নাটক রিভিউ || দূরদেশ...
হ্যালো বন্ধুরা , কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালো আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম , আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷
আজকে আমি খাইরুল বাসার এবং তানজিম সায়ারা তটিনীর দূরদেশ নাটকটি রিভিউ করবো ৷ এই নাটকটি আমি গতকাল রাতে দেখেছিলাম ৷ গতকাল রাতে তেমন একটা ভালো লাগছে না, তাই ইউটিউবে গিয়ে কয়েকটা গান শোনার পর এই নাটকটি দেখে বেশ লম্ব একটা ঘুম দিয়েছি ৷ আজ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে ভাবলাম এই নাটকের গল্পটা আপনাদের মাঝে তুলে ধরি ৷ এই নাটকের গল্প কাহিনী বেশ ভালোই লেগেছে আমার ৷ তাই চলে আসলাম এই নাটকটির গল্প কাহিনী আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে ৷ আশা রাখি আপনাদেরও সবার ভালো লাগবে , তো চলুন এবার শুরু করা যাক ..!
নাটক | দূরদেশ |
---|---|
পরিচালক | রুবেল হাসান |
শিল্পী | খাইরুল বাসার , তানজিম সায়ারা তটিনী এবং আরও অনেকেই |
গল্প ও চিত্রনাট্য | মেজবাহ উদ্দিন সুমন |
প্রযোজক | ফখরুল রেয়া ও ডাঃ রেবেকা মনি পারভেজ |
ভাষা | বাংলা |
দৈর্ঘ্য | ৪৫ মিনিট |
প্রকাশ | ইউটিউব , ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ইং |
এই নাটকের শুরুতে সজলের বাবা মাকে দেখা যায় ৷ তারা ঘুমিয়ে আছে ৷ ঘুমের ঘোরে সজলের মা সজলের ডাক শুনতে পায় ৷ আর তখনই হঠাৎ করে তার মায়ের ঘুমটা ভেঙ্গে যায় ৷ ছেলের কথা ভেবে অস্থির হয়ে পড়ে সজলের মা ৷ সজলের বাবা পাশেই শুয়ে ছিলো , স্ত্রীর এমন আচরণে তারও ঘুম ভেঙ্গে যায় ৷ ঘুম থেকে উঠে সজলের বাবা বুঝতে পারে তার স্ত্রীর এখন ছেলের কথা ভাবছে ৷ ছেলে দেশের বাইরে থাকে , তার এখানে এখন আসার কথা নয় ৷ স্ত্রীকে বুঝিয়ে ঘুমিয়ে যেতে বলে , আর এমন সময়ই ছেলের ফোন আসে বাবার ফোনে ৷ ছেলে ফোন করেছে শুনে মা ভীষণ খুশি হয় ৷ এরপর সজলের বাবা ফোনটা রিসিভ করে সজলের মায়ের কাছে দেয় ৷ তারপর...
তারপর নাটকের গল্পটা আগের দৃশ্যে ফিরে নেওয়া হয় ৷
সজল এই গল্পের নায়ক ৷ তার পরিবারের বাবা মা ছাড়াও ছোট এক ভাই বোন আছে ৷ সে দেশের বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য সব কাজ সম্পূর্ণও করেছে ৷ কিছুদিনের মধ্যেই সে দেশের বাইরে চলে যাবে ৷ সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি জব করবে সজল ৷
পরিবারের পরও তার একটা প্রিয় মানুষ আছে ৷ তার নাম মিতু , এই গল্পের নায়িকা ৷ মিতু এবং সজল তারা দুজন দুজনকে অসম্ভব ভালোবাসে ৷ সজন দেশের বাইরে চলে যাবে , এজন্য মিতুর সাথে দেখা করতে আসে ৷ মিতু সজলকে ছাড়াতে রাজি নয় ৷ কিন্তু সজল মিতুকে বুঝিয়ে তার থেকে বিদায় নেয় ৷ সজলের এবার দেশের বাইরে যাওয়া সময় হয়েছে ৷ তাই পরিবারের সবার থেকে বিদায় নেয় সজন ৷ বাবা মায়ের দোয়া আর ভালোবাসা নিয়ে বের হয় সজল ৷ আসার পথে কিছু সময়ের জন্য দেখা হয় মিতুর সাথেও ৷
ঠিকঠাক ভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় আসে সজন ৷ এখানে তার ভার্সিটির এক বড় ভাইয়ের কাছে উঠে ৷ এখানে এসে আরো কয়েক জনের সাথে পরিচয় হয় সজলের ৷ শুরুর সময়টা বেশ ভালোই যাচ্ছে সজলের ৷
দেশের বাইরে এসে সজল তার পরিবার এবং প্রিয় মানুষটির সাথে বেশ কিছুক্ষণ ফোনে গল্প করে ৷ তাদের দেখানোর চেষ্টা করে তার আশেপাশে জায়গা আর পরিবেশ টুকু ৷ এরপর পরিবার এবং প্রিয় মানুষটি তাকে সাবধানে থাকতে বলে ৷ তাদের সাথে কথা বলে সজল সেদিন ঘুমিয়ে পড়ে ৷
