কুনজর বা কুদৃষ্টি।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা অনেক সময় দেখতে পাই আমাদের চারপাশে মানুষদের মধ্যে কিছু কিছু মানুষ আছে আমাদের ওপর সব সময় নজর বা দৃষ্টি রাখে। আমরা কি করছি? কেমন ভাবে জীবন যপন করছি? সেইগুলো প্রতিনিয়ত নজরে রাখে। এই নজরে রাখা ব্যাপারটা অনেক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নজর আমাদের জীবনে অনেক ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুনে থাকি যে বাচ্চাদের নজর লেগেছে। কারণ বাচ্চারা নিষ্পাপ সহজ সরল হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে সুন্দর দেখতে হলে তাদের ওপর মানুষের নজর একটু বেশিই পড়ে। আর এই নজর লাগলে অনেক সময় বাচ্চাদের শরীর খারাপ করে। তেমনি বড়দেরও এমন নজর লাগে, যেটা আমরা বুঝতে পারি না কারণ বড়দের সেই ভাবে শরীর খারাপ করে না, এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বোঝারও উপায় থাকে না। বাচ্চাদের যেমন নজর লাগলে শরীর খারাপ করে তেমন বড়দের নজর লাগলে শরীর খারাপ না হলেও জীবন যাপনে অনেক সময় জটিলতা আসে এবং কোন কাজে উন্নতি করতে অনেক কষ্ট হয়। আসলে কিছু কিছু মানুষের নজর এতটাই খারাপ হয় যে এসব মানুষের নজরে অনেকেরই জীবনে ক্ষতি হতে দেখা যায়।
আসলে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা অন্যের জীবন সুখ-শান্তিতে ভরে আছে সেটা দেখলে খুবই হিংসা করে। আর এইসব মানুষের নজর পড়লেই সেই সুখের সংসার অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে দেখা যায়। কারণ এইসব নজর খুবই ক্ষতিকারক হয়। সেই জন্য আগেকার দিনে গুরুজনদের বলতে শুনেছি যে, কেউ যদি সুখে শান্তিতে থাকে বা পরিবারকে নিয়ে আনন্দে থাকে সেটা কখনো বাইরের লোককে বলতে নেই। কারণ কেউ যদি নিজের পরিবার নিয়ে সুখে না থাকে তাহলে তাদের কুনজর লেগে যায়, এবং এই নজরের কারণে আমাদের জীবনে সুখ-শান্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শুধুমাত্র পারিবারিক সুখ শান্তি যে নষ্ট হয় এমনটা নয়। কোন ব্যক্তি যদি কঠোর পরিশ্রম করে উন্নতি করে সেটাও কখনো কাউকে বলতে নেই যে সে কতটা উন্নতি করেছে, কারণ এইসব উন্নতির কথা শুনেও মানুষের ক্ষতিকারক নজর লাগে। আর এইসব ক্ষতিকারক নজর বা দৃষ্টির প্রভাবে মানুষের উন্নতি ব্যাহত হয়ে যেতে পারে। এবং অনেক সময় এই নজর বা দৃষ্টির কারণেই মানুষ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। আর তখন আবার পুনরায় নিজের ভাগ্য ফেরানো অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
আসলে প্রত্যেকটি মানুষ তাদের নিজেদেরই সবথেকে বেশি ভালোবাসে তাই তারা কখনোই মেনে নিতে পারে না যে তাদের থেকে অন্য কেউ বেশি উন্নতি করবে বা বেশি ভালো থাকবে। সেই জন্য কিছু কিছু মানুষ অন্যকে ভালো থাকতে দেখে নিজেও চেষ্টা করে ভালো থাকার জন্য কিন্তু তার মধ্যেও কিছু মানুষ আছে যারা নিজে কোনভাবেই চেষ্টা করে না ভালো থাকার জন্য অথচ অন্যকে ভালো থাকতে দেখলে হিংসা করে। তাই এইসব মানুষদের থেকে আমাদের অনেকটাই দূরত্ব বজায় রেখে চলা উচিত। কারণ এইসব মানুষদেরই দৃষ্টি পড়ে আমাদের ওপর আর এই দৃষ্টি বা নজর আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। তবে এইসব মানুষ হয়তো নিজেরাও জানে না যে তাদের নজর আমাদের জীবনে ক্ষতির কারন হয়ে পড়ছে। কারণ তারা হয়তো নিজের অজান্তেই বা ইচ্ছাকৃতভাবে হিংসা পূর্ণ মনোভাব নিয়ে আমাদের দিকে নজর দেয় বা মনের মধ্যে আমাদের জন্য ক্ষতি মুলক চিন্তাভাবনা নিয়ে আমাদের সঙ্গে মেলামেশা করে। আর এই ক্ষতি মূলক চিন্তাভাবনা এবং হিংসা করার কারণেই তাদের দৃষ্টি আমাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।
আসলে প্রতিনিয়ত আমরা একটা জিনিস লক্ষ্য করতে পারি যে আমাদের চিন্তাভাবনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের জীবনে এবং অন্যান্যদের জীবনে খুবই প্রভাব বিস্তার করে। কারণ আমাদের এই খারাপ চিন্তা ভাবনা এবং ক্ষতিকারক হিংসাত্মক মানসিকতা নিয়ে যে দৃষ্টি বা নজর অন্যদের জীবনে পরে তার কারণেই তাদের জীবনে ক্ষতি আসে। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা ভালো রাখা উচিত। এবং সবার জন্য শুভকামনা করা উচিত। আর আমাদের মানসিকতা ভালো থাকলে অন্যের সাথে সাথে আমাদের নিজেদেরও উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তারপরও আমরা যেহেতু সবার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারবো না। আর সবার মানসিকতা যেহেতু সমান নয়, তাই আমাদের উন্নতির কথা এবং পরিবারের সুখ শান্তির কথা অন্যদের কাছে না বলাই ভালো, তাহলে আমরা এই নজর দোষ থেকে অনেকটাই এড়িয়ে চলতে পারব। এছাড়াও এই নজর দোষ কাটানোর জন্য বিভিন্ন উপায় আছে সেগুলো আমরা প্রয়োগ করতে পারি। আসলে আমাদের মানুষ বুঝে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে হবে। এবং যেসব ব্যক্তি আমাদের জন্য ক্ষতিকারক দৃষ্টি বা নজর রাখে এবং হিংসাত্মক মনোভাব রাখে সেই সব ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় চলতে হবে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
অনেকেই এটাকে কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেয়। তবে আমি এটা বিশ্বাস করি। সত্যি কুসংস্কার বলতে কিছু আছে। আমি নিজেও এটার প্রমাণ। এইজন্যই স্যোসাল মিডিয়ায় বা প্রকাশ্যে আমি আমার ভালো কিছু দেওয়া বা বলা বন্ধ করে দিয়েছি। বেশ দারুণ লিখেছেন আপনি আপু।