কালী পূজা। পর্ব:- ১
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের এই পুজো আসার আগে দিনগুলো বেশ ভালোই কাটে। মা আসছে পুজো শুরু হবে আবার আমরা কেনাকাটা করব নতুন নতুন জামা পড়বো সুন্দর করে সেজে মায়ের প্যান্ডেল দেখতে বের হব এসব ভেবেই মনের মধ্যে একটা আলাদাই আনন্দ কাজ করে। তবে বাঙ্গালীদের তো উৎসবের অভাব নেই একটা গেলে আরেকটা চলতেই থাকে। তেমনি দুর্গা মায়ের পুজোর পর লক্ষ্মী পূজো কাটিয়ে এখন আবার কালীপুজো শুরু হয়ে গেল। তবে আমি যেখানে থাকি, মানে আমার বাড়ি থেকে দুর্গা পুজোটা এতটাও উপভোগ করা যায় না । কারণ বাড়ির কাছাকাছি কোথাও দুর্গা পুজো হয় না। কিন্তু কালীপূজা আসলে চারিদিকে পুজোর একটা আমেজ বোঝা যায়। কারণ আমার বাড়ির এক দম সামনে কালীপুজোর প্যান্ডেল করে। সেখানে যখন পুজো হয় তখন আমি বাড়ি থেকেই পুজোর সব মন্ত্র শুনতে পারি। আর মাইকে যেসব গান বাজে সেগুলো আমি ঘর থেকেই শুনতে পাই। তাই কালী পূজোর এই দিনগুলো আমার তো খুব ভালোই কাটে।
আমরা কালী পূজার শুরু হতেই অর্থাৎ ভূত চতুর্দশীর দিন ভাবলাম আজকে থেকেই কালীপুজো দেখতে শুরু করতে হবে। তাই সন্ধ্যা হতেই চারিদিকে ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে নিলাম। কি সুন্দর লাগছে চারিদিক বাড়ি পুরো আলোকিত হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ এই আলো উপভোগ করে চলে গেলাম একটু সাজুগুজু করতে। তাড়াতাড়ি সাজগোজ করে কালী মায়ের প্রতিমা দর্শন করতে বেরিয়ে পড়লাম। আজকে যাব শুধুমাত্র আমাদের পাড়ার পুজো দেখতে। যেহেতু বাড়ির কাছেই তাই হাঁটতে হাঁটতেই বেরিয়ে পড়লাম। রাস্তায় ফ্লাইওভারের গায়ে ঘনঘন করে টুনি লাইট ঝুলিয়ে রেখেছে। এছাড়াও বড় বড় অনেক লাইট দিয়ে সুন্দর করে রাস্তা টাকে আলোকিত করে দিয়েছে। মা কালীর প্যান্ডেলের সামনে পৌঁছাতেই দেখলাম, আমাদের ক্লাবে এবার আগ্রার তাজমহল প্যান্ডেল করেছে। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি আগ্রার তাজমহল। আমি কখনো আগ্রায় গিয়ে তাজমহল দেখিনি তবে ছবিতে দেখেছি অনেক সুন্দর দেখতে।
আমরা একটু দেরি করে গেছি তারপরেও অনেকটাই ভিড় ছিল। একটু সময় লাইনে দাঁড়িয়ে তারপর আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকতে শুরু করলাম। ভিতরে ঢুকতেই দেখলাম সামনে অনেক বড় করে সুন্দর একটি জলের ফোয়ারা করেছে। আর জলের ফোয়ারার চারপাশ এবং তাজমহলের সামনেটা জুড়ে ছোট ছোট টবে লম্বা লম্বা গাছ লাগানো রয়েছে। যেমনটা আসল তাজমহল এর সামনে দেখতে পাওয়া যায়। আমরা চারপাশ ঘুরে তাজমহল ভালো করে দেখে নিলাম। সুন্দর কারুকার্য করা হয়েছে এখানে। তাজমহলের উপর থেকে একটা সিঁড়ি নিচের দিকে নেমে গেছে। আমরা সেই সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে দেখলাম এখানেই কালী মায়ের প্রতিমা রাখা আছে। মায়ের মূর্তি অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে। সুন্দর মিষ্টি মুখ করেছে মায়ের। মায়ের পেছনের দিকটা আবার প্রাসাদের মত কারুকার্য করা। দেখে মনে হচ্ছে মা যেন কোন প্রাসাদের মধ্যে আছে। চারপাশের দেয়ালে মানুষের মূর্তি তৈরি করা আছে।
উপরের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম ছাদের একদম কর্নার জুড়ে কিছু মানুষ কালী মাকে প্রণাম জানাচ্ছে। ছাদের দিকে তাকাতেই দেখলাম অনেক বড় একটা সুন্দর ঝুমুর আছে। এই একটা ঝুমুরের আলোতেই মনে হয় পুরো ভেতরটা আলোকিত হয়ে গেছে। আর ঝুমুরের চারপাশে সাদা রংয়ের নকশা করা আছে আর তার পাশে ছোট ছোট ফুলের নকশা করা আছে। পুরো ছাদটায় সুন্দর নকশা করায় খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আমরা প্যান্ডেলটা ভালো করে দেখে বাইরে বেরিয়ে এলাম। এই পুজোটা যেহেতু অনেক বড় একটা মাঠের মধ্যে হয় তাই এখানে অনেক বড় মেলা বসে। আমরা মেলার মধ্যে ঢুকে দেখতে পেলাম চারিদিকে অনেক খাবারের দোকান বসেছে। বড়দের জন্য নাগরদোলা, ব্রেক ডান্স, এবং আরো আনন্দদায়ক অনেক কিছু বসেছে। ছোট বাচ্চাদের জন্য গাড়ি এবং ছোট ছোট প্লেন অনেক কিছু খেলা করার জন্য বসেছে। আমরা চারিদিক ঘুরে ভাবলাম একটা ক্যাম্পা কোলা অর্থাৎ ঠান্ডা পানিও পান করব। তাই সেটাই কিনে খেতে খেতে বাড়ি চলে এলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।