কবিতা পাঠের আসর৷ আজকের নিবেদন পূর্ণেন্দু পত্রীর কথপোকথন সিরিজের ৩৭ নম্বর লেখা।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
[সোর্স](মেটা AI)
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
অবশেষে আমি ট্রেনে উঠলাম। একটা অ্যাক্সিডেন্টের ফলে কত হ্যারাসমেন্ট হয় তাই ভাবছি এখন বসে বসে। আমার সহযাত্রীরা কেমন জানি না৷ তবে আমার সিট থেকে একজনকে তুলে দিয়েছি বলে তার একটু মন গরম। সংসারে সকলেই সুবিধে চায়৷ উনি ওনার স্ত্রী মুখোমুখি একই কুপে বসবেন বলে আমায় সাইড বার্থে যেতে অনুরোধ করেছিলেন। এদিকে আমি আমার মেয়ে একটাই সিট৷ সাইডের সিটগুলো সরুও হয়, শেয়ার করার পক্ষে অসুবিধে তো হয়ই। এদিকে আমার সাথে অনেক লাগেজ৷ বয়স্কও নন। ওনারা আমারই বয়সি বা সামান্য বড় হবেন৷ সিঙ্গল সিটের প্যাসেঞ্জার দেখে নিজেদের সুবিধেটুকু বুঝতে চাওয়া ওনাদের অপরাধ নয় কিন্তু সুবিধে চাইতে গিয়ে এটাও চোখে পড়ে না আমরা দুজন একই সিটে৷ যাইহোক আমি রাস্তাঘাটে একটু রাফ অ্যান্ড টাফই থাকি৷ তাই আর খুব একটা কথা না বাড়িয়ে নিজের সিটে চলে গেল৷ আমিও আমার সিটে সব লাগেজ সেট করে বসে গেছি। এখন আমি ভয়েস এডিট করছি ওনার তাতে অসুবিধে, এবং বললেন ইয়ারফোন ব্যবহার করতে৷ বললাম দশ সেকেন্ডের কাজ৷ উনি দু'বার বললেন৷ আমি আমার কথা থেকে নড়লাম না৷ নিজের দশ সেকেন্ডের কাজ সেরে নিলাম৷ এদিকে উনি লাউডস্পিকারে দিব্য কথা বলে যাচ্ছেন৷ মানুষের স্বার্থে টোকা পড়লেই তার খোলসের ভেতর দেখা যায় এ আমি বেশ বুঝি। এই যাতায়াতে তো আর কম অভিজ্ঞতা হয় না৷
যাইহোক বসে বসে আমি কিন্তু ভয়েস রেডি করে আপলোড করলাম। এখন ব্লগ লিখছি৷ আপনারা পড়েছেন পূর্ণেন্দু পত্রীর কথপোকথন সিরিজ? না পড়লে পড়বেন৷ এমন প্রেম হয়তো সকলেই জীবনে আশা করেন। এক সাথে তো আর সব শোনাতে পারব না৷ তাই সিরিজের সাঁইত্রিশ নম্বর লেখাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আর নিচে আমার কবিতা পাঠের ইউটিউব লিংকটিও দিচ্ছি৷
নন্দিনী! এসব কথা তোমার কখনো মনে হয়?
চক্রান্তের মত যেন, সারা গায়ে অপরাধপ্রবনতা মেখে
একটি যুবক আজ যুবতীর কাছাকাছি এসে
সাদা রুমালের গায়ে ফুলতোলা শেখে।
যেন এই কাছে আসা সমাজের পক্ষে খুব বিপজ্জনক।
যেন ওরা আগ্নেয়াস্ত্র পেয়ে গেছে মল্লিকবাগানে
যেন ওরা হাইজ্যাকের নথিপত্র জানে
এসেছে বারুদ ভরে গোপন কামানে।
একটি যুবক যদি প্রতিদিন পাখি-রং বিকেলবেলায়
তার কোনো নায়িকার হাতে রাখে হাত
যেন এই কলকাতার মারাত্মক ক্ষতি করে দেবে বজ্রপাত।
কলকাতায় জঙ্গল গজাবে
কলকাতাকে সাপে-খোপে খাবে।
এই সব ফিসফাস, চারিদিকে অবিরল এই সব
ছুঁচোর কেত্তন,
একটি যুবক এসে যুবতীর কাছাকাছি বসেছে যখন।
নন্দিনী! তোমার মনে পড়ে? শুনে বলবেন তো পছন্দ হয়েছে নাকি! তবে সিরিজের আরও কিছু চমৎকার লেখা পাঠ করব। আমি তো ঠিক প্রফেশনাল বাচিকশিল্পী না তাই খুব সুন্দর হয় না৷ তবু করি। কবিতা পড়তে তো ভালোবাসি। তা অস্বীকার করি কিভাবে? সব মিলিয়ে কেমন লাগল আজকের ব্লগ অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন৷ আজ তবে এপর্যন্তই রইল৷ আপনারা সকলেই দারুণ ভালো থাকবেন। আবার আসব৷ আজ টাটা।
মামাশ্বশুরের মত বিচক্ষন মুখভঙ্গি করে
একবার এক বুড়ো হাড় এসে প্রশ্ন করেছিল,
মেয়েটির সঙ্গে কেন এত মাখামাখি
মেয়েটির মধ্যে কোন গুপ্তধন আছে-টাছে নাকি?
