হঠাৎ হনুমানের হানা! হানা শুধু না ঘুম ভেঙেছিল হনুমানের সুড়সুড়িতে৷ ভিডিওগ্রাফি পোস্ট
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
আমার পুনে ফেরার ট্রেন ক্যানসিল হওয়ার কথা আগেই বলেছিলাম৷ প্রথমে ঠিক ছিল শনিবার রাতের বদলে রবিবার সকাল আটটায় ছাড়বে৷ কিন্তু তা আবার বদল হয়ে ছাড়ল বেলা সাড়ে বারোটায়৷ এই ম্যাসেজটা এসেছে ভোরে৷ কিন্তু আগের দিন তো আর জানতাম না৷ তাই ভোরে অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছি। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মনে হল কেউ মাথায় হাত বোলাচ্ছে। এদিকে আমার আবার ভুতে বিশাল ভয়৷ সেই ভয়ে মশারি ছাড়া ঘুমোই না৷ মানে আমার ধারণা মশারির ভেতর ভুত ঢুকতে পারে না৷ তবে কি মশারির বাইরে থেকে ভুতে মাথায় হাত বোলাচ্ছে! কোনরকম প্রাণ হাতে উঠে দেখি - ওমা! এতো হনুমান! আমার মাথায় হাত বোলানোটা উদ্দেশ্য ছিল না, ও আসলে জানালার পর্দা আর মশারি এক সাথে ধরে টানছিল।
উফফ কোনরকম প্রাণ নিয়ে সরে আসি৷ তারপর মাথায় এলো একটু ভিডিও করি৷ কিন্তু তাবকি সহজ? মোবাইল মাথার পাশে ছিল একজন দেখি পা বাড়িয়ে মোবাইল টানছে৷ বাবারে! কি অ্যাটাক। কিন্তু মোবাইল চলে গেলে আমার কি হবে? সেও বুদ্ধি করে হাতে নিই। তারপর একটু দূরে গিয়ে ভিডিও অন করি৷
ভিডিওতে তো সামান্যই তুলেছি। কিন্তু ওরা অনেকেই ছিল সেদিন পুরোই অবস্থা খারাপ করে দিয়েছিল৷ সমস্ত পেঁপে গাছের পাতা ছিঁড়ে গাছগুলোকে ন্যাড়া করে ছাড়লো! ভিডিও করে নিচে এসে দেখি রাস্তায় অনেকগুলো বসে আছে৷ আমি ছবি তুলব বলে গিয়েছি ওমা ডানদিকে যেন বিরাট লেজ আমার পায়ে পড়ল! ঘুরে দেখি সে তো আরেক জন! হরিমন্দিরে তুলসি গাছের ওপর দুই পা তুলে ল্যাজটা ঝুলিয়ে নাড়ছে! কী স্টাইল!
এই সব করে ক্ষান্ত হয়নি মাটির রান্নাঘরে ঢুকে একবালতি নুন ঢেলে চাটল৷ পেয়ারা গাছের ডাল ভাঙল আরও কত কি৷
আমি ওদের দোষ দিই না৷ আজকাল এতোই গাছ কম ওরা যাবে কোথায় বলুন। ঠিকই করেছে। তবে আমি একটা চাঁটি খেলে কিন্তু এমন সব কথা বলতাম না৷ হে হে হে।
আর কথা বাড়াবো না৷ লিংক দিলাম দেখুন ভিডিও টা। দুরুদুরু বুকে তুলেছি।
https://youtube.com/shorts/eje21rcSPtY?si=1ZhFcZJZbdEPmISE
কি বুঝছেন? গোটা চার পাঁচজন এসেছিল? না না টোটাল এগারটা। কোনভাবেই তাদের তাড়ান যায় না৷ একদিকে বোম ফাটানো হয় তো অন্যদিকে চলে যায়।
আগে হনুমানের এত উপদ্রব ছিল না, এখন ওরা সত্যিই খেতে পায় না আমাদেরই জ্বালায়৷ ওদের আর কি দোষ বলুন আমরা ওদেরই বাসস্থান ছিনিয়ে নিয়েছি। এখনো ওরা হানা না দিয়ে যাবে কোথায়। তবে এখনকার হনুমানরাও বেশ সিভিলাইজড। সেদিন গল্প শুনলাম কতজনের ফোন ছাড়িয়ে নিয়ে কানে দিয়ে বসে থাকে, দোকানে গিয়ে কোলড্রিংস খায়, যা খুশি তাই করে। একবার নাকি বেশ কিছু ফুচকাও খেয়েছিল। হা হা হা। তাহলে যুগের সাথে হনুমানরাও তাল মিলাচ্ছে বলুন?
