দারিদ্র্য মালির ঘরের সন্তান আজ পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী খেলোয়াড় || 10% for @shy-fox
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও মনোরঞ্জন হবে।
আপনারা হয়তো টাইটেল এবং থাম্বনেইল দেখে বুঝেই গেছেন আমি কার কথা বলছি।তিনি আর কেউ নয় ফুটবল দুনিয়ার কিং "ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো" ।একজন দরিদ্র মালির ঘরের সন্তান আজ সারা দুনিয়ার লাখো ভক্তের আইডল।আজ কেবল একটি কথাই তার জন্যে প্রযোজ্য আর সেটি হচ্ছে "কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে"।আর আজকে আমার সেই প্রিয় খেলোয়াড়টির জন্মদিন।আর তার এই বিশেষ দিনে তাকে ঘিরেই সাজিয়েছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে আজকের এই ব্লগটি।
- ১৯৮৫ সালের ০৫ ফেব্রুয়ারি পর্তুগালের শহর আঞ্চালে জন্ম গ্রহণ করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।একজন দরিদ্র ঘরে জন্ম নেওয়া শিশুটিয় যে হয়ে উঠবেন CR7 এই কথা কেই বা কল্পনা করেছিল।হয়তো ক্রিস্টিয়ানো নিজেও কখনো ভাবেননি তিনি জীবনের এই পর্যায়ে আসতে পারবেন।এত এত ফ্যান ফলোয়ার সাথে অনেক টাকা এবং বিলাসবহুল জীবন থাকবে তার।সেকি কখনো কল্পনা করেছিল!কিন্তু সে একটি জিনিস ঠিকই অনুধাবন করেছেন। যে জিনিস আমার ভালো লাগে সেটিকে আকড়ে ধরে পরিশ্রম করে যাও আর সুযোগ এর অপেক্ষায় থেকো।আর এই ব্যাপারটাই তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়।আর আজকে তিনি হয়ে উঠেছেন পৃথিবীর সেরা একজন ফুটবলার সেই সাথে সেরা ধনী খেলোয়াড় ও বটে।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পুরো নাম হচ্ছে "ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ডস স্যান্টোস"।রোনালদো ছোটবেলায় তার পরিবারের সাথে টিনের ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করতেন।এবং সেই ঘরে সে ছাড়া তার সাথে আরো থাকতেন তার বাবা,মা,এবং দুই ভাই এক বোন।এবং রোনালদো তার সব ভাই বোনের চেয়ে সর্বকনিষ্ঠ।আর রোনালদোর বাবা ছিলেন একজন মালি আর তার মা মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন।রোনালদোর যখন স্কুলে যাওয়ার বয়স তখন থেকেই তিনি ফুটবল আসক্ত ছিলেন।এবং প্রচুর পরিমাণে ফুটবল খেলতেন।এমনকি তাকে স্কুলের চেয়ে খেলার মাঠেই বেশি পাওয়া যেত।তিনি ওইসময় খুব ভালো খেলার কারণে স্থানীয় একটি ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়ে জান।আর এভাবেই শুরু হয় তার উত্থান।এরপর সে আরো বেশি পরিশ্রমী হয়ে উঠে।একটি কথা বলে রাখি"সে ছোটবেলায় যখন কোনো খেলায় হেরে যেত তখন মাঠের মধ্যেই সে কান্না জুড়ে দিত আর এজন্য তার মা তাকে ক্রাই বেবি বলেও ডাকতো" তাহলে বুঝেন তার মধ্যে কতটা জেদ ছিলো।আর জেতার জন্য কতটা অদম্য ইচ্ছা।এরপর রোনালদো যখন 10 বছর এ পা দেয় তখন তার নাম ডাক এলাকাতে বেশ ভালই চর্চা হচ্ছিল।জার ফলে তখন পর্তুগালের সবচেয়ে বড় ক্লাব তাকে নিয়ে যায়।এবং সেই ক্লাবে সুযোগের পর রোনালদো তার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য টানা দুই বছর কঠোর পরিশ্রমের সাথে অনুশীলন করতে থাকেন।এবং সেই পরিশ্রমের ফল ও পেয়ে জান খুব তাড়াতাড়ি।সেই সময় জাতীয় পর্যায়ে সেরা উদিয় মান তরুণ নির্বাচনে "অফিসিয়াল অফ স্পোর্টিং লিজবন" ক্লাব আসে তাদের মাঠে। সেই খেলার নিয়ম ছিলো যে বেশি গোল করতে পারবে তাকেই তারা নির্বাচিত করবে।কিন্তু সেদিন বেশ কপাল জোরেই পার হয়ে যান ক্রিস্টিয়ানো।কারণ তার বন্ধু আলবার্ট নিজে গোল না করে তাকে দিয়েছিল সেই সুযোগটি।