পরের কয়েকদিন সজন তার ভার্সিটির বড় ভাইয়ের সাথে অস্ট্রেলিয়ার কিছু জায়গা ঘুরে দেখার চেষ্টা করে ৷ বড় ভাই তাকে বেশ কিছু জায়গা ঘুরেও দেখায় ৷ আপাতত বেশ ভালোই যাচ্ছে সজলের ৷ এরমধ্যে এদিকে সজলের বাবা কি করবে বুঝে উঠতে পারে না ৷ অনেক ধার দেনা করে ছেলেকে দেশের বাইরে পাঠিয়েছে ৷ ছেলে দেশের বাইরে গিয়ে কি করছে বুঝতে পারে না ৷ এদিকে পরিবারের খরচ মানুষের দেনা মিটাতে পারছে না সজলের বাবা ৷
পরিবারের কাছে থেকে সজলের চাপ আসতে শুরু করে ৷ তাকে ফোন করে টাকা পাঠানোর জন্য বলে তার বাবা ৷ অনেক টাকা দেনা করেছে তার জন্য তার বাবা ৷ এসব দেনা মিটানো এবং ছোট ভাই বোনের খরচ চালানোর জন্য প্রচুর টাকা প্রয়োজন ৷ এদিকে সজল তখনও কোনো জব পায়নি ৷ শেষমেশ কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে সজল একটা রেস্টুরেন্টের কাজ এবং ফুট ডেলিভারির কাজ নেয় ৷ এসব কাজ করেও সব হিসাব মিটছে না ৷ এজন্য সজল আরো কিছু কাজ করতে শুরু করে ৷ দিনরাত এক করে কাজ করে যাচ্ছে সজল ৷
একটার পর একটা কাজে প্রচুর ব্যস্ত থাকায় সজন নিজেকে সময় দিতে পারে না ৷ এভাবেই একদিন অসুস্থ হয়ে পরে সজল ৷ এদিকে পরিবার মানুষ জন ভালো নেই ৷ পাওনা টাকা ফিরত দিতে না পেরে মানুষের কথা শুনছে তার বাবা ৷ পরিবারে টাকা পাঠানোটা খুব জরুরি ৷ নিজেও অসুস্থ কি করবে বুঝে উঠতে পারে না সজল ৷ এরপর এক বড় ভাইয়ের কাছে ডলার ধার নিয়ে পরিবারের কাছে পাঠায় ৷ সামান্য সুস্থ হতে না হতেই আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সজল ৷ এভাবেই যাচ্ছে তার দিনকাল ৷
পরিবার , ব্যস্ততা , প্রিয় মানুষ , নিজের ভবিষ্যৎ সব কিছুই তাকে শেষ করে দিচ্ছে ৷ মানসিক ভাবে সজল ভীষণ দুর্বল ৷ কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা এসময় ৷ এমনই ভাবে ফুড ডেলিভারির কাজে যায় সজল ৷ আর হঠাৎ করেই তার এক্সিডেন্ট হয়ে যায় ৷ তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ৷ কিন্ত এবার আর তাকে ফেরানো যায় নি ৷ ভার্সিটির বড় ভাইয়েরা তার পরিবারের কাছে ফোন দেয় ৷ আর এই ফোনটিই রিসিভ করে সজলের বাবা সে রাতে তার স্ত্রীর কাছে দেয় ৷ সজলের মা এমন খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে ৷ তিনি ভাবতে পারেনি এমন খবর শুনবে ৷ এরপর সজলের মৃত লাশ দেশে নিয়ে আসা হয় ৷ পরিবার প্রিয় মানুষ সবাই সজলকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন ৷ আর এখানেই এই গল্পটা শেষ হয় ৷
রেটিং:-০৯
আমার মতামত:-
দূরদেশ এই নাটকটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে ৷ নাটকের গল্প সবার অভিনয় সব মিলিয়ে দারুণ ছিলো ৷ এমনিতেও খাইরুল বাসার এবং তানজিম সায়ারা তটিনা এ দুজনের ই নাটক আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগে ৷ তবে এই নাটকটি একটু অন্যরকম ছিলো ৷ হয়তো বাস্তবতাকেই তুলে ধরা হয়েছে এই গল্পে ৷ একটা ছেলের জীবন ততটাও সহজ নয় ৷ অনেকেই এভাবে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিবার প্রিয় মানুষ সব কিছু রেখে ৷ সেখানে গিয়ে এমন শারীরিক মানসিক চাপ গুলো সহ্য করে বেঁচে থাকা সত্যিই খুবই কঠিন ৷ কেউ বেঁচে মরে থাকছে সেখানে , কেউবা মৃত লাশ হয়ে ফিরছে এভাবে ৷ যাই হোক , সব মিলিয়ে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে নাটকটি ৷ আশা করি আপনাদেরও সবার ভালো লাগবে ৷ চাইলে নাটকটি দেখে আসতে পারেন ৷ নিচে নাটকের লিংক দেওয়া আছে ৷ ধন্যবাদ..
