আমাদের গ্রামের শীতের ফুল। অন্তিম পর্ব। ফটোগ্রাফি পোস্ট
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
ফুলের ছবি শেয়ার করার সময় প্রতিবারেই ভাবি প্রকৃতিতে যদি ফুল না থাকত তবে প্রকৃতি কি এতো রঙিন হত? কখনই না৷
আজকে আপনাদের সাথে যে সমস্ত ছবিগুলো শেয়ার করবো সেগুলো একেবারেই আনএডিটেড। প্রতিবার ছবি শেয়ার করার সময় ব্যাক ড্রপগুলো সামান্য ডার্ক করে দিয়ে এবং ছবির বাইরে ব্রাইটনেসটাও একটু বাড়িয়ে দিই ফলে ছবিগুলো অনেক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে৷ কিন্তু আইফোনের ক্যামেরা এতই ভালো যে খুব একটা বেশি এডিট করতে লাগেনা। আমিও যে বিরাট কিছু এডিট করি তা নয় খুবই সামান্য।
তাই আজকে ঠিক করলাম আপনাদের সাথে একেবারেই স্বাভাবিক ছবিগুলো শেয়ার করি। খুব একটা খারাপ ওঠেনি বলে আমার ধারণা। কিন্তু আপনারা দেখলে বুঝতে পারবেন।
ছবিগুলো সম্পর্কে কিছু কথা বলে রাখি। আজকে মোটামুটি পিটুনি আর ছবি বেশি রয়েছে এবং টুকটাক অন্য কিছুর ছবি। যে জায়গা থেকে আমি ফুলের ফটোগ্রাফি করেছিলাম সেখানে প্রচুর লোকজন আসে এই সব ফুল দেখতে। দূর দূর থেকে লোক আসে। ফলে মানুষজনের ভিড় কিন্তু ভালই হয়। এবং সেখানে নানান ধরনের ফুলের এক্সিবিশনও হয়। অর্থাৎ ছোটখাটো নার্সারি মতন থাকে। যেখান থেকে চাইলে চারা গাছ কেনা যায় বাহ নানান ধরনের ফুলও দেখা যায়। এই ছবিগুলো ওই মাঠের পাশেই একটা ছোট্ট এক্সিবিশন থেকে তোলা। তবে আমি যখন গিয়েছিলাম সেখানে খুব একটা বেশি গাছ ছিল না বেশিরভাগ গাছই মূল নার্সারিতে নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছিল।
তবে আমার ধারণা আপনাদের ওদিকে পিটুনিয়ার বাহার অনেক বেশি এবং আপনারা যারা পিটুনি ও ফুলের ছবি শেয়ার করেছেন তাদের প্রায় প্রত্যেকের পোস্টটি দেখেছি খুব আনকমন ফুলের রং রয়েছে যেগুলো এদিকে আমি খুব একটা দেখিনি।
প্রতিটা পর্বে ছবি আপলোড করার সময় ভেবেছি এই ছবিগুলো যদি আমাদের প্রতিযোগিতার আগে পেতাম তাহলে একসাথে কতই না ছবি হত! আসলে গ্রামে থাকার মজাই আলাদা। এই যে চলতি সপ্তাহে আপনারা সবাই কৃষক বন্ধুদের হাসিমুখ এবং ফসল ভরা মাঠের ছবি শেয়ার করেছেন আমি তো অংশগ্রহণ করতেই পারলাম না। এই কংক্রিটের জঙ্গলে ফসল ভরা মাঠ কোথায় পাবো! আর এখন যে বেরিয়ে কোথাও থেকে তুলে আনব সেই সম্ভাবনাও নেই কারণ আমার মেয়ের ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু দেশের বাড়িতে থাকলে এত রকমের ছবি পেতাম যা আমিও ভাবতে পারছি না।
আর না বকবক করে চলুন আজ আপনাদের সাথে শেষ পর্বের কিছু ফুলের ফটোগ্রাফি শেয়ার করি।
খুবই পরিচিত রঙের পিটুনিয়া। একই ফুলের দুটো ছবি নিয়েছিলাম। এখন আপলোড করার সময় দেখছি প্রায় একই রকম দেখতে হয়েছে।
পিটুনিয়ার ডুয়াল রঙ হয়। কিন্তু আমার আবার এক রঙ বেশি পছন্দের৷ আর এই রংটা সব থেকে প্রিয়।
এই দুটো পিটুনিয়া কিন্তু আলাদা আলাদা রঙের। একটা রাণী আর একটা কালচে গোলাপি।
বেশ সুন্দর হয়েছে তাই না? জানেন তো পিটুনিয়া ফুল ফলাতে খুব একটা খাটতে হয় না৷ খুব সহজে আর কম পরিচর্যাতেই অনেক অনেক ফুল হয়। আপনারা যারা শীতের বাগান করেছেন তারা নিশ্চই জানেন। আমার থেকে বেশিই জানেন তাই না?