লুকনো এয়ারপোর্ট আছে?
জাল-নোট ছাপাবার কারখানা আছে?
আন্তর্জাতিক কোন পাকচক্র আছে?
তাহলে কিসের জন্যে ছুঁচ ও সুতোর মত
শীত-গ্রীষ্ম এত কাছে কাছে?
পোস্টের ধরণ অডিও পোস্ট ছবিওয়ালা মেটা এ আই কবিতা পূর্ণেন্দু পত্রীর কথপোকথন -৩৭ কবিতাপাঠে নীলম সামন্ত মাধ্যম স্যামসাং এফ৫৪ লোকেশন পুণে,মহারাষ্ট্র ব্যবহৃত অ্যাপ ইনশট, অনুলিপি ১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
https://x.com/neelamsama92551/status/1855565312495603888?t=5DP7_dMztkfCm0Fl1NDyQQ&s=19
বাহ এক কথায় অমায়িক হয়েছে আপু। দারুন আপনার আবৃতি শিল্প। আবৃতি শুনে মনে হচ্ছে আমি যেন বাস্তবিক কোন প্রেমের গল্প কথা শুনছি আর কেউ আমার সম্মুখ পানে বসে শোনাচ্ছে।পূর্ণেন্দু পত্রীর কথপোকথন সিরিজের ৩৭ নম্বর লেখাটি আপনার মুখে আবৃতি শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সময় করে পড়ে নেওয়ার চেষ্টা করব। আর আপনার পরবর্তী আবৃত্তি শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
পূর্ণেন্দু পত্রীর এই সিরিজটাই এমন।
আপনি শুনলেন, ধন্যবাদ জানবেন দাদা।
কথপোকথনের বেশ কয়েকটি কবিতা আমি পড়েছি। বেশ ভালো লেগেছিল।তবে সবগুলো পড়া হয়নি। আমার বোন যেহেতু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করতো। সে সুবাদে কথপোথকনের অনেক সিরিজ শোনা হয়েছে। তবে আপনি কিন্তু বেশ সুন্দর আবৃত্তি করেছেন। বেশ লাগলো শুনতে। ট্রেন যাত্রা শুভ হোক আপনার। ভালো থাকবেন সব সময়।
আমি তো আবৃত্তিকার নই। ওই চেষ্টা করি আর কি৷ আপনার ভালো লেগেছে শুনে আপ্লুত হলাম। আপনিও ভালো থাকবেন সর্বদাই৷
কথাটা একেবারে সত্যি আপু মানুষের স্বার্থে টান পড়লে তার আসল রুপটা দেখা যায় হা হা। আপনার পাশের সিটের মানুষ টা এমনই ছিল। কবিতা টা চমৎকার লাগল আমার কাজে। এবং চমৎকার আবৃত্তি করেছেন আপু। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
এখন আর ওনারা কিছু বলছেন না। ঠিকই হয়ে গেছেন৷ বেশি বলেও তো লাভ নেই। আমি কি শোনার পাত্রী?
যাইহোক আপনি আবৃত্তিটা মন দিয়ে শুনলেন আনন্দ হল৷ ধন্যবাদ জানবেন৷
চমৎকার আবৃত্তি করেছেন দিদিভাই। আপনার মাধ্যমে বেশ অনেকদিন পর এই কথোপকথন সিরিজের কথা মনে পড়ে গেলো! আর চলাচলের পথে টাফ হওয়াটাই উচিত। সবাই নিজের ভালোটাই বেশি বোঝে- প্রকৃতির নিয়ম। তবে অন্যের কষ্টটা বা অসুবিধে গুলো কারোর চোখে পরে না সহজে!
পূর্ণেন্দু পত্রীর এই লেখাটা যেন কালজয়ী। যতবার পড়ি ততই মুগ্ধতা আসে।
ঠিকই বলেছেন। মানুষকে সুযোগ দিলে মানুষ মাথায় উঠে যায়।