আসক্তি || আমার অনলাইন গেমস এর প্রতি আসক্ত হওয়া ও এর থেকে বেড়িয়ে আসা|| ১০% @shy-fox এর জন্য বরাদ্দ
হ্যালো🖐️
"আমার বাংলা ব্লগ" এর প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন?
আমি আশা করি যে আপনারা সবাই অনেক ভালো ও সুস্থ আছেন।
আজকে আমি আমার অনলাইন গেমস এর উপর আসক্ত হওয়া ও এর থেকে বেড়িয়ে আসার গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব
প্রথমেই আমি একটি কথা বলতে চাই সেটি হলো যে যেকোন ভাল জিনিসও অতিরিক্ত ভাল না। সবকিছুর একটি মাত্রা রয়েছে। আমরা যখন এই মাত্রা পেরিয়ে যায় তখনই সেই জিনিসটির ফলে আমরা ধিরে ধিরে হ্রাস হতে থাকি।
বর্তমানে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক ছেলে-মেয়েরা সময় পার করার জন্য নানা ধরনের অনলাইন গেমস খেলতেছে। তো আমি আমার সময় পার করার জন্য অনলাইন গেমস খেলতাম। বিশেষ করে বর্তমানে বেশি জনপ্রিয় ও আসক্তিকর গেমস রয়েছে দুইটি। একটি হলো ফ্রি ফায়ার ও অন্যটি হলো পাবজি। তবে ফ্রি ফায়ার নিম্ন মানের ডিভাইসও মোটামুটি ভালো খেলা যায়। তাই আমি সাধারণভাবে ফ্রি ফায়ার খেলতে শুরু করি। আমি এই গেমের প্রতি এমনই আসক্ত হয়ে গিয়েছিলাম যে খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করতাম না। সারাদিন শুধু গেমই খেলতাম। তো এই ভাবে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার জন্য আমার বাবা মা আমাকে বকা দিত আবার আমাকে নানা কাজের মধ্যে রাখত যেন আমি মোবাইল গেমস এ সময় না দিতে পারি। কিন্তু আমি এতটাই আসক্ত ছিলাম যে আমি বাসার বাইরে গিয়ে গেম খেলতাম। কেউ আমাকে কোন কারণে ডাক দিলে আমি শুনতাম না। ধীরে ধীরে আমি অন্ধকার জগতের দিকে চলে যাচ্ছিলাম। আবার এই ভাবে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার ফলে আমি শুকে যাচ্ছিলাম অর্থাৎ আমার স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এই ভাবে চলতে থাকায় গ্রামের অনেক গুরুজনেরা আমাকে নিয়ে সমালোচনা করতে থাকে। এই নিয়ে আমার বাবা মা আমাকে অনেক ভাবে আটকানোর চেষ্টা করেছে এমনকি আমার ফোন ও নিয়ে নিয়েছিল আমার মা। কিন্তু আমি এতটাই আসক্ত ছিলাম যে লুকিয়ে মার ফোন নিয়ে গেমস খেলতাম।
🛷
🛷
তারপর আমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম যে আমি আগে কি ছিলাম আর এখন কি হয়েছি। তারপর আমি নিজে থেকেই গেমস খেলা একটু কমিয়ে দিলাম। অনেক চেষ্টার পরে আমি নিজেকে কিছুটা কনট্রল করেছিলাম। আমি প্রতিদিনই বিকেলে আমাদের খেলার মাঠে যেতে শুর করলাম। আমাদের মাঠে প্রতিদিনই নানা রকম খেলা হয়। আমি সেই খেলা গুলোতে একটু একটু করে অংশ নিতে লাগলাম। আমার কয়েকজন বন্ধু ও খুবই আসক্ত হয়ে পড়েছে এই গেমের প্রতি। তাদের সাথে দেখা হলেই তারা গেম এর নানা আকর্ষণীয় ইভেন্ট এর কথা বলতো আমার কাছে। আমি এতে করে আবার গেমস এর বিষয়ে ভাবতে লাগতাম। তারপর আমি নিজেকে কনট্রল করে দিনে এক ঘন্টা মতো গেম খেলতাম আর রোজ রাতে ভাবতাম যে আমি গেমের পিছনে পড়ে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি। আর গেম এর জন্য আমার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে আমি নিজেও অন্ধকার জগতের দিকে চলে যাচ্ছি। আমার বাবা মা আমাকে আগে যে কথা গুলো বলতো আমি তা কেবল বুঝতে পারতেছি। তো আমি মনকে কঠোর করে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি আর গেমস খেলবনা। আমি আমার ঐ সব বন্ধুদের কাছ থেকে দুরে থাকতে লাগলাম যারা আমাকে এই গেম খেলার জন্য অপ্রেরণা দিত। তারপর ফাইনালি আমি একদিন গেম টাকে আমার ফোন থেকে ডিলিট করে দেয়। এবং আমি প্রতিনিয়োত মাঠে গিয়ে খেলতে শুরু করি।
আজ প্রায় একমাস পেরিয়ে গেল আমি কোন গেমস খেলিনি। এই ভাবেই আমি আজকে আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। তো আমি আমার জীবন থেকে একটি কথা খুব ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছি যে যেকোন কিছু অতিরিক্ত ভালো না।
আমাদের দেশে আমার মতো অনেকেই এই সব গেমে আসক্ত হয়েছিল বা এখনো আসক্ত হয়ে আছে। আর এই গেমস গুলোর খারাপ প্রভাবের জন্যই ইতিমধ্যে এই গেমস গুলো আমাদের দেশে ব্যান্ড করা হয়েছে। এটি একটি খুবই প্রয়োজনিয় পদক্ষেপ নিয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে।
আপনি গেমস থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন এটাই বড় কিছু। ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আমাদের উচিৎ এইসব গেমস গুলো নির্দিষ্ট সময় মেনে খেলা। অতিরিক্ত খেলা থেকে বিরত থাকা।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।