পরবর্তীতে ক্রিস্টিয়ানো যখন তাকে জিজ্ঞেস করে কেনো তুমি এমনটা করলে।তখন সে উত্তরে বলে আমার থেকে ভালো খেলো তুমি তাই তুমি এটি ডিজার্ভ করো।আমি চাই তুমি সামনে গিয়ে আরো ভালো করো।এরপর লিজবনে খেলার ও অনুশীলন করার সুযোগ পেয়ে সেই 12 বছর বয়সেই বাড়ি ছেড়ে পাড়ি জমান লিজবণের উদ্দেশ্যে।এবং সেখানে মাত্র 15 পাউন্ড এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তার সাথে তথা বাংলাদেশী 1500 টাকার বিনিময়ে তিনি লিজবণের হয়ে খেলতেন ।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে 15 বছর বয়সে।ঠিক ওইসময় তার বাবা-মা বুঝতে পারেন রোনালদোর কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।জার ফলে তার বাবা মা তাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যান।এবং সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে তার হার্ট এ একটা বড় সমস্যা আছে। যার কারণে সেই সময় ডাক্তার তাকে ফুটবল খেলা ছেড়ে দিতে বলেন এবং বেশি দৌড়োদৌড়ি করতে নিষেধ করেন।কিন্তু জার রক্তে ফুটবল, যার ধমনীর প্রতিটি শিরায় ফুটবল বইছে তাকে কি এই কথা বলে বুঝানো সম্ভব।তখন ক্রিস্টিয়ানো জানায় এটি কি ঠিক করার কোনো উপায় নেই।উত্তরে ডাক্তার জানায় আছে একমাত্র সার্জারির মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব।কিন্তু এতে অনেক রিস্ক আছে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।কিন্তু তখন রোনালদো কি উত্তর দিয়েছিলেন জানেন।এই ফুটবল ছাড়াই বা বেচে থেকে কি লাভ ফুটবল নেই মানে আমিও নেই যত রিস্কি হোক না কেনো আপনি অপারেশন করান।এরপর কপালের করে সফল ভাবে তার অপারেশন হয়ে যায়।কিন্তু একটি দুঃসংবাদ এর খরা কাটতে না কাটতেই আর একটি দুঃসংবাদ এসে হাজির। রোনালদো যখন পুরোপুরি ফিট হয়ে মাঠে নামার জন্য একদম প্রস্তুত। ঠিক ওই মুহূর্তে খবর আসে ওর বাবা অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মারা যায়। এবং এই খবরটি শুনে রোনালদো প্রায় ভেঙ্গে পড়ে কারণ সে তার পরিবারের ছোট ছেলে হওয়ায় তার বাবাকে ভীষণ ভালবাসতেন। এবং তার বাবা অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মারা যাওয়ায় সে জীবনে কখনো মদ ছুঁয়ে দেখেন নি।এছাড়াও তার বাবা তাদের পরিবারের অর্থনীতির একমাত্র কান্ডারী ছিলেন তাই তার বাবা চলে যাওয়াতে বেশ বিপাকে পড়ে তার পরিবার। রোনালদো এই সময়টায় বেশ ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু কথায় আছে না মা মমতাময়ী তার মা কখনোই তাঁকে ভেঙে পড়তে দেননি। বরং ওই সময়টায় তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে রোনালদোকে আবারো খেলার মাঠে ফিরিয়েছেন।এবং তাকে আরো বেশি করে খেলায় মনোযোগ দিতে বলেছিলেন।আর তাইতো রোনালদো আজও তার মাকে সম্মানের চূড়ায় বসিয়ে রেখেছেন।
এবার সে অতীতের চেয়ে আরো পূর্ণ উদ্যমে লাগাতার ভাবে কঠিন পরিশ্রম করেন।এবং সেই অধ্যাবসায়ের ফলে মাত্র 17 বছর বয়সে সর্ব কনিষ্ঠ পেশাদারী ক্লাব খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।এবং জার ফলে মিডিয়ায় বেশ নাম ডাক ছড়িয়ে পড়ে তার।জার ফলে 18 বছর বয়সে তিনি ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর চোখে পড়েন।এবং সেইসময়ে রেকর্ড পরিমাণ ট্রান্সফার ফি 17 মিলিয়ন দিয়ে তাকে দলে নেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।আর এরপর তাকে আর কখনো পিছন ফিরে তাকাতে হয় নাই।ম্যানচেস্টার এর হয়ে একে একে জিতেন লীগ শিরোপা এবং চ্যাম্পিয়ন লীগ।আর এরপরের ইতিহাসটা তো সবার এই জানা।