আমাদের গ্রামের মাঠগুলোতে সব থেকে বেশি গোলাপের চাষ হয়। আর গোলাপগুলো এরমই ছবির মতো সুন্দর দেখতে হয়। জানেন ওই রাশি রাশি ফুলের মাঠের পাশে যেখানে ফুলের এক্সিবিশন ছিল সেখানেই বিক্রি হচ্ছিল। পাঁচ টাকা পিস৷ আমি যে কত কাল পাঁচ টাকা পিসের গোলাপ দেখিনি। আর এতো সুন্দর গোলাপ! এ তো স্বপ্নের বাইরে। তাই না? কি বলেন আপনারা? আপনাদের ওখানে গোলাপের দাম কেমন?
বাঁধাকপিগুলো কেমন সুন্দর ফুলের মতো দেখাচ্ছে না? ইয়া বড় বড় সবুজ গোলাপ ফুলের মতো ফুটে আছে৷
এখানে ব্রোকলি বাঁধাকপি ফুলকপি ইত্যাদিরও চাষ হয়। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামগুলোতে সবজির চাষ বেশি। পূর্ব মেদিনীপুরে ফুলের। চাষি দাদাদের জিজ্ঞেস করায় বলেছিল, ফুলের জমিতে ক্নেক বেশি পরিচর্যা করতে হয়৷ নিয়মিত সার দিতে হয়। আর যেহেতু নদী ধারের জমি তাই মাটি এমনিতেই ভালো। এই সব কারণেই সবজি লাগালেই হয়। আলাদা করে খাটতে হয় না৷ কী ভালো না ব্যপারটা?
গাঁদা ফুলের এই দুটো ছবি না তুললে হয়তো জানতেই পারতাম না গাঁদা ফুলও কত সুন্দর দেখতে হয়। একটা সময় ছিল যখন আমার ব্যক্তিগতভাবে গাঁদা ফুল খুব একটা পছন্দের ছিল না। কিন্তু এবার এই ফুলগুলো ছবি তুলে আমি বারবারই ভেবেছি গাঁদা ফুলের পাপড়ির বিন্যাস কি চমৎকার!
আজকের ছবির বাহার মোটামুটি এই পর্যন্তই। এরপর নিয়ে আসব কোন একদিন আমার দেশের বাড়ির বাগানের ফুল। তবে একটানা পর পর বেশ কয়েকটি সপ্তাহ ফুলের ছবি শেয়ার করলাম। এবার ভাবছি কিছুদিন বিরত থাকব।
আজকের ছবিগুলো কেমন লাগল অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন৷ আর নিজেরাও ফুলের মতো দারুণ থাকবেন৷
তো বন্ধুরা আজ আসি?
