আজ গেলাম বনগাঁতে।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আজ ভোর হতেই ঘুম থেকে উঠে গেলাম। যদিও রাতে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিলাম সকাল ৭ টার কিন্তু তার অনেক আগেই ঘুম ভেঙে গেল। তাড়াতাড়ি উঠে সারাদিনের জন্য রান্না শুরু করে দিলাম। আমি বেরোবো তাতে কি বাড়ির লোকের জন্য তো রান্না করে দিয়েই যেতে হবে। রান্না না করে দিলে তারা কি খাবে সে কথা ভেবেই ঝটপট করে রান্না সেরে নিলাম সকাল ৮টার মধ্যে। তারপর তাড়াহুড়ো করে স্নান করে ঠাকুর পূজো দিয়ে সবকিছু গুছিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বনগাঁ যাওয়ার উদ্দেশ্যে। বনগাঁ একটি খুবই সুন্দর জায়গা, এখানে ঘুরে বেড়ানোর অনেক জায়গা আছে । তবে আমি আজকে ঘুরতে যাচ্ছি না, আমি যাচ্ছি আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে। আসলে আগে আমরা বনগাঁ থাকতাম, আমাদের এখনো বনগাঁ একটি বাড়ি আছে। আর আমি বড় হয়েছি বনগাঁতেই, তাই বনগাঁ যেতে হবে শুনলেই আমার একটু আবেগ কাজ করে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা টোটো করে চলে এলাম স্টেশনে। আমার বনগাঁ যেতে হলে দুটো ট্রেন পাল্টে যেতে হয়। কিন্তু এখানে সুবিধা হল টিকিটটা আমি একবারেই নিয়ে নিতে পারি। টিকিট কেটে কয়েক মিনিট বসতে না বসতেই ট্রেন চলে আসলো এবং আমি যথারীতি ট্রেনে উঠে তারপর আবার ট্রেন পাল্টে অন্য একটি ট্রেনে করে বনগাঁ পৌঁছে গেলাম।
বনগাঁ স্টেশনে নেমে আমি বেরোনোর রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আসলে বনগাঁ যে টিকিট কাউন্টার সেটা পুরো ভেঙে দিয়েছে এবং স্টেশনের বিভিন্ন জায়গা ভেঙে ভেঙে আবার নতুন করে তৈরি করছে। আর আমি প্রায় এক বছরের কাছাকাছি হয়ে গেছে বনগাঁ স্টেশনে আসি না তাই আমার দেখে একটু বুঝতে সময় লেগেছে যে আমি কোন জায়গা দিয়ে স্টেশনের বাইরে বের হব। অবশেষে রাস্তা খুঁজে স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে একটি টোটো ধরে আমার গন্তব্যে পৌঁছলাম। এবং আমার সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটা সম্পন্ন করলাম যেটা করার জন্য আমি বনগাঁতে এসেছি। কাজ হতে হতে দুপুর হয়ে গেছে আর আমি সকাল থেকে কিছুই খাইনি। তাই প্রচন্ড খিদে অনুভব করছিলাম, আর এমন সময় সামনে একটি বিরিয়ানির দোকান আমার চোখে পড়ল। তাই ভাবলাম এত কষ্ট করে কাজটা করলাম তাহলে একটু নিজেকে একটা বিরিয়ানি ট্রিট দেওয়া যায়। সে মতোই চলে গেলাম বিরিয়ানি খেতে। বিরিয়ানিটা খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল কিন্তু বিরিয়ানিতে এত বেশি তেল থাকে আমি বেশি খেতেই পারি না। আর আমার তেল জাতীয় খাবার খেতে খুব একটা ভালো লাগে না। বনগাঁতে এসে খুব ইচ্ছা করছিল যে একটু ঘুরে আসি কিন্তু দেরি হয়ে যাবে সেটা ভেবে বিরিয়ানি খেয়ে চলে আসলাম আবার স্টেশনের দিকে।
স্টেশনে এসে অপেক্ষা করতে লাগলাম ট্রেন এর জন্য। যদিও এখন আমি বাড়িতে যাব না। আগে যাব আমার দিদির শ্বশুরবাড়ি তারপর যাবো বাড়ি। কারণ আমি যে স্টেশনে নেমে ট্রেন বদল করি সেই স্টেশনেই দিদির শ্বশুর বাড়ি। তাই প্রতিবার বনগাঁ আসলেই আমি দিদির বাড়ি অবশ্যই এসে ঘুরে যাই। সে মতোই ট্রেন আসার পর দিদি বাড়ির স্টেশনে এসে নামলাম। দিদি বাড়ি পৌঁছে দেখলাম দিদির ছেলে ঘুমিয়ে আছে। দেখে একটু মনটা খারাপই হল, কারণ আগে দিদির সাথে সময় কাটাতে ভালো লাগতো কিন্তু এখন দিদির ছেলে হওয়ার পর থেকে আমি শুধু ছেলের জন্যই যেন দিদি বাড়ি যাই। আসলে দিদির ছেলেও আমাকে খুবই ভালোবাসে ফোন করলেই শুধু ডাকে। দিদি বাড়ি ঢুকতেই আমাকে আইসক্রিমের বাটি ধরিয়ে দিল। আর বলল তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে ছেলে ওঠার আগে। আসলে দিদির ছেলে এখন অনেকটাই ছোট ওকে আইসক্রিম দিলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে তাই ঠান্ডা জাতীয় খাবার আমরা ওর থেকে একটু লুকিয়ে লুকিয়ে খাই। আমি দিদির সাথে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালাম এবং অনেক গল্প করতে লাগলাম। অনেকক্ষণ সময় কাটানোর পরেও দেখি দিদির ছেলের ঘুম ভাঙছে না এদিকে সন্ধ্যা হয়ে গেছে, আর বাইরে এখন বেশ ঠান্ডাও পড়ে গেছে। তাই আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে পারব না।
আর এখন যদি ওকে কাঁচা ঘুম থেকে ডাকা হয় তাহলে কান্নাকাটি করবে সেই জন্য আর না ডেকে আমি বের হতে চাইলাম দিদি তখন আমার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলল এটা নিয়ে যেতে। আমি ব্যাগের মধ্যে কি আছে জানতে চাইলে দিদি মজা করে বলে এর মধ্যে ভাঙাচোরা জিনিস আছে নিয়ে যা। অবশেষে আমি দিদির ছেলের সাথে দেখা না করে, ঘুমিয়ে আছে সেটা দেখে আমার বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। বাড়ি পৌঁছে দিদি কি পাঠিয়েছে জানার কৌতূহল আর সামলাতে পারলাম না, কারণ ব্যাগটা প্রচন্ডই ভারী ছিল। আমার সারা রাস্তা নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। বাড়ি ঢুকে ব্যাগটা যেই খুললাম দেখতে পেলাম এক ব্যাগ সবজি দিয়ে পাঠিয়েছে। আর এই জন্যই ব্যাগটা এত ভারি হয়েছে। আসলে দিদির শ্বশুর সবজির আড়ৎ থেকে অনেক বেশি সবজি নিয়ে আসে যা খেয়ে ফুরানো যায় না। অনেক সবজি খেয়ে না পারার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি যেহেতু বাড়ি ফিরছিলাম তাই কিছু সবজি আমার কাছে পাঠিয়ে দিল। সারাদিনের এত ধকল পড়েছে যে আমার আর কোন কিছু করতেই ভালো লাগছিল না তাই জিনিসপত্র সব গুছিয়ে রেখে একটু রেস্ট নিতে চলে গেলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।