তবে ওরা বড়সড়ো মাপের বৈঠকও বসায় দেখুন। শালা পরামর্শ আলাপ-আলোচনা কোন কিছুই বাদ দেয় না। হে হে হে। একে অপরের পিঠ চুলকে দেয়, পোকা বেছে দেয়। হয়তো ওরা আজও একান্নবর্তী।
যাইহোক সেদিনের সকালটা বেশ উত্তেজনাতেই কেটেছে। আজ আপনাদের তারই কিছু অংশ শেয়ার করলাম। কেমন লাগলো বলুন।
পোস্টের ধরণ | ভিডিওগ্রাফি পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ৫৪ |
লোকেশন | পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ইনশট |
১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বেশ ভালো লাগলো আপনার আজকের এই হনুমানের পোস্ট। আমি শুনেছি শহর এলাকায় হনুমানের চলাচল বেশি এমন কি বাসা বাড়িতে তারা আক্রমণ করে থাকে। কুষ্টিয়াতে আমি লক্ষ্য করে দেখেছিলাম প্রায় বিল্ডিংয়ের এসে এভাবে উপস্থিত হয়। তবে এটা বেশ ভয়ের ব্যাপার রয়েছে।
গ্রামেই আসে বেশি আপু৷ শহরে খাবে কি?
তবে ভয়ের ব্যপার তো আছেই৷ কোথায় কখন পাওয়া যায় বা হঠাৎ ঝপাং করে এসে যায় ।
আমাদের গ্রামেও মাঝে মাঝে হনুমান দেখা যায়। আপনি ঠিকই বলেছেন আপু আগে এমন হনুমানের উপদ্রব্য ছিল না এখন ওদের খাওয়ার অভাবে গ্রাম অঞ্চলের দিকে চলে আসে। তবে আপনার মাথায় হাত বুলানোর বিষয়টা পড়ে আমার গায়ের মধ্যে কেমন শিওরে উঠছে। হনুমান আমি বিশাল ভয় পাই। আপনার চেয়ে চুল ধরে বা কোন জামা কাপড় ধরে টানাটানি করে নি এটাই অনেক। সকাল সকাল এই পরিস্থিতিতে পড়লে আমি তো চিল্লাচিল্লি করে বাড়ি মাথায় করতাম। যাইহোক আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনি কিন্তু অনেক সাহসী।
সাহস থাকলে তো হনুমানের সাথে বন্ধু পাতিয়ে নিতাম। আমারও খুব ভয় করে৷
তবে ও যদি সত্যিই চুল ধরে বা জামা ধরে টানত বা একটা চাঁটি মেরে দিত আমি ওখানেই হার্ট ফেইল হয়ে যেতাম। হে হে হে।
https://x.com/neelamsama92551/status/1856390244016214192?t=XuzV7Hk5Ktsp8m_o52n53w&s=19
বাড়ি না সুন্দরবন সেটাই ভাবছিলাম। এতগুলো হনুমান এসে আক্রমণ করে দিল। এবার তো ঘরের দরজায় বাঘও এসে যাবে। কিন্তু একটা জিনিস বুঝলাম না। ইউটিউবের লিংকটা লোড হয়নি কেন। লিংক হিসেবে দেখাচ্ছে। আরেকবার এডিট করে লিংকটা পেস্ট করে দেখ। কিন্তু দারুণ একটা পোস্ট। বেশি ইন্টারেস্টিং বিষয়। হনুমানের বিষয়ে আমারও একটি ভালো অভিজ্ঞতা আছে। যদিও ছবি নেই। তবুও কখনো শেয়ার করব।
করেছিলাম গো। হয়নি। কেন কি জানি।
কি অবস্থা। আমিও ভুতের ভয় পাইনা মশারি কিংবা বিছানায়।বিছানার থেকে নামলে আমার যতো ভয়।হনুমান গুলো দেখেই ভয় লাগছে।আমিও দেখেছি খাগরাছরিতে থাকাকালীন। হনুমান, বানর বাসায় চলে আসতো।বেশ ভালো লাগলো ফটোগ্রাফি গুলোও ভিডিওগ্রাফি টি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
গ্রামের দিকে এখন প্রচুর হনুমান আসে সর্বত্রই। এরা তো অনেক এসেছিল।