কালী পূজা। পর্ব:- ১৬
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
এবার কালীপূজায় আমরা বারাসাতে এসে এতটাই মুগ্ধ হয়ে গেছি চারিদিকের এত সুন্দর সুন্দর প্যান্ডেল দেখে, যে মনেই হচ্ছে না অল্প কয়েকটি প্যান্ডেল দেখে বাড়ি ফিরতে। প্রত্যেকটা প্যান্ডেল দেখার পর মনে হচ্ছে এর পরে যেটা আছে সেটাও নিশ্চয়ই অনেক সুন্দর থিম করেছে বা অনেক সুন্দর করে কারুকার্য করা হয়েছে। প্রতিটা প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে আরেকটি প্যান্ডেল যেন আমাদের তাদের কাছে চুম্বকের মত টানছে। তাই আমরাও কেমন যেন ক্লান্ত বোধ করতেই পারছি না এতটাই এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে মনের মধ্যে। তাই আরেকটা প্যান্ডেল দেখার জন্য জোর পায়ে হেঁটে চলেছি। হাঁটতে হাঁটতে চলে এসেছি আরও একটি সুন্দর প্যান্ডেলের সামনে। এই প্যান্ডেলটি বাইরে থেকে দেখতে অনেক বড় লাগছে। বাইরে থেকে দেখলে বিভিন্ন কার্টুন ক্যারেক্টারদের যেমন রাজপ্রাসাদ হয় তেমনি লাগছে দেখতে। যেমন হ্যারি পটারের বাড়ি আমরা দেখেছি সেই রকমই দেখতে লাগছে। কার্টুনে যেমন রংয়ের থাকে এখানেও লাইটিং দেখে সে রকমই কার্টুন অনুভব হচ্ছে।
আমরা প্যান্ডেলের সামনে গিয়ে আস্তে আস্তে ভেতরের দিকে প্রবেশ করলাম। আগেকার রাজপ্রাসাদে প্রবেশপথে দুপাশে যেমন ঘোড়া থাকতো এখানেও তেমন দুপাশে ঘোড়া দেখা যাচ্ছে। প্রবেশ পথের মাথার ওপর এবং দুপাশে সুন্দর করে কারুকার্য দেখা যাচ্ছে। মাথার ওপরে ছোট ছোট ঝুমুর লাগানো আছে চারিদিকটা আলোকিত করার জন্য। প্রবেশপথ টি একদম লালের উপর সাদা কারুকার্য করা হয়েছে। দেখতে মোটামুটি ভালই লাগছে তবে ভেতরে ঢুকে দেখতে পেলাম চারিদিকে কাচের কারুকার্য করা আছে। এই কাচগুলি বিভিন্ন আকারের করে ছোট ছোট করে কেটে বিভিন্ন জায়গায় সুন্দর করে কারুকার্য করা আছে। কোথাও দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট ফুল করা, কোথাও আবার এই কাচ দিয়ে একটু বড় করে ফুলের কারুকার্য করা। কিছু কিছু জায়গায় আবার পরপর কাচ গুলো পাতিয়ে রাখা আছে। এবং এরই মধ্যে বিভিন্ন রংয়ের কাগজ অথবা কাপড় দিয়ে কারুকার্য করা আছে। এক কথায় প্যান্ডেলের ভেতরের অংশ খুবই কালারফুল এবং কাচ গুলো ব্যবহারের জন্য খুবই চকচকে হয়েছে।
মাথার ওপরে ছাদের দিকে তাকালেও একই রকম কালারফুল দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এখানেও অনেক সুন্দর করে ছোট ছোট কাচের টুকরো ব্যবহার করে সুন্দর করে কারুকার্য করা হয়েছে। মাঝখানে একটি বড় ঝুমুরও দেখা যাচ্ছে এবং এই বড় ঝুমুরের একটু দূরে চারিদিকে ছোট ছোট ঝুমুর লাগানো আছে। আমরা চারিদিকটা দেখে কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করতে এগিয়ে গেলাম। এখানে কালী মায়ের প্রতিমা টি অনেক সুন্দর করে করা হয়েছে। এবং তুলনামূলক একটু বড় করে প্রতিমাটি করেছে। কালী মায়ের প্রতিমার পাশে আরো কিছু প্রতিমা দেখা যাচ্ছে। আর এই প্রতিমা গুলির মধ্য দিয়ে কিছু কাহিনী বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কালী মায়ের পেছনের দিকে দুই পাশে কিছু দৃশ্য দেখা যাচ্ছে যেটা একদিকে গ্রাম্য পরিবেশ এবং নদী বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে পাহাড়ি এলাকা এবং এই পাহাড় থেকে ঝরনা নেমে আসছে নিচের দিকে। দৃশ্যটি আমার খুবই সুন্দর লেগেছে কারন আমার এ গ্রাম্য পরিবেশ এবং পাহাড় দুটোই অনেক সুন্দর লাগে। আর আমার এরকম দুটো পরিবেশেই ঘুরতে যেতে খুবই ইচ্ছা করে।
এরকম পরিবেশের সময় কাটালে মনটা খুব ভালো হয়ে যায়। তাই আমার কালী মায়ের পেছনের এই দৃশ্যটা খুবই নজর কেড়েছে। এরপর আমরা মাকে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে এলাম। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পেলাম একটি মেয়ে দড়ির ওপর ভাসমান অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। আসলে একটু দড়ির ওপর ব্যালেন্স করা অনেকটাই কঠিন ব্যাপার। মাঝে মাঝেই দেখতে পাওয়া যায় গ্রাম থেকে এই শহরের দিকে এইসব মেয়েরা আসে তাদের এই ব্যালেন্স করা এবং খেলা দেখাতে। এবং তারা এইভাবে মানুষের মনোরঞ্জন করে তাদের কাছ থেকে কিছু সাহায্য পেতে। আমি দেখেছি গ্রামের এইসব মানুষেরা খুবই পরিশ্রমই হয়ে থাকে। আমরাও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম তাদের এই খেলা দেখার জন্য। তারপর কিছু সাহায্য করে এগিয়ে গেলাম অন্য একটি প্যান্ডেল দেখার উদ্দেশ্যে। কারন আমরা যদি এখানে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ সময় কাটিয়ে ফেলি তাহলে রাত আরো বেশি বেড়ে যাবে আর আমাদের সবকটা প্যান্ডেল দেখা শেষ করে উঠতে পারব না।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।