নাটকের লিংক
🙏 ধন্যবাদ সবাইকে 🙏
আমার নাম নিরব ৷ জাতীয়তা বাংলাদেশী ৷ মাতৃভাষা বাংলা ৷ বাংলায় কথা বলতে এবং লিখতে আমি অসম্ভব ভালোবাসি ৷ পেশাগত দিক দিয়ে আমি একজন ছাত্র , পড়াশোনা করছি অনার্স প্রথম বর্ষে ৷ পাশাপাশি স্টিমিটে ব্লগিং করছি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ৷ আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও আর্ট , ফটোগ্রাফি এবং লেখালেখি করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ সব সময় শেখার চেষ্টা করি , নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে আমার খুবই ভালো লাগে ৷ আমি বন্ধুদের সাথে সময় কাটতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও পরিবারের সাথে থাকতে এবং সময় কাটাতে আমার প্রচুর ভালো লাগে ৷ আমি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৷ আমি আমার ধর্মকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং সম্মান করি ৷ আমি স্টিমিটে জয়েন করি ২০২০ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৷ ধ ন্য বা দ ...
দূরদেশ নাটকটির রিভিউ করে আজ আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। তটিনীর অভিনয় তো আমার কাছে অসম্ভব সুন্দর লাগে। বর্তমানের নাটকে অভিনয়ের একটি জনপ্রিয় মুখ তটিনী।নাটক দেখতে আমি ভীষণ পছন্দ করি তবে সময়ের অভাবে সব সময় দেখা হয়ে ওঠেনা। তবে আমি এখনো খাবার খেতে বসে সব সময় নাটক দেখি। বাংলাদেশের এই নাটকগুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। খুব সুন্দরভাবে নাটকটি রিভিউ করেছেন পড়ে ভালো লাগলো। যদিও নাটকটি এখনো দেখা হয়নি তবে আপনার পোস্ট করে কাহিনী জেনে নিলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
এই জুটির নাটক আমার কাছেও বেশ ভালো লাগে। তার উপর আজকের রিভিউ করা নাটকটির কাহিনী ও বেশ দারুণ! এমন বাস্তবধর্মী সংগ্রামের কাহিনী গুলো বেশ ভালো লাগে আমার। আসলে জীবন মানেই নানা ধরনের চাপ, নানা ধরনের অংকের হিসাব! তার মাঝে এমন অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা পরিবারের বাকি সদস্যদের নিঃস্ব করে দেয়।
এই নাটকের মধ্যে বাস্তবতার অনেক কিছুই তুলে ধরা হয়েছে। যেটা পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। আসলে প্রত্যেকটা ছেলের জীবনটাই এরকম। দূর দেশে গিয়ে কেউ ভালো থাকে আবার কেউ খারাপ। সবকিছুর চাপ তাদের মাথার উপরে থাকে। কেউ বাড়িতে ফিরে আসতে পারে সুস্থভাবে, আবার কেউ মৃত লাশ হয়ে ফিরে আসে এটা ঠিক। শেষ পর্যন্ত নায়ক মৃত অবস্থায় এসেছে, এটা দেখে খারাপ লাগলো।
আপনি তো দেখছি আজকে আমার খুবই পছন্দের নায়ক নায়িকার নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছেন। এই নায়ক এবং নায়িকা আমার অনেক বেশি পছন্দের। তাদের বেশিরভাগ নাটকই আমার দেখা হয়েছিল। তবে এখন আর ব্যস্ততার জন্য তাদের নাটক খুব একটা দেখা হয় না। কিন্তু আজকে আপনি এত সুন্দর করে তাদের এত সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন দেখে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে পড়তে। পুরো কাহিনীটাকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন।