অনুচিত। কারণ যে পরিবারের মানুষ মারা যায়। সেই পরিবারের মানুষ ই জানে যে তার আসলে কতোটা ক্ষতি হলো।

আশা করছি লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।এই প্লাটফর্ম এর এই লেখাগুলো থেকে যাবে চিরকাল সে সাথে থেকে যাবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যগুলোও।তাই আশা করছি আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য দেখতে পাবো।