গল্পঃ শিক্ষক হলো মানুষ গড়ার কারিগর
আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধুগন
আমি @mostafezur001 বাংলাদেশ থেকে
আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে পুনরায় আরও একটা নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। আপনারা সকলে হয়তোবা অবগত রয়েছেন আজকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষককে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। যেহেতু আজকে শিক্ষক দিবস তাই আজকের এই গল্পটা আমি শিক্ষককে নিয়েই লিখতে চাই।
ঘটনাটা আজ থেকে অনেক বছর আগের। সম্ভবত তখন আমি তৃতীয় অথবা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। আমাদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ আমার কোন সময়ই হয়নি। ছোটবেলা থেকে এই লেখাপড়া করেছি আমি আমাদের উপজেলা শহরের একটা স্কুলে। স্কুলটির নাম ছিল গাংনী প্রি ক্যাডেট স্কুল। আমি যখন স্কুলটিতে ভর্তি হয়েছিলাম তখন স্কুলটির বয়স খুবই কম ছিল। যেহেতু নতুন স্কুল তাই স্কুলের কোন নিজস্ব বিল্ডিং ছিল না। একটা জায়গা ভাড়া করেছিল যেখানে ঝাপের বেড়ার স্কুল তৈরি করা হয়েছিল। ঝাপের বেড়ার স্কুল হলে কি হবে স্কুলের সুনাম কিন্তু ছিল অনেক বেশি। আর এই সুনামের পেছনে সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করেছিল ওই স্কুলের শিক্ষকেরা। আমি যেদিন প্রথম স্কুল ভ্রমণ করার জন্য আব্বার সাথে গিয়েছিলাম সেদিনই শিক্ষকের ব্যবহার আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। এই কারণে আমি আর দেরি না করে সেদিনই স্কুলে ভর্তি হয়ে যাই। আমি যখন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম তখন একজন শিক্ষক ছিলেন যার নাম শারজুল ইসলাম। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কিভাবে অনুপ্রাণিত করতে হয় তিনি খুব ভালোভাবেই জানতেন। আমি স্কুলে ভর্তি হবার কিছুদিন পর থেকেই দেখতে পেলাম শারজুল স্যার আমাদেরকে সব সময় অনুপ্রেরণামূলক গল্প শোনাতেন। আসল কথা বলতে গেলে তিনি আমাদেরকে সব সময় স্বপ্ন দেখাতেন। যদিও স্বপ্নের সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে সেই সময় খুব একটা বেশি ধারণা ছিল না কিন্তু খুব ভালো লাগতো স্যারের গল্প গুলো শুনতে। তিনি এতটা সুন্দর ভাবেই স্বপ্নের গল্পগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করতেন তা শোনার জন্য সকলে অধীর আগ্রহে বসে থাকতো। আমি লক্ষ্য করে দেখেছিলাম অন্যান্য শিক্ষকেরা ক্লাসে আসলে ছাত্র-ছাত্রীরা কথা বলে শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ নষ্ট করে কিন্তু শারজুল স্যার আসা মাত্রই সকলের চুক্তি করে বসে যায় স্যারের সেই স্বপ্নের গল্প গুলো শোনার জন্য। আমরা আমাদের পরবর্তী জীবনে কি হতে চাই কি হবো সেই সকল বিষয়গুলো তিনি আমাদেরকে সেই ছোট্টবেলাতেই শেখাতেন। আর সেদিনই আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি বড় হয়ে শারজুল স্যার এর মত একজন শিক্ষক হব। আমিও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনুপ্রেরণামূলক গল্প বলব যেন তারা নিজেরাও স্বপ্ন দেখতে পারে। একজন শিক্ষক কোন সময়েই একজন ছাত্রের স্বপ্ন পূরণ করে দিতে পারেনা শিক্ষক পাড়ে তার মনের মধ্যে স্বপ্নটাকে জাগ্রত করতে। আর যখনই ছাত্রছাত্রীরা তাদের মনের মধ্যে ভবিষ্যতের স্বপ্নকে লালন করতে শিখে যায় ঠিক তখনই তারা উন্নতির দিকে চলে যায়। তাদের কে জোর করে পড় পড় এমনটা বলতে হয় না তারা নিজেরাই পড়তে বসে যায়।
আমি এমনটাও লক্ষ্য করে দেখেছি যদি কোন একজন শিক্ষক কোন ছাত্র-ছাত্রীকে কোন ভুল জিনিস শেখায় তারপরও সেই ছাত্র-ছাত্রীরা সেই ভুলটাকেই সঠিক বলে মনে করে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই শিক্ষক ছাত্রছাত্রীকে এটা পরিবর্তন করতে বলে তারা কোনভাবেই অন্যের কথা শুনতে চায়না। এমনকি বাবা মাও যদি বলে যে তুমি এটা ভুল বলছো তারপরেও তারা মানতে চায় না। উল্টো তারা বাবা-মাকেই বলে ফেলে যে এটা আমার শিক্ষক শিখিয়ে দিয়েছেন আর এটাই সঠিক। সমাজ, দেশ এবং আমাদের পৃথিবী কে সুন্দর করার জন্য একজন শিক্ষক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনিই পারেন স্বপ্ন দেখাতে আর একজন শিক্ষকের দ্বারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েই একজন মানুষ পৃথিবীকে আরও সুন্দর করতে পারে। এজন্যই তো শিক্ষককে মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়।
আজকের এই বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমি আমার সকল শিক্ষককে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা জানাতে চাই। তাদের দেখানো সেই স্বপ্নের ফলেই আজকে আমি আমার এই অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছি।
আমি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় বসবাস করি।আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমি বাংলাদেশকে খুবই ভালোবাসি।বর্তমানে আমি গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরী স্কুলের একজন শিক্ষক।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমি বিশ্বাস করি, আমার এই সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার সৃজনশীল কাজটি সার্থক হবে। তাই আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সৃজনশীল জিনিস নিয়ে উপস্থিত হতে।
আমার কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুক টুইটার
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমার এক ম্যাম বলেছিল একজন শিক্ষকই পারেন একজন ছাএের কাছে সবকিছু সহজ এবং সবকিছু কঠিন করে দিতে। যেটা আপনার ক্ষেএে শারজুল ইসলাম স্যার করেছে। এটাও ঠিক বলেছেন একজন শিক্ষক যদি ভুল শিক্ষা দেয় তবে সেটাই সবাই সঠিক মনে করে থাকে। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল আপনার পোস্ট টা।।
আসলে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষককে অন্ধের মত বিশ্বাস করে থাকে।
ভাইয়া আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আপনি প্রতি শিক্ষদের আন্তরিক ভাবে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। ভাইয়া শিক্ষকের বিষয়ে আমার জানা দু চারটি চরন।
তুমি শিক্ষক,
তুমি পক্ষি ছানাকে দিতে পারো
প্রথম উড়ানোর ভরসা।
তুমি শিক্ষক,
তুমি সম্মানি একজন ।
এতো সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
শিক্ষক নিয়ে আপনার লেখা ছোট্ট কবিতাটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো।
ভাইয়া আপনার পোস্টের টাইটেল টি পড়ে অনেক ভালো লাগলো । শিক্ষক হলো মানুষ গড়ার কারিগর। এই শিক্ষকরাই একটি শিশুকে জীবনের পথ চলার জন্য অনেক কিছু শেখায়। এজন্যই বাবা-মার পরে শিক্ষকের অবদান অনেক বেশি। ধন্যবাদ আপনাকে
আমার কাছে মনে হয় শিক্ষক যেন সমাজের সবথেকে সম্মানীয় একজন ব্যক্তি।