আর এভাবেই সব চড়াই উতরাই পার হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ফুটবল দুনিয়ার এক মুকুটহীন রাজাতে।যেই রাজার সংগ্রহে আছে পাঁচ পচটি ব্যালন ডি অর পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন লীগ।আর কি চাই এই এক জীবনে।আর তার এই কৃত্তি মানুষ মনে রাখবে যুগ যুগ ধরে তার এই সফলতার গল্পে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের জীবনে সফলতার সপ্ন দেখবে।এর থেকে আর কীয় বা পাওয়া আছে।CR7 শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নয় মানুষের হিসেবেও সেরা।তিনি তার অর্থে অসহায়দের পাশে দাড়ান।কিংবা অত্যাচারে বিরুদ্ধে কখনো নিরব প্রতিবাদ করেন।
রোনালদোর একটি কথা জানলে অবাক হয়ে যাবেন।যখন তিনি তার মায়ের পেটে ছিলেন তখন তার পরিবারে চলছিল অভাবের ঝোনোঝটা।আর এই কারণে তার বাবা চাচ্ছিল তাকে অ্যাবরশন করাতে। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখুন যেই অভাবের কারণে এই পৃথিবীতে আশা তার জন্য প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছিল।আজ সেই ছেলেটিয় নিজের পরিশ্রম দিয়ে সবার অভাবকে কিনে নিয়েছে ,স্যালুট বস তোমাকে এভাবেই এগিয়ে যাও নিজ উদ্যমে🙏।
শুভ জন্মদিন CR7🎉🥳🎈
ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য

শুভ জন্মদিন CR7🎂.জীবনে যারা প্রতিষ্ঠিত ও বড়ো কিছু অর্জন করেছেন সবাই অনেক ছোট বা গরীব পরিবার থেকে সংগ্রাম করে।আসলে এদের কর্ম সততা ও পরিশ্রম এতদূর পর্যন্ত এদেরকে নিয়ে এসেছে।আমাদের গর্বের বিষয়।সুন্দর লিখেছেন ,ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ দিদি আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনার পোস্টটা পড়ে আবেগে আপ্লূত হয়ে গেছি। CR7 আমার অনেক প্রিয় একজন খেলোয়াড়। তার বাস্তবতা ইতিহাস আগেও কিছুটা জানতাম কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ে আরো ভালো ভাবে জানা হলো।
একটা কথাই মাথায় আসছে জন্মহোক যথাতথা কর্ম হোক ভালো।
সে তার যোগ্যতার বলে আজ পৃথিবীর কাছে সুপরিচিত মুখ
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমার সবচেয়ে প্রিয় ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। রোনালদো একবার তার বাবা কে বলেছিল যে সে একদিন অনেক বড়লোক হবে। উত্তরে তার বাবা তাকে বলেছিল এতবড় স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। CR7 পরিশ্রমের মাধ্যমে তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করে দেখিয়েছেন।
পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে সবকিছুই যে করে দেখানো সম্ভব তার জলজ্যান্ত উদাহরণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ধন্যবাদ ভাই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য শেয়ার করার জন্য।
সকলের অনেক পছন্দের একজন খেলোয়ার একই দিনে কিন্তু আরো একজন কিংবদন্তির জন্মদিন ছিল যাইহোক।শুভ জন্মদিন সি আর সেভেন
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
যদিও আমার পছন্দের খেলোয়াড় হচ্ছে নেইমার । তবে রোনালদোর খেলা আমার কাছে ভালই লাগে দেখতে । বর্তমান সময়ের অন্যতম একজন ফুটবলার হচ্ছে রোনালদো । সত্যি রোনালদোর জীবন কাহিনী পড়ে আমি অনেকটা হতবাক হয়ে গেছিলাম । ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ।
আসলে সত্যি বলতে কি আমার পছন্দের কোন খেলোয়ার এই নেই। সবার খেলাই আমার ভালো লাগে। তবে কেন জানি রোনাল্ডোর স্কিল গুলো আমার কাছে একটু বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য