টাটা।

পোস্টের ধরণ | ফটোগ্রাফি পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | আইফোন ১৪ |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ক্যানভা, ইনশট, অনুলিপি |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
![1000205505.png](
আসলে শীতের এই ফটোগ্রাফি গুলো এখন খুব মিস করব। কেননা শীতকালে বিভিন্ন ধরনের ফুল ফোটে এবং ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। আর আপনার এই অন্তিম ফটোগ্রাফি গুলো দেখে একদিকে যেমন ভালো লাগছে তেমনি অন্য দিকে কষ্ট হচ্ছে যে শীতের ফটোগ্রাফি গুলো এবার মনে হয় শেষ হয়ে গেছে। যাইহোক দারুন দারুন ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ দাদা, শীতকাল চলে যাচ্ছে৷ ফুল ফোটাও বন্ধ হয়ে যাবে৷ তখন আর লাফিয়ে লাফিয়ে ছবি তুলতে পারব না৷ সামান্য কিছু যা এবছর সংগ্রহ করেছি সেগুলোই শেয়ার করব আরও কিছু কিছু করে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/neelamsama92551/status/1895529176368889879?t=jd3wNGQu3a6hFAsoygvbpA&s=19
গ্রামে গেলে বিভিন্ন রকমের শাক সবজির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারা যায়। আপনি বিভিন্ন ফুলের পাশাপাশি বাঁধাকপির সুন্দর একটি ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। ওই বাঁধাকপি ফটোগ্রাফি টা দেখে আমার মন ভরে গেল। আমিও একদিন অনেকগুলো বাঁধাকপির ফটোগ্রাফি করেছিলাম। আমি একে একে আপনাদের দেখানোর চেষ্টা করব। অনেক ভালো লেগেছে আপনার চমৎকার এই রেনডম ফটোগ্রাফি উপভোগ করতে পেরে।
অপেক্ষা করব আপনার ফটোগ্রাফিগুলো দেখার জন্য৷ ফটোগ্রাফি দেখতে আমার নিজেরও খুবই ভালো লাগে৷ ধন্যবাদ নেবেন৷ কত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে রইলেন৷ ভালো থাকুন।
শীতের এই সুন্দর ফটোগ্রাফিগুলো সত্যিই অনেক মিস করব। শীতকাল মানেই তো ফুলের সৌন্দর্য, আর আপনি যেভাবে সেই মুহূর্তগুলো ক্যাপচার করেছেন, তা এক কথায় অসাধারণ! যদিও মনে হচ্ছে শীতের ফটোগ্রাফির শেষ সময় চলে এসেছে, তবুও আপনার শেয়ার করা এই ছবিগুলো সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ফুলের সুন্দর ছবিগুলো দেখে যেমন ভালো লাগছে, তেমনি একটু মন খারাপও হচ্ছে যে শীত এবার বিদায় নিচ্ছে। তবে, আপনার অসাধারণ ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসছে বছর আবার হবে, এই আশায় বুক বেঁধে আরও কয়েকমাস কাটিয়ে দিলেই শীত এসে পৌঁছে যাবে দোর গোড়ায়। তখন আবারও সব চমৎকার ফটোগ্রাফি করব। এই ছবিগুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপু।
আজ আপনি এত সুন্দর এবং মনোমুগ্ধকর দেখতে ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে তো এক নজরে তাকিয়ে ছিলাম। ধৈর্য ধরে এরকম ভাবে ফটোগ্রাফি করা হলে বেশি সুন্দর হয়। আর অনেক সুন্দর ভাবেই ফুটে ওঠে। আপনি অনেক সুন্দর করেই ফটোগ্রাফি করতে পারেন। এভাবে চেষ্টা করলে আরো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করতে পারবেন পরবর্তীতে। আপনার পরবর্তী ফটোগ্রাফি পোস্ট দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
হ্যাঁ ভাইয়া, আপনি তো জানেনই ফটোগ্রাফি আসলেই প্রচন্ড ধৈর্য্য ও স্থিরতার কাজ৷
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
এত সুন্দর ফটোগ্রাফি পর্বগুলো শেষ হয়ে গেল। আজকে অন্তিম পর্ব শেয়ার করেছেন। লাল গোলাপের ফটোগ্রাফি এবং বাঁধাকপি ক্ষেতের ফটোগ্রাফি সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। মনমুগ্ধকর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
পরে আর অন্য ফুলের ছবি শেয়ার করব আপু। আপিনি প্রায় প্রতিটা পর্বই দেখেছেন। আন্তরিক ধন্যবাদ নেবেন৷ ভালোবাসাও জানালাম।
আপনি আজকে আপনাদের গ্রামের শীতের ফুলের ফটোগ্রাফির অন্তিম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনার তোলা সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখে আমি তো চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। এক নজরে তাকিয়ে ছিলাম ফটোগ্রাফি গুলোর দিকে। গোলাপ ফুলের ফটোগ্রাফি সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে।
ফুলগুলো নিজেরাই ভীষণ সুন্দর আপু। আমিও যখন দেখছিলাম এক দৃষ্টি প্রায় হাঁ করেই।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগল। ধন্যবাদ নেবেন আপু। ভালো থাকুন।