কালী পুজো। পর্ব:- ৩
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
প্রতিবছর নৈহাটিতে প্যান্ডেল গুলো অনেক সুন্দর করে। তেমনি এ বছর যে কটা দেখছি সবকটাই ভালো লাগছে। তাই আমরা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছি আরো একটি সুন্দর প্যান্ডেল দেখার জন্য। হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম প্যান্ডেলের সামনে। প্যান্ডেলের সামনেই দেখতে পারছি অনেকগুলি ভূত লাফালাফি করছে। দেখে মনে হচ্ছে বাচ্চা ভূত। ভূত গুলো উপরের দিকে আছে তাই আমরা নিচ দিয়ে প্রবেশ করলাম। ভেতরে ঢুকে দেখলাম আরো অনেক ভূতেরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। চারিদিকে ভুতেদের ঝুলতে দেখা যাচ্ছে। আর প্যান্ডেলেও বাজছে ভূতের আওয়াজ। আমরা একটু সামনে এগিয়েই মায়ের দর্শন পেলাম। মায়ের প্রতিমা দেখেই আমার প্রথমেই চোখ যায় মায়ের চুলের দিকে। প্রথম দর্শনে মায়ের চুলগুলোকে আমি ভেবেছিলাম, মনে হয় পেছনে ডানা আছে। তারপর ভালো করে দেখি চুলগুলো হাওয়ায় উড়ছে সেই জন্য অমন দেখা যাচ্ছে।
তবে এখানে মায়ের প্রতিমা একটু ভিন্ন রকমের করা হয়েছে। কথিত আছে কালিমা ভুল করে শিব ঠাকুরের গায়ের উপরে পা তুলে দেয়, সেই কারণেই ভুল হয়ে গেছে বুঝে, জিভ বের করে ফেলে। কিন্তু এখানে শিব ঠাকুরকে দেখা যাচ্ছে কালী মায়ের পাশে। আসল কাহিনী অনুযায়ী মায়ের প্রতিমা সামনে দেখা যাচ্ছে। মায়ের এই প্রতিমা পুজো করা হয়েছে। এবার আমরা বেরিয়ে পড়লাম মায়ের অন্য আরেকটি প্যান্ডেল দর্শনে। রাস্তায় কিছুটা হাঁটার পর দেখতে পেলাম একজন পুরোহিত। তিনি মারা গেছেন শরীরে শুধু কঙ্কাল টাই পড়ে আছে। ওই কঙ্কালের ওপরেই গেরুয়া বস্ত্র পড়ে আছেন তিনি। এক হাতে বই পড়ছেন আরেক হাতে একটি কঙ্কাল এর মাথা ধরে আছেন। আর আরাম কেদারায় বসে সুন্দর করে দোল খাচ্ছেন । মুখে তার ভয়ঙ্কর গর্জন শুনেই আমরা তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করে দিলাম । হাঁটতে হাঁটতে আবার একটি প্যান্ডেলের সামনে পৌঁছে গেলাম।
এবার আমরা যে প্যান্ডেলের ভেতরে ঢুকছি সে প্যান্ডেলের উপরে লাল পেড়ে সাদা শাড়ি দেওয়া আর রাস্তার দুই পাশ বিভিন্ন আকারের ঘট, ছোট আকারের হাড়ি, কুলো আরো বিভিন্ন জিনিস দিয়ে সাজানো রয়েছে। পুরোই খাঁটি বাঙালিয়ানার ছাপ। এছাড়াও কিছু কিছু জায়গায় দেখতে পারছি ঠাকুরের ছবি ও রাখা আছে। ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম এটি কোন প্যান্ডেল নয়। এটি তো আসল মায়ের মন্দির। যেখানে সব সময় মায়ের পূজো করা হয়। মন্দির এর ভেতরে ঢুকতেই মাঝখানে একটা ছোট বটগাছের মতো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কাছে যেতেই দেখলাম এটি একটি নকল গাছ। সৌন্দর্যের জন্য এটি এখানে দিয়ে রেখেছে, তবে বেশ ভালই লাগছিল গাছটিকে দেখতে। গাছটি যখন পার করলাম সামনেই দেখলাম মায়ের প্রতিমা। মূলত প্যান্ডেলের জন্যই মায়ের প্রতিমাটি তৈরি করা হয়েছে। মায়ের প্রতিমাতে কোনরকম রং করা হয়নি। আবার হতে পারে এরকমই রং করা হয়েছে।
কালী মায়ের প্রতিমা টি দেখে মনে হচ্ছে যেন শুধু মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, আর সুন্দর করে কারুকার্য করা হয়েছে। অন্যান্য প্রতিমার মতো মায়ের প্রতিমা কোনরকম রং করা হয়নি বা কোন রকম অলংকার দিয়ে সাজানো হয়নি। তবে এরকম প্রতিমার একটা আলাদাই সৌন্দর্য আছে। মায়ের পেছনে আবার একই রকমের কারুকার্য করা হয়েছে, কুলো, হাতপাখা, দেবী প্রতিমা, ঘট ইত্যাদি কিছু জিনিসপত্র দিয়ে। মায়ের প্রতিমা দর্শন করে যেই বাঁ দিকে চোখ পরল দেখলাম আরেকটি কালী মায়ের প্রতিমা। মায়ের এই প্রতিমা টি সুন্দর করে সাজানো। সুন্দর কিছু অলংকার পরানো আছে, গলায় একটা সোনার হার পড়া মনে হচ্ছে আবার কিছু রুপোর হার ও আছে পড়ানো। মায়ের এই প্রতিমাতেই পূজো করা হয়েছে। এবং মায়ের এই ঘরটি দেখে মনে হচ্ছে সারা বছর এই ঘরেই পূজো হয়। সুন্দর পরিপাটি করে ঘরটি সাজানো আছে। দেবী প্রতিমার পেছনেও সুন্দর করে কিছু ছবি আঁকা আছে। আমরা মাকে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে এলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।